দেশে অধিক হারে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা বাড়ানোর জন্য প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট দিনকে উদ্যোক্তা দিবস ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া একটি উদ্যোক্তা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে তা কার্যকর করার প্রয়োজনীয়তা দেখছেন অনেকে। এ বিষয়ে সরকারকে সার্বিক সহযোগিতা করতে চায় ঢাকা স্কুল অব ইকনোমিকস (ডিএসসিই)। শুক্রবার (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীতে ডিএসসিই’র দুই দিনের প্রথম আন্তর্জাতিক উদ্যোক্তা সম্মেলন ও প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা।
ডিএসসিই’র ইস্কাটনের ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল মান্নান। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় উদ্যোক্তা তৈরির প্রথম প্রতিষ্ঠান হিসেবে ডিএসসিই অসাধারণ ভূমিকা পালন করে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। তার মন্তব্য, ইচ্ছাশক্তি প্রবল থাকলে কোনোকিছু উদ্যোক্তা হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হতে পারে না। নারী উদ্যোক্তা তৈরি ও নারীর ক্ষমতায়নে এভাবে আরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
সম্মেলনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উদ্যোক্তা বিষয়ে আলাদা ১৫টি ভাবনা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উদ্যোক্তা বিশেষজ্ঞ ও সামষ্টিক অর্থনীতিবিদ ডিএসসিই’র উদ্যোক্তা অর্থনীতি কোর্সের সমন্বয়ক প্রফেসর ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী। তিনি মনে করেন, কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় রাজধানীর বাইরে স্থাপন প্রয়োজন।
প্রফেসর ড. মুহম্মদ মাহবুব আলীর কথায়, ‘ক্ষুদ্র সঞ্চয়কে ক্ষুদ্র বিনিয়োগে আনতে হলে পৃথক নিয়ন্ত্রক সংস্থার আওতায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কমিউনিটি ব্যাংক স্থাপন করতে হবে। ডিএসসিই আগামীতে অর্থনৈতিক ইনকিউবেটর তৈরি করবে। যেখানে দেশের সম্ভাবনাময় রফতানি খাত, দেশের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা, বিদেশের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন, পণ্যের বিপণন, ব্র্যান্ডিং ও সম্প্রসারণের বিভিন্ন কৌশল থাকবে। ইনকিউবেটরের সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে যেতে পারবে নতুন উদ্যোক্তা।’
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি যুক্তরাষ্ট্রের মর্গান স্টেট ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির অধ্যাপক ড. ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘সারাবিশ্বে বাঙালিদের সৃজনশীলতার বিশেষ প্রশংসা রয়েছে। তবে উদ্যোক্তা হতে হলে ছোট থেকে বড় হওয়ার পরিকল্পনা করতে হবে। সেখানে আর্থিক সংকট বাধা হতে পারে। কিন্তু সংকল্প ও দৃঢ়তা রাখতে হবে।’
বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী হোসেইন প্রধানিয়া জানিয়েছেন, উদ্যোক্তা তৈরি ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে কৃষি ব্যাংক কাজ করে যাচ্ছে। সারাদেশের ২৩ শতাংশ মানুষের কাছে আর্থিক সুবিধা পৌঁছে দিচ্ছে কৃষি ব্যাংক। আগামী দিনে তা বেড়ে হবে ৮০ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিএসসিই’র সহকারী অধ্যাপক রেহেনা পারভীন। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও ছিলেন হোপ ফর দি পোরেস্টের (আশার অঙ্গ প্রতিষ্ঠান) নির্বাহী পরিচালক মহিউল কাদির। ডিএসসিই’র উদ্যোগে অনুষ্ঠানটির সার্বিক সহযোগিতায় ছিল ইকোনমিক রিপোর্টারস ফোরাম (ইআরএফ)।
