X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

শীতজনিত ডায়রিয়া প্রতিরোধে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকদের

তাসকিনা ইয়াসমিন
০৯ জানুয়ারি ২০১৯, ১৬:২৬আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০১৯, ১৬:৩২

 





হাসপাতালের বেডে চিকিৎসাধীন ডায়রিয়া রোগী

দেশের বিভিন্ন স্থানে শীতের প্রকোপ যত বাড়ছে শীতজনিত ডায়রিয়ায় তত বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বৃদ্ধ ও শিশুরা। এ কারণে শীতজনিত ডায়রিয়া প্রতিরোধে সতর্ক থাকার প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তাদের আশঙ্কা,শৈত্যপ্রবাহ বাড়লেই বাড়বে ডায়রিয়াসহ শীতজনিত রোগ।

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, বর্তমানে পঞ্চগড়, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল, দিনাজপুর, যশোর এবং মৌলভীবাজার অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে ও বিস্তার লাভ করতে পারে। এছাড়া জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে আরও একটা শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে। ’

আর স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, ঠাণ্ডার কারণেই হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এদের বেশিরভাগই শিশু। এরা রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। 
মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, রাজধানীর রামপুরা থেকে এক বছরের শিশু সুমাইয়াকে নিয়ে এসেছেন মা রহিমা বেগম। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কয়েকদিন ধরেই তার মেয়ের পাতলা পায়খানা হচ্ছে, এ কারণে সে দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাই তাকে এই হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।

পাশের বেডে থাকা রহিমা বেগম বলেন, তার মেয়ে রেহনুমা আক্তারের বয়স এক বছর তিন মাস। তার ডায়রিয়া কমছে না দেখে তাকে হাসপাতালে আনা হয়েছে।

আইসিডিডিআরবির প্রধান চিকিৎসক ও হাসপাতালের প্রধান ডা. আজহারুল ইসলাম খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দূষিত পানি, দূষিত খাবার এবং পরিবেশের কারণে মানুষ বেশি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। এজন্য সবসময় হাত পরিষ্কার রাখা, টয়লেট ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে হাত-পা ধোয়া, ছোট শিশুদের শুধু মায়ের বুকের দুধ পান করানো, ডায়রিয়া হলে ওরস্যালাইন খাওয়ানো সতর্কতা হিসেবে আমরা এই মেসেজগুলো দেই।’ 

হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী মঙ্গলবার আইসিডিডিআর,বির দেওয়া তথ্যানুযায়ী, গত ১ জানুয়ারি ৫শ’ ৩৫ জন রোগী সেখানে ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিয়েছে । এরপর গত ২ জানুয়ারি ৫শ’ ৯ জন, ৩ জানুয়ারি ৫শ’ ৩১ জন, ৪ জানুয়ারি ৪শ’ ৯৮ জন, ৫ জানুয়ারি ৫শ’ ২৭ জন, ৬ জানুয়ারি ৫শ’ ১৭ জন এবং গতকাল অর্থাৎ সাত জানুয়ারি ৫শ’ ৪৮ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী আইসিডিডিআর,বির ঢাকা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। 

আর স্বাস্থ্য অধিদফতরের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানান, গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে এ বছরের ৭ জানুয়ারি এই একুশ দিনে সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে মোট ৫ হাজার ৫ শ’ ৯৮ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। আর গত এক বছরে প্রায় সাড়ে চার লাখ ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে একজন রোগী মারা গেছেন।

চিকিৎসকেরা বলছেন, শৈত্যপ্রবাহ বাড়লে শীতজনিত রোগ বাড়ার ঝুঁকি রয়েছে। এই অবস্থায় রোগীদের সতর্ক থাকা প্রয়োজন। যদিও ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, টাঙ্গাইলসহ আরও কিছু জেলার সিভিল সার্জনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ডায়রিয়া পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছে। ঢাকা ও টাঙ্গাইল জেলায় ডায়রিয়ার কোনও প্রকোপ দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জনরা। তবে খুলনা জেলার সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম আব্দুর রাজ্জাক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, খুলনায় শীত কমে যাওয়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ একটু কমেছে। শীত কমে গেলে এটি আরও কমবে। তবে শীতজনিত যে রোটাভাইরাস ডায়রিয়া এবং নিউমোনিয়া দুটোই নিয়ন্ত্রণে আছে। 


তবে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ শীতজনিত ডায়রিয়ার প্রকোপ একটু বেড়েছে। শীতকালে এ রোগ একটু বাড়ে। তবে সমস্যা নেই। সব কন্ট্রোলে আছে। ওষুধ আছে, কোনও সমস্যা নেই।’

জাতীয় পুষ্টি সার্ভিসের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মো. এম ইসলাম বুলবুল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, তিনদিনে সাধারণত ডায়রিয়া কমে যায়। যদি না কমে তখন চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া ভালো অথবা শিশুকে সরাসরি হাসপাতালে ভর্তি করানো উচিত। আমাদের সবগুলো সরকারি হাসপাতাল, উপজেলা হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশুকে ডায়রিয়ার চিকিৎসা দেওয়া হয়।’

 

/টিএন/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বিএনপির বিরুদ্ধে কোনও রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির বিরুদ্ধে কোনও রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী
চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, হিট অ্যালার্ট জারি
চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, হিট অ্যালার্ট জারি
জিমি নেই, তারপরও খেলতে নামছে মোহামেডান
জিমি নেই, তারপরও খেলতে নামছে মোহামেডান
বায়ার্নের কোচ হওয়া থেকে এক ধাপ দূরে জিদান
বায়ার্নের কোচ হওয়া থেকে এক ধাপ দূরে জিদান
সর্বাধিক পঠিত
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!