X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশে ‘সংখ্যাগরিষ্ঠতা ভিত্তিক’ নির্বাচনের পরিবর্তে ‘আনুপাতিক নির্বাচন’ সম্ভাবনাময়

ঢাবি প্রতিনিধি
২২ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:১৭আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:১৯

বাংলাদেশে ‘সংখ্যাগরিষ্ঠতা ভিত্তিক’ নির্বাচনের পরিবর্তে ‘আনুপাতিক নির্বাচন’ সম্ভাবনাময় বাংলাদেশে গণতন্ত্রের বিকাশে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ভিত্তিক নির্বাচন ব্যবস্থার পরিবর্তে আনুপাতিক নির্বাচন-ব্যবস্থার প্রবর্তন একটি সম্ভাবনাময় পদক্ষেপ হতে পারে উল্লেখ করে 'নির্বাচন পদ্ধতি' শীর্ষক প্রবন্ধ প্রকাশ করা হয়েছে। শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরোর সভাকক্ষে সমাজ গবেষণাকেন্দ্র আয়োজিত এক সেমিনারে 'নির্বাচন পদ্ধতি' ও ‘রাজনৈতিক ইশতেহারে অর্থনৈতিক ইস্যুর প্রতিফলন’ বিষয়ে দুটি আলাদা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়।
প্রথম প্রবন্ধটির লেখক জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, দ্বিতীয়টির লেখক বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা পরিচালক ড. বিনায়ক সেন। নজরুল ইসলামের পক্ষে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ ।
প্রাপ্ত ভোট ও আসনের অস্বাভাবিকতা তুলে ধরে প্রবন্ধে বলা হয়, আনুপাতিক পদ্ধতি বাংলাদেশের জনগণের মনস্তত্ত্বের সঙ্গেও সঙ্গতিপূর্ণ। প্রবন্ধে আনুপাতিক নির্বাচন-ব্যবস্থার দশটি ইতিবাচক ও তিনটি নেতিবাচক দিক তুলে ধরা হয়। ইতিবাচক দিকগুলো হলো- বিভিন্ন দলের ভোটানুপাতের সামান্য পরিবর্তনে নির্বাচনি ফলাফলে বড় ধরনের পরিবর্তন রোধ, কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করার বিষয়গত সুযোগ, আসনের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে কারচুপির প্রয়োজনীয়তা হ্রাস, অধিকতর যোগ্যতম ব্যক্তিদের সংসদে যোগদানের সম্ভাবনা সৃষ্টি, নির্বাচনি প্রচারের মানোন্নয়ন, প্রাক-নির্বাচনি জোট গঠনের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস, রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা ও শক্তি বৃদ্ধি, স্থানীয় সরকারসমূহের বিকাশের অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি, নির্বাচনে ক্ষুদ্র ও বৃহৎ রাজনৈতিক দল এবং জনগোষ্ঠীর জন্য সম-উচ্চতার জমিন সৃষ্টি এবং তার ফলে আরও অন্তর্ভুক্তিসম্পন্ন সংসদ গঠন, অধিকতর ন্যায্যতা অর্জন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক সংঘাতের প্রশমন।

অন্যদিকে, নেতিবাচক দিকগুলো হলো- ভৌগলিক প্রতিনিধিত্বের সমস্যা, ঘন ঘন সরকার পরিবর্তনের সম্ভাবনা এবং মনোনয়ন বাণিজ্য ও দলের পিঠে সওয়ার হওয়ার সমস্যা। তবে সুচিন্তিত কর্মপন্থা অনুসরণ করলে নেতিবাচক দিকগুলো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়।
সংখ্যাগরিষ্ঠতা ভিত্তিক পদ্ধতিতে বাংলাদেশের বিগত নির্বাচনগুলোতে বিভিন্ন দলের ‘রাজনৈতিক ইশতেহারে অর্থনৈতিক ইস্যুর প্রতিফলন' শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. বিনায়ক সেন । প্রবন্ধে তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগের ইশতেহার উন্নয়নের ডিসকোসের আবর্তে আটকে গেছে। তাদের ইশতেহারের মূল ফোকাস উন্নয়নের ওপর। বিএনপির ইশতেহারে গণতন্ত্রকে নিত্যদিনের অনুশীলনে পরিণত করার কথা আছে। তাদের মূল ফোকাস রাজনৈতিক। কিন্তু মৌলিক কিছু প্রশ্নের উত্তর তাদের কারও ইশতেহারেই আসেনি। যেমন সংবিধানের চার মূলনীতির আজকের অর্থ কী, আমরা কী ধরনের রাষ্ট্র চাই- এসব প্রশ্ন আলোচিত হয়নি। বিএনপির ইশতেহারে পুনরায় মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরির অঙ্গীকার দেশে নতুন করে বিভাজন সৃষ্টি করবে।’

তিনি আরও বলেন, 'ইশতেহারে আয়-সম্পদ ও শিক্ষার ক্ষেত্রে বিদ্যমান বৈষম্য নিয়ে তেমন কথা নেই। দুই-এক লাইনের বাইরে বোঝার উপায় নেই, এই বৈষম্য দূরীকরণ কীভাবে হবে। বৈষম্য দূরীকরণের উপায় বা পদ্ধতি নিয়ে ইশতেহারে বিস্তারিত থাকা উচিত ছিল।’
বিনায়ক সেন বলেন, ‘বিকেন্দ্রীকরণের প্রসঙ্গটি ইশতেহারে তেমন আলোচিত হয়নি। বিকেন্দ্রীকরণের ক্ষেত্রে প্যারাডক্সটি হচ্ছে, যে সরকারকে আমরা স্থানীয় সরকারে নির্বাচন করছি, তাকে আমরা ক্ষমতায়ন করছি না। যেমন উপজেলা সরকার- নির্বাচন করেছি, ক্ষমতায়ন করিনি। অন্যদিকে যেটি নির্বাচিত এবং ক্ষমতায়িত, যেমন ইউনিয়ন পরিষদ সরকার- তার ক্ষমতা অতিসংকুচিত। বড় শহর, ছোট শহর ও গ্রামাঞ্চল নিয়ে আলাদা কোনও আলোচনা ইশতেহারে নেই, যেটি থাকা উচিত ছিল। রাজস্ব কাঠামো সংস্কারের কোনও অঙ্গীকারও ইশতেহারে নেই। এনলাইটেনমেন্ট ছাড়া উন্নয়ন কখনও ভালো ফল বয়ে আনে না। তাই উন্নয়নের ধারণাসমূহের ওপর আলোচনা প্রয়োজন ছিল। সেটিও হয়নি।’

/এআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
একযুগ পর দলছুট, সঙ্গে সঞ্জীব চৌধুরী
একযুগ পর দলছুট, সঙ্গে সঞ্জীব চৌধুরী
সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করা ব্যক্তির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো বাঘ, নিয়ে গেলো গহীন বনে
সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করা ব্যক্তির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো বাঘ, নিয়ে গেলো গহীন বনে
ট্রাম্পের বিচার চলাকালে আদালতের বাইরে গায়ে আগুন দিলেন এক ব্যক্তি
ট্রাম্পের বিচার চলাকালে আদালতের বাইরে গায়ে আগুন দিলেন এক ব্যক্তি
দুই জনপ্রতিনিধির নাম বলে সাভারে সাংবাদিকের ওপর কেমিক্যাল নিক্ষেপ
দুই জনপ্রতিনিধির নাম বলে সাভারে সাংবাদিকের ওপর কেমিক্যাল নিক্ষেপ
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি