অফিস সময়ে সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের রিটের শুনানি আগামী সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ সময়ের মধ্যে রিটের প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার পালোয়ান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
রিটের শুনানিতে আদালত বলেন, প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন নির্বাহী বিভাগের প্রধান। প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে বলেছেন, সরকারি চিকিৎসকরা সেবা দিতে না পারলে তাদের চাকরি ছেড়ে দিতে। এর চেয়ে আর কী বলবেন? এছাড়াও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিভিন্ন হাসপাতালে অভিযান শুরু করেছে। এরপর আদালত রিটের ওপর আংশিক শুনানি নিয়ে আবেদনটির কিছু অংশ সংশোধন করার নির্দেশ দিয়ে সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।
এর আগে গতকাল সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) অফিস সময়ে সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ আইনজীবী। তারা হলেন আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান, সালাউদ্দিন রিগান, সুজাত মিয়া, মো. আমিনুল হক ও মো. কাওছার উদ্দিন মণ্ডল।
রিটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি এবং বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতিকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিট আবেদনে সরকারি চিকিৎসকদের সম্পূর্ণভাবে প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে রুল জারির আবেদন জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও সরকারি হাসপাতালের সব কার্যক্রম তদারকি করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের অনিয়ম বন্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনারও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে।
একইসঙ্গে রিট আবেদনে অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা গঠনে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের আরজি জানানো হয়েছে।
এদিকে অফিস সময়ে সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধে গত ২৯ জানুয়ারি সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান।
ওই নোটিশে বলা হয়েছিল, সরকারি চিকিৎসকদের থেকে চিকিৎসা পাওয়া প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু সম্প্রতি নিজ কর্মস্থল সরকারি হাসপাতাল রেখে অনেক চিকিৎসক তাদের ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসা দিচ্ছেন। সরকারি হাসপাতালের কর্মঘণ্টার সময় সরকারি চিকিৎসকদের এমন অসদাচরণ আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ। তাই সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধে পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের কাছে এ নোটিশ পাঠানো হয়। ওই নোটিশের জবাব না পাওয়ায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।