X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নাগরিক সমাজের ৫ কর্মসূচি

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৫ মে ২০১৯, ১৮:২৭আপডেট : ২৫ মে ২০১৯, ১৮:৩৩





ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নাগরিক সমাজের ৫ কর্মসূচি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শাস্তি নিশ্চিত করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাসহ ১১ দফা দাবিতে ঐক্যবদ্ধভাবে ৫টি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ‘নাগরিক নিরাপত্তা জোট’। এই জোটে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), ‘নিজেরা করি’সহ কয়েকটি সংগঠনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরাসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা আছেন।
শনিবার (২৫ মে) রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১১ দফা দাবি পূরণে দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও মানববন্ধন, প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে সমন্বয় ও যৌথভাবে প্রতিবাদ, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা এবং তরুণ জনগোষ্ঠীকে মানবাধিকার রক্ষায় ও জঙ্গিবাদ দমনে সম্পৃক্ত করতে কর্মসূচি পালন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন বলেন, ‘রাষ্ট্র ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক থাকা দরকার। কিন্তু সেটা তো দেখা যাচ্ছে না।’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না সরকার, আদালতের নির্দেশনাও মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু তা হচ্ছে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে মুক্তচিন্তা ও বাকস্বাধীনতা ব্যাহত হচ্ছে। মানুষ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না।’ কোনও জবাবদিহি নেই অভিযোগ করে তিনি দলীয়করণ বন্ধ করে সব প্রতিষ্ঠান ঢেলে সাজানোর দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির বলেন, ‘সারাদেশে ভীতির সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়েছে। গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে সবাই মিলে সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ করতে হবে। সবাই মিলে কর্মসূচি নিতে হবে।’
নাগরিক নিরাপত্তা জোটের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘গত ৪ মাসে নারী ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৩৫৪টি। অন্যদিকে ২৩৪টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে, হত্যার শিকার হয়েছে ১৪৩টি শিশু এবং ১৭১টি শিশু নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে।’
এই মানবাধিকারকর্মী বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে উচ্চ আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশনা সত্ত্বেও তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না এবং এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কোনও তদারকি নেই। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা সরকারকে উল্লিখিত বিষয়ে আইন প্রণয়নের জন্য বলা হলেও আজ এত বছর পরে এ নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আমরা কোনও উদ্যোগ লক্ষ্য করছি না।’
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় এখন নিত্যনৈমিত্তিক এবং পদ্ধতিগত মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিবহন খাতে সরকার দলীয় লোকদের প্রভাবের কারণেই এ খাতে কোনও শৃঙ্খলা ফিরে আসছে না এবং কোনও কার্যকর উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।’
সংবাদ সম্মেলনে দাবি জানানো হয়, রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দ্বারা যেকোনও মানবাধিকার লঙ্ঘনের (যেমন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, হেফাজতে নির্যাতন, দায়িত্বে অবহেলা ইত্যাদি) অভিযোগ উঠলে তা দ্রুততার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত এবং সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শাস্তি প্রদান করতে হবে। রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে আটক বা গ্রেফতারের ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা সম্পূর্ণভাবে মেনে চলার নির্দেশ দিতে হবে। গণমাধ্যম ও নাগরিকদের মতপ্রকাশের অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অংশীদারদের মতামতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনতে হবে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিজ বিশ্বাস ও রীতি চর্চার অধিকার এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া দুদক ও নির্বাচন কমিশনসহ সব কমিশনকে শক্তিশালী করার দাবিও জানায় ‘নাগরিক নিরাপত্তা জোট’।
মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির বলেন, ‘দেশের একটি উদ্বেগজনক ঘটনা হচ্ছে সংখ্যালঘুদের ওপর আত্যাচার, হামলা, বাড়িতে আগুন দেওয়া। যেকোনও মূল্যে এ ধরনের ঘটনা দমন করতে হবে। সারাদেশে ভীতির সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়েছে। দেশে গণতন্ত্র বিলীন হতে চলেছে। গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে সবাইকে মিলে সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ করতে হবে। সবাই মিলে কর্মসূচি নিতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ টি এম শামসুল হুদা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, জিয়াউদ্দিন তারিক আলীসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। 

/এইচএন/এসটিএস/এইচআই/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ওসির বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে কাজের অভিযোগ
ওসির বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে কাজের অভিযোগ
মেলায় জাদু খেলার নামে ‘অশ্লীল নৃত্য’, নারীসহ ৫ জন কারাগারে
মেলায় জাদু খেলার নামে ‘অশ্লীল নৃত্য’, নারীসহ ৫ জন কারাগারে
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা