ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির উদ্যোগে ইডেন কলেজের তিন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিতার্কিককে চাকরিতে যোগদানের নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। শনিবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর এফডিসিতে আয়োজিত এই চাকরি প্রদান অনুষ্ঠানে তিন জনের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন অভিনেতা ও উদ্যোক্তা অনন্ত জলিল। প্রাথমিকভাবে অনন্ত জলিলের গ্রুপে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করছেন এই তিন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিতার্কিক।
ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে শিক্ষাজীবন শেষ করে অনন্ত জলিল গ্রুপে চাকরি পাওয়া তিন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিতার্কিকরা হলেন- রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের রিপা তাবাসসুম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের পারুল বেগম এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের পারভীন আক্তার। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিপুল সংখ্যক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
এসময় ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের নিয়ে জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে গিয়ে দেখি সব যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কর্মক্ষেত্রে প্রবেশে তাদের নানা বৈষম্যের শিকার হতে হয়। সেই থেকে আমরা দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য কর্মসংস্থানের চেষ্টা করছিলাম। এরই ধারাবাহিকতায় আজ তিন জনকে চাকরি প্রদান করা হয়। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলে আমরা আশা রাখি। সমাজের অন্যান্য বিত্তবান উদ্যোক্তারাও পিছিয়ে পড়া এই প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানে এগিয়ে আসবেন। ইতোমধ্যে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক আরও বেশ কয়েকজন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি পেয়েছি আমরা।’
অনুষ্ঠানে চিত্রনায়ক ও উদ্যোক্তা অনন্ত জলিল বলেন, ‘আমরা প্রথম পর্যায়ে এই তিন জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর হাতে চাকুরির সনদপত্র তুলে দিতে পেরে আনন্দিত। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য আমাদের এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। ভবিষ্যতে খুব দ্রুত আরও কয়েকজনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।’ প্রতিবন্ধীদের জন্য সাধ্য অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার জন্য উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান অনন্ত জলিল।
অনুষ্ঠানে অন্যন্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখে চিত্রনায়িকা বর্ষা, শিল্প উদ্যোক্তা সুমন ফারুক, অধ্যাপক আবু রইস, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন ও লে. কর্নেল (অব.) জুলফিকার আলী মজুমদার।
রাজনৈতিক দলগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করে অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, আর কয়েকদিন পরেই একাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দল যেনো তাদের নির্বাচনি ইশতেহারে প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষামূলক বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা ও উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে। প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের ব্যাপারে যে ধুম্রজাল তৈরি করা হয়েছে তার অবসান এবং প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনি ইশতেহারে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের জন্য কমপক্ষে ৩ শতাংশ চাকরি প্রদানের ঘোষণার দাবি জানানো হয়। এছাড়াও প্রতিবন্ধীদের দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য প্রয়োজনে নতুন বিল উত্থাপন করে প্রতিবন্ধীদের জন্য ৩ থেকে ৪টি সংরক্ষিত আসন রাখা উচিত বলেও মতামত দিয়েছেন বক্তারা।
