X
মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫
২৩ বৈশাখ ১৪৩২
মানবতাবিরোধী অপরাধ

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আজহারুল ও কায়সারের আপিল শুনানি বুধবার

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৯ এপ্রিল ২০১৯, ২০:১৭আপডেট : ০৯ এপ্রিল ২০১৯, ২০:১৭

মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম ও জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতা সাবেক কৃষি প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের আপিল আবেদন বুধবার (১০ এপ্রিল) শুনানির জন্য কার্যতালিকায় রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) ওই দুইটি আবেদন আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় যথাক্রমে ১ ও ২ নম্বরে রাখা হয়। বুধবার (১০ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চে আসামিদের আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে সর্বশেষ ২০১৬ সালের ৮ মার্চ মীর কাসেম আলীর আপিলের রায় ঘোষণার পর ২০১৭ সালের ১২ আগস্ট থেকে আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আজহারুল ও কায়সারের আবেদন দুটি শুনানির জন্য ওঠে। তবে কার্যতালিকার অনেক পেছনে থাকায় আবেদন দুটির ওপর শুনানি সম্ভব হয়নি।

এটিএম আজহারুল ইসলাম
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম খালাস চেয়ে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। আপিলে তার খালাসের পক্ষে যুক্তি রয়েছে প্রায় ১১৩টি। ২০১৫ সালের ২৯ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিন এই আপিল দায়ের করেন। আজহারুল ইসলামের মূল আপিল আবেদনে ৯০ পৃষ্ঠার সঙ্গে ১১৩টি গ্রাউন্ডসহ মোট দুই হাজার ৩৪০ পৃষ্ঠার আবেদন জমা দেওয়া হয়।

আপিল দায়েরের পর তার আইনজীবী শিশির মুহাম্মদ মনির সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আপিলে আমরা প্রত্যেকটি অভিযোগ চ্যালেঞ্জ করেছি, তিনি কোনও অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এ মামলায় সাক্ষীদের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য এটিএম আজহারুল ইসলামকে নির্দোষ প্রমাণ করে।

তিনি বলেন, ২৬ নম্বর সাক্ষীর জবানবন্দী অনুযায়ী এটিএম আজাহারের বিরুদ্ধে আনা হত্যা, গণহত্যার অভিযোগগুলো প্রমাণ করতে প্রসিকিউশনের আইনজীবীরা সম্পূর্ণ ব্যর্থ। প্রসিকিউশনের ৪ ও ২৫ নম্বর সাক্ষীর জবানবন্দী অনুযায়ী ডকুমেন্ট তৈরি করে তারা (প্রসিকিউশন) নিজেদের মতো করে মামলা সাজিয়েছে।

২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর তৎকালীন চেয়ারম্যান বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে রায় দিয়েছিলেন।

এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগসহ ছয়টি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়। ২, ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগে মৃদ্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। ৫ নম্বর অভিযোগে ২৫ বছর জেল ও ৬ নম্বর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে ৫ বছরের জেল দেওয়া হয়। ১ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে রায়ে বলা হয়।

সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার
জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতা সাবেক কৃষি প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার খালাস চেয়ে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। আপিলে ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিলের পাশাপাশি তাকে বেকসুর খালাস দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আপিল করা হয়। সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের পক্ষে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিন এই আপিল করেছেন। এ মামলার শুনানি করবেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।

আপিলে খালাসের আরজিতে ৫৬টি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। ৫০ পৃষ্ঠার মূল আপিলের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নথি সংযুক্ত রয়েছে।

২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আদালত কায়সারকে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে রায় দেন।

তার বিরুদ্ধে গণহত্যার একটি, হত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনের ১৩টি ও ধর্ষণের দুটিসহ মোট ১৬টি অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে ১৪টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে ৩, ৫, ৬, ৮, ১০, ১২ ও ১৬ নম্বর অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া ১, ৯, ১৩ ও ১৪ নম্বর অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও ২ নম্বর অভিযোগে ১০ বছর, ৭ নম্বরে সাত বছর ও ১১ নম্বর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ৪ ও ১৫ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ অভিযোগগুলোতে কোনও সাজা তাকে দেওয়া হয়নি।

প্রসঙ্গত, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এখন পর্যন্ত আপিল বিভাগে সাতটি আপিলের রায় ঘোষণার পর রিভিউ আবেদনের নিষ্পত্তি হয়েছে। প্রথমে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার রিভিউ-সংক্রান্ত আবেদনের নিষ্পত্তি হয়। এরপর মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও মীর কাসেম আলীর পর ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রিভিউ আবেদনেরও নিষ্পত্তি করেন আপিল বিভাগ।

/বিআই/টিটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘বাবার সাইকেল’ নিয়ে আসছেন নাহিদ হাসান
‘বাবার সাইকেল’ নিয়ে আসছেন নাহিদ হাসান
৩০ পেরোনোর পর বলিরেখা আটকাতে এই ৫ টিপস মেনে চলা জরুরি
৩০ পেরোনোর পর বলিরেখা আটকাতে এই ৫ টিপস মেনে চলা জরুরি
তেজগাঁওয়ে ভবনের ছাদ থেকে পড়ে কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
তেজগাঁওয়ে ভবনের ছাদ থেকে পড়ে কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
১৫ মের পর দ্বিতীয় পর্যায়ে আলোচনা শুরু করবে ঐকমত্য কমিশন
১৫ মের পর দ্বিতীয় পর্যায়ে আলোচনা শুরু করবে ঐকমত্য কমিশন
সর্বাধিক পঠিত
চেম্বার থেকে নারী চিকিৎসককে টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় এনে মারধর
চেম্বার থেকে নারী চিকিৎসককে টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় এনে মারধর
এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদের চাপে আওয়ামীপন্থি ৬ প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল
এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদের চাপে আওয়ামীপন্থি ৬ প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল
বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে মাংস আমদানি চাপ আসছে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে মাংস আমদানি চাপ আসছে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
স্বাস্থ্য ক্যাডার পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিস করার সুপারিশ
স্বাস্থ্য ক্যাডার পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিস করার সুপারিশ
স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে মন্ত্রণালয়ের আর্থিক অনিয়মের চিত্র
স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে মন্ত্রণালয়ের আর্থিক অনিয়মের চিত্র