দক্ষিণ এশিয়ায় লিঙ্গভিত্তিক মজুরির পার্থক্য সবচেয়ে বেশি বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এ এম আকাশ। তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে মজুরি বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে দক্ষিণ এশিয়ায় এ বৈষম্য সবচেয়ে বেশী। তবে ১৯৯০ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় বসবাসকারী দরিদ্র লোকের সংখ্যা ২৪৮.৮ মিলিয়ন হ্রাস পেয়েছে। দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমলেও পালমা রেশিও বা বৈষম্যের সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার ১০ শতাংশ ধনী ব্যক্তির জাতীয় আয়কে (জিএনআই) ৪০ শতাংশ দরিদ্র ব্যক্তির সামগ্রিক আয় দিয়ে ভাগ করে দেখা যায় ১০ শতাংশ আয়ের তুলনায় ৪০ শতাংশের আয় হ্রাস পেয়েছে।’
মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ ও সাউথ এশিয়া অ্যালায়েন্স ফর প্রভারটি ইরোডিকেশন (স্যাপি) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষমতাশালীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মজুরি বৈষম্য বজায় রাখছে। যেখানে বাজার ও অর্থের একচ্ছত্র আধিপত্য তাদের হাতে কুক্ষিগত। ইকোনোমিক ফোরাম অর্থনৈতিক আলোচনা নামে ধনী, অভিজাত এবং বহুজাতিক করপোরেশনগুলো জলবায়ুকে ধ্বংস করছে। নারী শ্রমিক ও আদিবাসী জনগণের অধিকারগুলো ছিন্ন করতে মুনাফা ও শক্তি প্রয়োগ করছে।
আইএলও’র ওমেন এট ওয়ার্ক ট্রেন্ডস ২০১৬ প্রতিবেদনের উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, বিশ্বব্যাপী শ্রমবাজারে নারীদের অংশগ্রহণের হার ৫২.৪ শতাংশ থেকে ৪৯.৬ শতাংশে কমে এসেছে। সারা বিশ্বে পুরুষদের চেয়ে নারীরা ২৪ শতাংশ কম মজুরি পেয়ে থাকে। সন্তান আছে এবং সন্তান নেই এমন নারীর যথাক্রমে ৩৫ শতাংশ ও ১৪ শতাংশ মজুরি কম পেয়ে থাকেন। কিছু সংখ্যক ব্যক্তির হাতে সম্পদ ও ক্ষমতা থাকায় এধরনের বৈষম্য বাড়ছে।
বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক নারী নেত্রী রোকেয়া কবীরের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএমএ’র সাবেক সভাপতি ডা. রশিদ-ই-মাহবুব, শ্রমিক নেতা আবুল হোসেন, ডা. লেলিন চৌধুরী, বাপা’র সাধারণ সম্পাদক এমএ মতিন, নূমান আহমেদ খান প্রমুখ।