X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্টেমসেল থেরাপিই হবে ভবিষ্যতের অত্যাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৫:৩৮আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৫:৪৩

স্টেমসেল থেরাপি নিয়ে গবেষণা  স্টেমসেল থেরাপিই হবে বাংলাদেশের রোগীদের জন্য ভবিষ্যতের সবচেয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। ইতোমধ্যেই দেশে হেমাটোলজি, হেপাটোলজি (লিভার) ও কার্ডিওভাস্কুলারের ক্ষেত্রে স্টেমসেল থেরাপি ব্যবহার করা হচ্ছে। এই চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে আরও গবেষণা করছেন চিকিৎসরা।
বাংলাদেশ স্টেম সেল অ্যান্ড রিজেনারেটিভ মেডিসিন সোসাইটির মহাসচিব ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) হেপাটোলজি (লিভার) বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, হেপাটোলজি বা হেমাটোলোজির পাশাপাশি ত্বকের ঘা, স্পাইনাল কর্ডে ইনজুরি, ডায়াবেটিস, হার্ট অকার্যকর, চোখের রোগের ক্ষেত্রে স্টেমসেল থেরাপি ব্যবহার করা হয়। দেশে এই মুহূর্তে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট, ভাস্কুলার সার্জারি এবং লিভারে স্টেমসেল ব্যবহার করা হচ্ছে।


বাংলাদেশ স্টেম সেল অ্যান্ড রিজেনারেটিভ মেডিসিন সোসাইটির কোষাধ্যক্ষ ও বিএসএমএমইউয়ের হার্ট ফেইলিয়র ডিভিশনের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. হারিসুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের বিএসএমএমইউতে দুটো মেশিন আছে। এগুলো দিয়ে এখন স্টেম সেল তৈরির কাজ হচ্ছে। রোগীর শরীরের রক্ত অন্য একটা মেশিনের মাধ্যমে বের করে আনা হবে। বেরিয়ে আসা সেলটিই হবে স্টেমসেল। আমরা স্টেমসেল তৈরির পর যার সেল তাকেই দিচ্ছি। তাই এর বিপরীত প্রতিক্রিয়া কম হচ্ছে।’
ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘লিভার সিরোসিস বা লিভার ফেইলিয়রে আমরা স্টেমসেলের ব্যবহার করছি। তবে এক্ষেত্রে রোগীকে একবার স্টেমসেল থেরাপি দিলেই হবে নাকি দুই-তিন মাস পরপর বা ছয় মাস পরপর দিতে হবে নাকি যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন থেরাপি দিতে হবে এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা এখনও কাজ করছি। লিভার ডিজিজ-এর ক্ষেত্রে এ পর্যন্ত ৭০ রোগীর ক্ষেত্রে আমরা স্টেমসেল থেরাপি দিয়েছি। তবে আমরা প্রথম ২৫ জনের ডাটা (লিভার বিভাগ) এবং ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগ এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় সম্মেলনে প্রকাশ করেছি। এখানে মনে রাখতে হবে যে, স্টেমসেল লিভার ট্রান্সপ্লান্টের বিকল্প না। তবে লিভার ট্রান্সপ্লান্টকে বিলম্বিত করবে। বাংলাদেশে এখনও ট্রান্সপ্লান্ট শুরু হয়নি। এটি শুরু হলেও সবাই রাতারাতি লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করতে পারবে বিষয়টি তেমন নয়। কারণ এক্ষেত্রে ডোনার পাওয়া ও খরচের ব্যাপার রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘স্টেমসেল নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের মধ্যে থেরাপিতে একাডেমিশিয়ান ও ফিজিশিয়ানরা কাজ করছেন। এখন এটার গাইডলাইন তৈরি করা দরকার। সেটা শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি, এরপরের উন্নতিটা গাইডলাইন অনুযায়ী হবে।’
বিএসএমএমইউ এর ভাসকুলার ও এন্ডোভাস্কুলার সার্জন ডা. সমরেশ চন্দ্র সাহা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিএসএমএমইউতে আমরা এখনও কার্ডিওভাস্কুলার নিয়ে কাজ করিনি। তবে চালু করতে চাই।’
মো. হারিসুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, স্টেমসেল থেরাপি কীভাবে কাজ করবে এটা নিয়ে গাইডলাইন তৈরি করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি, আগামী ছয় মাসের মধ্যে এই গাইডলাইন তৈরি করা সম্ভব হবে। আমরা গাইডলাইনটি তৈরি করার ক্ষেত্রে এর চিকিৎসার সর্বশেষ ভার্সনটি নিয়ে যাতে কাজ করা হয় সেটার দিকে খেয়াল রাখছি। ঠিক কোন পর্যায়ে গেলে রোগীকে স্টেমসেল ট্রিটমেন্ট দেওয়া যাবে, কোন কারণে রোগী এই থেরাপি নেওয়ার পর যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে সরকার তাকে কীভাবে সহায়তা করবে- এই বিষয়গুলো গাইডলাইনে থাকবে। গাইডলাইন না করলে এই চিকিৎসা ব্যবস্থা দুর্বৃত্তদের হাতে চলে যাবে। বাইরের বিভিন্ন দেশ চাইছে বাংলাদেশে স্টেমসেল খাতে বিনিয়োগ করতে। তারা চাইছে, যেন এ খাতে সরকারের সম্পক্তৃতা কম থাকে।
তিনি বলেন, কারও হাড় ভেঙে যাচ্ছে, সেখানে স্টেম সেল দিচ্ছি। কারও একিউট হার্ট এ্যাটাক হয়েছে, তাকে রিং না পরিয়ে স্টেমসেল দিচ্ছি। এক্ষেত্রে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। স্বাভাবিক কারণেই ব্যবসায়ীরা বিরাগভাজন হচ্ছে। তারা একটা জিনিস খেয়াল করছে না যে, এটা কোন ইনফেকসাস ডিজিজের ক্ষেত্রে হচ্ছে না, এটা শুধু সেই রোগীদের জন্য করা হবে যারা দীর্ঘদিন ধরে ভাঙা হাঁটু নিয়ে বিছানায় পড়ে আছে তাদের ক্ষেত্রে।
তিনি বলেন, স্টেমসেল থেরাপি আমাদের দেশে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। আমাদের দেশে এই চিকিৎসার ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল। এতে রোগীরাও অনেক বেশি উপকৃত হবে। দেশে এই চিকিৎসা থাকায় তাদের অর্থেরও সাশ্রয় হবে অনেক বেশি।

/টিওয়াই/ওআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!