বর্তমান সমাজবীক্ষণে মানুষের আত্মঘাতী পরিকাঠামোকে ছন্দবদ্ধ পরিচর্যায় কবিতায় তুলে ধরেছেন কবি মুহাম্মদ মনসুর রহমান। এবারের একুশে গ্রন্থমেলায় তার প্রকাশিত কবিতার বই ‘রঙের মানুষ’। এ বইয়ের কবিতাগুলোতে ধরা দিয়েছে বর্তমান সমাজের চালচিত্র। বইটি প্রকাশ করেছে পিয়াল প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশন্স। পরিবেশক অন্যধারা। বইটির মূল্য ১৩০ টাকা।
আসল কবির আকাল বড়
কবিতা ঠিক আছে।
ভুল বানানে মিশেল ভাষা
কাব্য ঝোলে গেছে। (কবিতা: হারিয়ে গেছে)
সমাজে বিদ্যমান সাধুগিরি মানসিকতার গায়ে চাবুক মেরে তিনি বোঝাতে চান আমাদের অবস্থাটা কী। কবির অন্তর্বেদনার তীব্র অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে ‘হারিয়ে গেছে’ কবিতার শেষে।
সমাজ থেকে হারিয়ে গেছে
আসল নকল সব।
চারিদিকে শুনছি কেবল
সাধু সাধু রব।
কবির একটা বিষয় বিবেচনায় রাখা দরকার বলে মনে হয়, আর তা হলো— কবি হবেন ‘স্বপ্নদ্রষ্টা’ এবং কবিতা হবে ‘স্বপ্নদ্রষ্টা’। পাঠক কবিতায় স্বপ্ন দেখার সুযোগ পাবেন। স্বপ্ন সফল করার ইঙ্গিতও থাকবে তাতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সোনাগুলো রাতারাতি পিতলে পরিণত হওয়া, হলমার্ক কেলেঙ্কারি, শেয়ার বাজারে লুটপাট সেই সঙ্গে হ্যাকিং এর কবলে যখন আমাদের ব্যবহৃত আইডি, অ্যাকাউন্ট, ক্রেডিট কার্ড; এসবের কোনও কিছুই কবির চলমান ভাবনাকে এড়িয়ে যায়নি।
অনলাইনে হ্যাকিং করা অ্যাকাউন্ট ক্রেডিট কার্ড
লাভও বেশি, মনেও হবে নিজেকে খুব স্মার্ট।
কলমে দিয়ে চুরি করে শিক্ষিত চোর যারা
এক খোঁচাতেই হাজার কোটি পাচার করে তারা। (আধুনিক চোর)
এভাবেই নিজের কবিতার বইটি সাজিয়েছেন কবি মুহাম্মদ মনসুর রহমান। ‘রঙের মানুষ’ কাব্যগ্রন্থে কবি সমসাময়িক সমস্যার বেড়াজালের গণ্ডিতে ফেলে পাঠককে অভিমন্যু বানিয়েছেন তা নয়। “বেরিয়ে আসার পথটা যে এখনও তৈয়ার হয় নাই।” এমন কথা না বলেও তিনি জাতিকে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের বাতাবরণে পথ দেখাতে উদ্যোগী হয়েছেন।