X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

ডাকসু নির্বাচন: পর্যাপ্ত বুথ থাকলে ৬ ঘণ্টায় ভোটগ্রহণ সম্ভব

সাদ্দিফ অভি
১০ মার্চ ২০১৯, ২০:১৭আপডেট : ১০ মার্চ ২০১৯, ২০:৪৭

ডাকসু নির্বাচন: পর্যাপ্ত বুথ থাকলে ৬ ঘণ্টায় ভোটগ্রহণ সম্ভব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের বাকি আর কয়েক ঘণ্টা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলে বসবে ভোটের বুথ। তবে কোন হলে কয়টি বুথ বসবে তা নিয়ে এখনও কিছু খোলাসা করেননি প্রধান রিটার্নিং অফিসার। একজন ভোটারকে মোট ৩৮টি ভোট দিতে হবে। সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হবে দুপুর ২টায়। ৬ ঘণ্টায় সব ভোটার ভোট দিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে প্রার্থীদের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বেশির ভাগ প্রার্থীই দাবি জানিয়ে আসছিলেন নির্বাচনের সময় বাড়ানোর জন্য। তবে নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, পর্যাপ্ত বুথ বসানো হলে এই সময়ের মধ্যেই সব ভোট গ্রহণ সম্ভব।

এ বিষয়ে ডাকসুর প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক এসএম মাহফুজুর রহমানের কাছে রবিবার (১০ মার্চ) জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন বিষয়ে যা বলার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।’

কিন্তু সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুথের সংখ্যা সম্পর্কে কিছুই উল্লেখ করা নেই।  খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডাকসু নির্বাচনে মোট বুথ বসবে ৫১২টি। তবে কোন হলে কতটি বুথ বসবে সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা কেউ দিতে পারেননি। তবে সূত্র জানায়, মাস্টারদা সূর্যসেন হলে বুথ থাকবে ৩৫টি, কবি জসীম উদদীন হলে ২২টি, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ৩৫টি, বিজয় একাত্তর হলে ৪০টি, মুহসীন হলে ৩০টি, রোকেয়া হলে ৫০টি আর কবি সুফিয়া কামাল হলে ৪৫টি বুথ থাকবে। প্রয়োজন অনুযায়ী এই সংখ্যার তারতম্য হতে পারে।

ডাকসু নির্বাচনের একাধিক রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যেসব হলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি সেখানে বেশি বুথ বসবে এবং যেখানে কম সেখানে কম বুথ বসবে।

নির্বাচন বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,  ‘একজন ভোটারকে ডাকসু ও হল মিলিয়ে ৩৮টি ভোট দিতে হবে। যেহেতু হলের সংখ্যা বেড়েছে, বুথের সংখ্যা বেড়েছে– আমার মনে হয় ছয় ঘণ্টায় সম্ভব। এটা খুব বড় সমস্যা হবে না। কিন্তু পরিবেশ ঠিক থাকতে হবে এবং স্বাভাবিক গতিতেই ভোটারদের ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকতে হবে।’

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভোটগ্রহণ এই সময়ের মধ্যে সম্ভব কিনা সেটা নির্ভর করে বুথ স্থাপনের ওপর। ভোট দেওয়ার বিষয়টি কতটা জটিল তার ওপরও নির্ভর করে। তারা যদি বেশিসংখ্যক ভোট বুথ স্থাপন করে এবং প্রক্রিয়াটি কম জটিল হয়, প্রার্থীদের বিষয়ে যদি ভোটাররা জানেন তাহলে সহজে হতে পারে। তবে আমার মনে হয় সময় বাড়িয়ে দিলেই ভালো করতো। ৮ ঘণ্টা করে দেওয়াই বাঞ্ছনীয় ছিল। তবে তারা যদি বুথের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয় তাহলে হয়তো সম্ভব হবে।’

হিসাব করে দেখা গেছে, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে ভোটার সংখ্যা এক হাজার ৯৮১ জন। সেখানে বসবে ৩০টি বুথ। ভোট কক্ষে প্রবেশ করে, তালিকা থেকে নিজের নাম নিশ্চিত করার পর ব্যালট পেপার নিয়ে ৩৮টি  ক্রস চিহ্ন দিতে যদি প্রতিজনের ন্যূনতম সময় ৩ মিনিট ধরা হয়, তাহলে ৩০টি বুথে ৩০ জন ভোট দিতে ৩ মিনিট সময় ব্যয় হবে। সেই হিসাবে ১৯৮ মিনিটে ( সাড়ে ৩ ঘণ্টা) হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের এক হাজার ৯৮১ জন ভোটারের ভোট দেওয়া সম্ভব।   

আবার যদি ন্যূনতম ভোট প্রদানের সম্ভাব্য সময় ৪ মিনিট ধরা হয়, তাহলে ৩০টি বুথে ৩০ জনের ভোট দিতে সময় ব্যয় হবে ৪ মিনিট। সেই হিসাবে ২৬৪ মিনিটে ( চার ঘণ্টা ৪০ মিনিট) হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের এক হাজার ৯৮১ জন ভোটারের ভোট দেওয়া সম্ভব।  

অন্যদিকে বেগম রোকেয়া হলে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ হাজার ৬০৮। সেখানে বসবে ৫০টি বুথ। একজন ভোটার ভোট কক্ষে প্রবেশ করে তালিকা থেকে নিজের নাম নিশ্চিত করার পর ব্যালট পেপার নিয়ে ৩৮টি ক্রস চিহ্ন দিতে যদি ন্যূনতম সময় ৩ মিনিট ধরা হয়, তাহলে ৫০টি বুথে ৫০ জন ভোট দিতে ৩ মিনিট সময় ব্যয় হবে। সেই হিসাবে ২৭৬ মিনিটে ( ৪ ঘণ্টা ৬  মিনিট) বেগম রোকেয়া হলের ৪ হাজার ৬০৮ জন ভোটারের ভোট দেওয়া সম্ভব।

আবার যদি ন্যূনতম ভোট প্রদানের সম্ভাব্য সময় ৪ মিনিট ধরা হয়, তাহলে ৫০টি বুথে ৫০ জন ভোট দিতে সময় ব্যয় হবে ৪ মিনিট। সেই হিসাবে ৩৬৮ মিনিটে ( ৬ ঘণ্টার চেয়ে ৮ মিনিট বেশি) বেগম রোকেয়া হলের ৪ হাজার ৬০৮ জন ভোটারের ভোট দেওয়া সম্ভব।  

এদিকে রবিবার (১০ মার্চ) বিকালে ভোট গ্রহণের সময় বাড়ানো, ছাত্রলীগ ব্যতিত অন্য সব প্রগতিশীল জোট ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এক স্মারকলিপিতে জানান, প্রভোস্ট কমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুপুর ২টার মধ্যে হলে প্রবেশকারী সব শিক্ষার্থীর ভোট গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া থাকলেও কিছু হল কর্তৃপক্ষ দুপুর ২টার মধ্যে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রেখে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেছে। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চললে, ৪২ হাজার ৯২৩ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১৮ হলে ৫০৮টি বুথ স্থাপন করা হলে, প্রতি ভোটার ৩৮টি ভোট প্রদানের জন্য ৪ মিনিটের মতো সময় পাবে। সেক্ষেত্রে ভোট গ্রহণের সময় আরও বৃদ্ধি করা নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশের উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় বলে মনে করছেন তারা।

 

 

/এসও/এমএএ/
সম্পর্কিত
প্রতি শ্রেণিতে ৫৫ শিক্ষার্থী ভর্তির নির্দেশ প্রতিমন্ত্রীর
সিনিয়র শিক্ষককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি জুনিয়র শিক্ষকের
এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় বেড়েছে
সর্বশেষ খবর
আগুন নেভাতে 'দেরি করে আসায়' ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে 'দেরি করে আসায়' ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা