ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ১০ জন শিক্ষক। রবিবার (১০ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
আগামীকাল সোমবার (১১ মার্চ) ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোট নেওয়া হবে।
বিবৃতিতে সই করা শিক্ষকরা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন ও অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অতনু রব্বানী, ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাহমিনা খানম এবং শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাজ্জাদ এইচ সিদ্দিকী।
শিক্ষকরা বলেন, আমরা অঙ্গীকার করছি যে, নির্বাচনের দিনে স্বেচ্ছাসেবী পর্যবেক্ষক দল হিসেবে ভোটকেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করবো এবং আমাদের অভিজ্ঞতা জাতির সঙ্গে শেয়ার করবো। এ সংক্রান্ত একটি আবেদনপত্র ডাকসু নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তার (চিফ রিটার্নিং অফিসার) কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই নির্বাচনটি ঠিকঠাকভাবে অনুষ্ঠিত হলে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্র সংসদ নির্বাচন হওয়ার ক্ষেত্র তৈরি হবে। এর মাধ্যমে ক্যাম্পাসগুলোতে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি হবে। শিক্ষার্থীরা তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ভাবনাগুলো তুলে ধরার ফোরাম পাবে এবং দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব বিকশিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষক হিসেবে আমরাও এই নির্বাচনের দিকে আগ্রহসহকারে চোখ রাখছি।
শিক্ষকরা জানান, ডাকসু নির্বাচনে সক্রিয় প্রায় সব দল যেমন, ছাত্রলীগ, বাম জোট ও ছাত্রদল প্যানেল দিয়েছে। পাশাপাশি কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে পরিচিতি পাওয়া ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ ও স্বতন্ত্র একাধিক প্যানেলও ঘোষণা করা হয়েছে। সব দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এবং রাজনৈতিক মহলে আশাবাদ তৈরি করেছে।
শিক্ষকরা বলেন, ইতোমধ্যেই নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের কিছু অভিযোগ আমরা শুনতে পেয়েছি, গণমাধ্যমে সেসবের খবর প্রকাশিত হয়েছে। কিছু ছাত্রাবাসে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। ফলে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কিছু পদে জয়ী হয়েছে। এছাড়া মঞ্চ তৈরি করে, প্রচারাভিযান, ক্লাসরুমে প্রচারাভিযান, মাইক ও ড্রামের ব্যবহার, রঙিন ও ব্যয়বহুল পোস্টার-ব্যানার ব্যবহার, গণরুমের শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠনের জন্য প্রচারাভিযানে নামতে বাধ্য করা ইত্যাদি ঘটনার কথা শোনা গেছে। কিন্তু সেসবের বিপরীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তেমন কোনও পদক্ষেপ নিয়েছে বলে শোনা যায়নি।
শিক্ষকেরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সাম্প্রতিক জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন না হওয়ার অভিযোগ আছে। জনমনে তাই ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়া নিয়ে প্রশ্ন আছে।
আরও পড়ুন...
ডাকসু নির্বাচনে গোলাম রাব্বানীর প্রচারে এএসপি ভাই!