X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষার তিন প্রকল্প এক কর্মসূচিতে

এস এম আববাস
০১ ডিসেম্বর ২০১৮, ২৩:২৩আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০১৮, ২৩:২৭



 শিক্ষার মান উন্নয়নে চালু করা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) পরিচালিত তিনটি প্রকল্প এখন থেকে পরিচালিত হবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে। প্রকল্পগুলো হলো, ‘সেকেন্ডারি অ্যাডুকেশন কোয়ালিটি অ্যান্ড অ্যাকসেস এনহান্সমেন্ট প্রজেক্ট’ (সেকায়েপ), ‘সেকেন্ডারি অ্যাডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম’ (সেসিপ) ও ‘টিচিং কোয়ালিটি ইম্প্রুভমেন্ট ইন সেকেন্ডারি অ্যাডুকেশন প্রজেক্ট’ (টিকিউআইসেপ)। প্রকল্পগুলোর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বিভিন্ন জটিলতার দেখা দেওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সেকেন্ডারি অ্যাডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’ (এসএডিপি)। এই কর্মসূচি পরিচালনায় নতুন করে জাতীয় পর্যায়ের একটি বডিও তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) জাবেদ আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘এই তিনটি প্রকল্প একটি কর্মসূচির আওতায় পরিচালিত হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সরাসরি তত্ত্বাবধান করবে।’
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মাউশির মাধ্যমে পরিচালিত তিনটি প্রকল্প নিয়ে কিছু জটিলতা দেখা দেয়। প্রকল্পগুলোর একটিতে কিছু অনিয়মের অভিযোগও ওঠে। তবে সফল প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত ‘সেকায়েপ’ প্রকল্পের শিক্ষকদের নিয়োগ ও তাদের দাবি নিয়ে জটিলতায় পড়ে সরকার। এসব বিবেচনায় মন্ত্রণালয় দায়িত্ব নিয়ে প্রকল্পগুলো একটি কর্মসূচির আওতায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
কর্মসূচি পরিচালনায় সম্প্রতি জাতীয় পর্যায়ের একটি বডি তৈরি করা হয়েছে। একজনকে রাখা হয়েছে একজন ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর। আর কর্মসূচির পরিচালনায় নির্বাহী প্রধান হিসেবে রাখা হয়েছে একজন প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর। দুই জন অতিরিক্ত সচিব এই দায়িত্ব পালন করবেন। ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত (উন্নয়ন) ড. মো. মাহামুদ-উল-হক এবং প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) জাবেদ আহমেদ। এছাড়া, লাইন ডিরিক্টের হিসেবে থাকবেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট পরিচালকরা। এই কর্মসূচি পরিচালিত হবে সরকারি তহবিলের মাধ্যমে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) জাবেদ আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সরকারের রাজস্ব তহবিল থেকে এই তিনটি প্রকল্প একটি কর্মসূচির মাধ্যমে পরিচালিত হবে। এই তহবিলের ৮০ শতাংশ দেবে সরকার আর ২০ শতাংশ দেবে বিশ্বব্যাংক।’
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের দুর্গম এলাকায় মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধে ‘সেকায়েপ’-এর আওতায় দুই হাজার একশ প্রতিষ্ঠানে পাঁচ হাজার দুই শ অতিরিক্ত শ্রেণিশিক্ষক (এসিটি) নিয়োগ করে সরকার। শিক্ষার্থীদের ২০০৮ সালে চালু হওয়া প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয় ২০১৫ সালে। অতিরিক্ত শ্রেণি-শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞানভীতি দূর করতে সক্ষম হন। নিয়মিত ক্লাসের পাশাপাশি ১৬ থেকে ২০টি ক্লাস নেন এই শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীদের হোম ভিজিটের পাশাপাশি সমাজ সচেতনতামূলক কাজে সম্পৃক্ত করা এই শিক্ষকদের। বিশ্বব্যিাংক ও সরকারের কাছে এই শিক্ষকরা সমাদৃতও হন।
কিন্তু ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু প্রকল্প সম্প্রসারণ হয়নি। নিয়োগপত্রে চাকরির বিষয়ে বলা ছিল, প্রকল্প সম্প্রসারণ করে অথবা এমপিওভুক্ত করে চাকরি অব্যাহত রাখা হবে। প্রকল্প সম্প্রসারণ না হওয়ায় হতাশার মধ্যে পড়ে এমপিও (মান্থলি মেমেন্ট অর্ডার) দাবিতে এই শিক্ষকরা রাস্তায় নামেন। একপর্যায়ে মন্ত্রণালয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) নির্দেশ দেয় এমপিওভুক্ত করতে। কিন্তু এমপিও নীতিমালা ও শিক্ষক নিয়োগের প্রচলিত নিয়মে এমপিওভুক্তির ব্যবস্থা না থাকায় জটিলতা সৃষ্টি হয়।
এদিকে দেশের দারিদ্র্যবিমোচনে গুণগত মান, দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও সমান সুযোগের ভিত্তিতে মাধ্যমিক শিক্ষার সার্বিক মানোন্নয়নের জন্য সেসিপ চালু হয় ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। আইসিটির ব্যবহার নিশ্চিত করতে সেসিপ-এর আওতায় মাধ্যমিক পর্যায়ে ৬৪ জেলায় ৬৪০ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আইসিটি লার্নিং সেন্টার স্থাপন করা হয়। দেশের ১৪২টি উপজেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক হাজার রিসোর্স টিচার (আরটি) নিয়োগ দেওয়া হয়। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর প্রকল্পের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরির ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে প্রকল্প চালু রাখার পদক্ষেপ নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এছাড়া শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, একীভূত শিক্ষায় সহায়তা ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মাধ্যমে মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে টিচিং কোয়ালিটি ইম্প্রুভমেন্ট ইন সেকেন্ডারি অ্যাডুকেশন প্রজেক্ট (টিকিউআইসেপ) প্রকল্প শুরু করা হয় ২০১২ সালের জুলাইতে এবং মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৭ সালের জুনে। এই প্রকল্প চালু রাখা হবে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের লক্ষে। সেকায়েক ও সেসিপসহ এই প্রকল্প পরিচালিত হবে সেকেন্ডারি অ্যাডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম এর মাধ্যমে।

/এমএনএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘ডে আফটার টুমরো’ নয়, টুডে
‘ডে আফটার টুমরো’ নয়, টুডে
জিম্মি মুক্তির বিষয়ে আন্তরিক হলেও গাজায় আগে যুদ্ধবিরতি চায় হামাস
জিম্মি মুক্তির বিষয়ে আন্তরিক হলেও গাজায় আগে যুদ্ধবিরতি চায় হামাস
হাসিনা-তাভিসিন আন্তরিক বৈঠক, থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ দলিল স্বাক্ষর
হাসিনা-তাভিসিন আন্তরিক বৈঠক, থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ দলিল স্বাক্ষর
৯ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে চুয়েট, হলে থাকতে পারবেন শিক্ষার্থীরা
৯ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে চুয়েট, হলে থাকতে পারবেন শিক্ষার্থীরা
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ