X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

যতদিন বেঁচে আছি ইউল্যাবের সঙ্গেই থাকবো: জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১০ জুলাই ২০১৮, ১৯:৫০আপডেট : ১০ জুলাই ২০১৮, ২০:০৭

জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামকে ইউল্যাবের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা স্মারক তুলে দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ এমপি।

যতদিন বেঁচে থাকবো ইউল্যাবের সঙ্গেই থাকবো। আমি জাতীয় অধ্যাপক হই আর নাই হই আমি ইউল্যাবের সঙ্গেই থাকবো। ইউল্যাব আয়োজিত সংবর্ধনা সভায় এ কথা বলেছেন জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (১০ জুলাই) বিকেলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) ধানমন্ডি প্রধান ক্যাম্পাসের অডিটরিয়ামে নজরুল বিশেষজ্ঞ ও বিশ্ববিদ্যালয়টির ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের জাতীয় অধ্যাপক হওয়া উপলক্ষে গৌরবসন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। সেখানেই বক্তব্য রাখার সময় তিনি এ অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।

জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগের বিষয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রফেসর ইমিরেটাসের বদলে ন্যাশনাল প্রফেসর শব্দটা শুধু যুক্ত হয়েছে নামের সঙ্গে। যারা এজন্য অবদান রেখেছেন তাদের সকলের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা রইল। সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞ আমি ইউল্যাবের প্রতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণের পর ১৫ বছর আমি এখানে আছি। যতদিন বেঁচে আছি ইউল্যাবের সঙ্গেই থাকবো আমি।

ইউল্যাবের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের প্রেসিডেন্ট কাজী শাহেদ আহমেদ বলেন, ‘১৫০০ দিন একটা মানুষের পক্ষে ১৫০০টি এডিটরিয়াল লেখা কিভাবে সম্ভব হয়? ১৫০০ দিন ১৫০০টি লেখা।১৫০০ দিন বাড়ি থেকে আজকের কাগজের অফিসে আসা,লেখা। অদ্ভুত একটি প্রেরণা,কী বলবো আমি। বোঝানো যাবে না। তখন যারা পড়েছেন তারা বুঝেছেন। এছাড়া আমাদের যেসব অনুষ্ঠান হতো সেখানে তিনি আসতেন,বসতেন, ভালো বলতেন,উৎসাহ দিয়ে যেতেন। এরপর আসলো খবরের কাগজ ৮৭-৮৮’র দিকে।তখন আমি তার কাছে দ্বারস্থ হলাম। তিনি দ্বার খুলে আমাদেরকে তার কাছে নিয়ে আসলেন এবং উনি আমাদের সঙ্গে কাজ করলেন। এরপর এলো আজকের কাগজ,সেখানেও তিনি যুক্ত হলেন।এরপর আমি ইউনিভার্সিটি দেওয়ার ব্যাপারে চিন্তা করলাম। কিন্তু এই বিষয়ে কিছুই করতে পারলাম না। কারণ,অনেকের সঙ্গেই আলাপ আলোচনা করলাম,কেউ আমাকে উৎসাহ দিচ্ছে না।একমাত্র রফিক স্যার আমাকে উৎসাহ দিলেন। আরেকজন ছিলেন আমাদের সঙ্গে, খন্দকার মাজহারুল করিম। তিনি খুব খাটা-খাটুনি করলেন। অনেক দরজায় ঘুরেছিলেন। আমি ঘুরতাম, সেই সময় রফিক স্যারও আমাদের পেছনে ছিলেন। আর কী বলবো, রফিক স্যার জাতীয় অধ্যাপক হয়েছেন। হওয়ার পর আর কিছু বলার নাই। অভিনন্দন জানানো ছাড়া আর কিছু বলার নেই। আমরা গর্বিত, আমরা রফিক স্যারকে নিয়ে অত্যন্ত সন্তুষ্ট।

জাতীয় অধ্যাপক হওয়ায় রফিকুল ইসলামের জন্য ইউল্যাব আয়োজিত গৌরবসন্ধ্যায় বক্তব্য রাখছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি কাজী শাহেদ আহমেদ

ইউল্যাবের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজী আনিস আহমেদ বলেন,  রফিকুল ইসলামের সঙ্গে আমার যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের কারণে একটি পেশাগত সম্পর্ক আছে তেমনি আমাদের সম্পর্কটা পারিবারিক। তার সঙ্গে আমাদের পরিচয় সম্ভবত ষাটের দশক থেকে আমার নানার মাধ্যমে। আমার নানা এনামুল হক বাংলাদেশের প্রথম মরণোত্তর চক্ষু দানকারী একজন অত্যন্ত জ্ঞানপিপাসু মানুষ ছিলেন। বাংলাদেশের হিস্টরিকাল স্টাডিজ অ্যাসোসিয়েশন যখন তৈরি হয় সেটার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন এবং সেখানেই প্রফেসর রফিকুল ইসলামের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। আমার নানা বিখ্যাত লেখক, গবেষক এবং বরেণ্য ব্যক্তিদের সান্নিধ্য খুব পছন্দ করতেন। তাদেরকে সব সময় নিয়মিত বাসায় দাওয়াত দিতেন। আমার ছোটবেলার অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি স্মৃতি হলো, আমি আমার নানার সঙ্গে বসে আছি আর হাসেম খান (চিত্রশিল্পী) বসে কাগজে রীতিমত স্কেচ করছেন। এরকম একটি মুহুর্ত থেকেই অনেক ছোটবেলায়  রফিক স্যারের সঙ্গে আমার পরিচয়। এরপর আশির দশকের দিকে উনার সঙ্গে আমাদের পরিবারের একটি সম্পর্ক তৈরি হয় খবরের কাগজ এবং আজকের কাগজের মাধ্যমে। সে সময় আমি নিয়মিত অফিসে যেতাম। আমার ভাই কাজী নাবিল আহমেদ সেখানে নিয়মিত কাজও করতেন। সেখানে প্রতি সন্ধ্যায় আর  কেউ আসুক বা না আসুক রফিক স্যার আসতেন। উনার কাছে আড্ডার ছলে আমি ইতিহাস এবং সাহিত্যের যত শিক্ষা পেয়েছি এটা কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে পাওয়া সম্ভব নয়। তিনি সত্যি একজন আভিধানিক জ্ঞানের অধিকারী। ইউল্যাব সত্যি ভাগ্যবান যে এর জন্মলগ্নের আগে থেকেই আমরা রফিক স্যারকে সঙ্গে পেয়েছি। সেই সূত্রে ২০০৪ সাল থেকেই তার সঙ্গে আমার একটি পেশাগত সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। আপনি জাতীয় অধ্যাপক হয়েছেন, এটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি হিসেবে আমাদের একক অর্জন। আমরা খুবই গর্বিত, আপনাকে আমরা পেয়েছি। আমাদের সকলের পক্ষ থেকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং অভিবাদন।

ইউল্যাবের বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের বিশেষ উপদেষ্টা প্রফেসর ইমরান রহমান বলেন, আমি খুব কম মানুষকেই দেখেছি অত্যন্ত গুছিয়ে বক্তব্য রাখতে পারেন, রফিক স্যার তেমনই একজন গুণী ব্যক্তি। আমরা সবাই গর্বিত রফিক স্যারের সঙ্গে কাজ করতে পেরে। আপনার কাছে থাকতে পেরেই আমরা গর্বিত।

এরপর জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন ইউল্যাবের বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের সদস্য এবং কাজী নাবিল আহমেদ এমপি। সবশেষে ইউল্যাবের উপাচার্য প্রফেসর এইচ এম জহিরুল হক সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।  এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন মীনা ট্রাস্টের পরিচালক আমিনা আহমেদ, ইউল্যাব বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের সদস্য কাজী ইনাম আহমেদ, ট্রেজারার মিলন কুমার ভট্টাচার্য, রেজিস্ট্রার আখতার আহমেদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা ও কর্মকর্তারা।  

/এসও/ টিএন/
সম্পর্কিত
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুজিবনগর দিবস পালনের নির্দেশ
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই ধাপে কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ পালনের নির্দেশ
টেস্ট পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত ফি নিলে ব্যবস্থা
সর্বশেষ খবর
চাটমোহরে ঐতিহ্যবাহী ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু
চাটমোহরে ঐতিহ্যবাহী ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু
রাজশাহীতে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো বিভাগীয় সর্বজনীন পেনশন মেলা
রাজশাহীতে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো বিভাগীয় সর্বজনীন পেনশন মেলা
রুবেলকে শোকজ দিলো উপজেলা আ’লীগ, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ পলকের
নাটোরে উপজেলা নির্বাচনরুবেলকে শোকজ দিলো উপজেলা আ’লীগ, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ পলকের
এমপি দোলনের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ, সাংবাদিক আহত
এমপি দোলনের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ, সাংবাদিক আহত
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া