নির্মাণ শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। তাদের দাবি—দুর্ঘটনার শিকার শ্রমিকদের একজীবনের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ শ্রমআইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, প্রতি মাসে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন এর বোর্ড সভা করতে হবে এবং শ্রমিকদের পেনশন স্কিম, রেশনিং ব্যবস্থা, বাসস্থান ও কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
শুক্রবার (১৮ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘নির্মাণ শ্রমিকদের দাবি দিবস’ উপলক্ষে ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশ (ইনসাব) আয়োজিত সমাবেশে এসব দাবি জানান নেতারা।
সমাবেশে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শ্রমজীবীবান্ধব মানুষ ছিলেন। সেজন্য তিনি জীবনের ক্রান্তিলগ্নে এসে কৃষক-শ্রমিক-আওয়ামী লীগ গঠন করেছিলেন। আজকে টাকার যে অবমূল্যায়ন হয়েছে, তাতে ১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ কোনোমতেই যুক্তিসঙ্গত নয়। এটা ৫-১০ লাখ করার দাবি জানাচ্ছি।’
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘আপনি মানবতার নেতা, যারা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন মাতৃস্নেহ দিয়ে তাদের দাবি-দাওয়া মেনে নেবেন। আজকে যে উন্নয়ন হচ্ছে এই শ্রমিকরা আপনার সেই উন্নয়নের সহযাত্রী। ইমারত শ্রমিকরা আপনার উন্নয়নের কারিগর। আমি আশা করি, প্রধানমন্ত্রী এই দাবির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন এবং যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন।’
ইনসাবের সভাপতি মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘নির্মাণ কাজটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এই শিল্পের সঙ্গে লাখ লাখ শ্রমিক জড়িত। এই শিল্পের শ্রমিকরা নিরাপত্তাহীনতা ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে চলেছে। শ্রম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দফতরের বিষয়গুলো দেখভাল করার কথা থাকলেও, তারা দায়িত্ব পালনে অবহেলা করছে। অন্যদিকে, মালিকদের অতিমুনাফা লোভী মনোভাবের কারণে নিরাপত্তাবেষ্টনী ব্যবহার না করেই শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। ফলে প্রতিনিয়ত নির্মাণ শ্রমিক আহত ও নিহত হচ্ছেন। বরাবরই শ্রম আইন সংশোধন করা হলেও শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা হয় না বললেই চলে।’
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন— বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি শহীদুল্লাহ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার ওয়াজেদুল ইসলাম খান, ইনসাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রাজ্জাক এবং ইনসাবের কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন থানার নেতারা। সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাব থেকে পল্টন মোড় পর্যন্ত একটি র্যালি বের করেন।