X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন ধর্মীয় বহুত্ববাদ’

ঢাবি প্রতিনিধি
২৩ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:২০আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:২৩

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সেমিনারে ড. আকবর আলী খানের সঙ্গে অন্যরা

ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ গঠনের জন্য আগে ধর্মীয় বহুত্ববাদ প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ড. আকবর আলি খান। তিনি বলেন,‘ধর্মীয় বহুত্ববাদ বিষয়টি অনেক কারণে আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম কথা হলো, বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করে। আমরা দেশে ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এর জন্য সবার আগে প্রয়োজন বহুত্ববাদ।’

সোমবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘ধর্মীয় বহুত্ববাদ: প্রাক-ঔপনিবেশিক বাংলায়’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এটি ছিল জ্ঞানতাপস আবদুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘গুণিজন বক্তৃতামালা’র দ্বিতীয় পর্বের প্রথম বক্তৃতা।

আকবর আলী খান বলেন, ‘বহুত্ববাদ আমাদের শিক্ষা দেয় যে, আমরা যে মতবাদে বিশ্বাস করি, সেই মতবাদে সবাই বিশ্বাস করে না। আমাদের সমাজে অনেক লোক আছে, যারা আমাদের মতের সঙ্গে একমত নয়। এ ক্ষেত্রে আমাদের তাদের সহ্য করতে হবে। তারাও আমাদের সহ্য করবে। অর্থাৎ পরস্পর সহনশীল হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বহুত্ববাদ শুধু ধর্মনিরপেক্ষতার জন্যই প্রয়োজন নয়, এটি কিন্তু গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি। গণতান্ত্রিক সমাজ যদি গড়ে তুলতে হয়, তাহলে বিরোধী মনোভাবকে অবশ্যই সহ্য করতে হবে এবং এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই দেশ শাসন করতে হবে। বাংলাদেশে বর্তমানে যে রাজনৈতিক এবং সামাজিক সংকট বিরাজ করছে, তার সমাধান প্রসঙ্গে বহুত্ববাদ অত্যন্তগুরুত্বপূর্ণ।’

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘অনেক সময় ইতিহাসের অপব্যাখ্যা করা হয়ে থাকে। ইতিহাসের যে অপব্যাখ্যা এটা অত্যন্ত ব্যাপক এবং আজকের বাংলাদেশের একটা বড় সমস্যা।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমানে শুধু বাংলাদেশ নয় বরং সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াতেই একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, অতীতকে সাক্ষ্য হিসেবে উপস্থাপনের প্রচেষ্টা চলছে, বিভিন্ন ধ্যান-ধারণা প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে। রাজনৈতিক প্রচারণার জন্য বর্তমানের ধ্যান-ধারণা অতীতের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’

সেমিনারে ‘ধর্মীয় বহুত্ববাদ: প্রাক-ঔপনিবেশিক বাংলায়’ শীর্ষক বক্তৃতা পাঠ করেন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির ফেলো ড. আবদুল মমিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে সহিষ্ণুতা, সহাবস্থান ও সমন্বয় বাংলার ধর্মীয়-সামাজিক সংস্কৃতির মূখ্য উপাদান। আগত সব ধর্মকেই বাংলা নিজের আর্য-পূর্বমানসিকতা দিয়ে সিক্ত করেছিল। আর সেই মানসিকতায় প্রাধান্য লাভ করেছিল মানবতা, উদারতা ও সাম্য ভাবনা।

স্বাগত বক্তৃতা করেন— জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. আহরার আহমদ। গুণিজন বক্তৃতায় এর আগে বক্তৃতা করেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান, বদরুদ্দীন উমর, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ড. রওনক জাহান, কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক প্রমুখ।


/আইএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
পণ্ড হলো না পরাগের শ্রম, দিল্লিকে হারালো রাজস্থান
পণ্ড হলো না পরাগের শ্রম, দিল্লিকে হারালো রাজস্থান
বাসের পেছনের অংশ খোয়া যাচ্ছে কেন?
বাসের পেছনের অংশ খোয়া যাচ্ছে কেন?
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
মন্ত্রীর অপেক্ষায় তরমুজ বিক্রিতে দেরি, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা
মন্ত্রীর অপেক্ষায় তরমুজ বিক্রিতে দেরি, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা