X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভাগ্নেকে ফেরত চান সোহেল তাজ, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৭ জুন ২০১৯, ২০:৩৩আপডেট : ১৭ জুন ২০১৯, ২১:১৮

সংবাদ সম্মেলনে অপহৃত সৌরভকে উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করলেন তার মা সৈয়দা ইয়াসমিন আরজুমান। তার পাশে বসা সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ ও সৌরভের বাবা। অপহরণের শিকার সৈয়দ ইফতেখার আলম সৌরভকে ফেরত দেওয়ার দাবি করেছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ। আর ছেলেকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সৌরভের মা সৈয়দা ইয়াসমিন আরজুমান।

সোমবার (১৭ জুন) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর রুনি হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে সৌরভের মা অভিযোগ করে বলেন, বেঙ্গল বিউটি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে দেশে বিদেশে সুনাম অর্জন করে তার ছেলে সৌরভ। এই চলচ্চিত্রের পরিচালকও ছিল সে। সেই সময় একটি মেয়ের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরি হয়। সৌরভ তখন চট্টগ্রামে থাকতো। পরবর্তীতে মেয়েটি তাকে বিয়ে করার চাপ দেয়। বিষয়টি মেয়ের বাবা জানতে পেরে তাকে অন্যখানে বিয়ে দেয়। তবে কয়েক মাসের মধ্যে ২০১৮-এর এপ্রিল বা মে মাসে সেই বিয়ে ভেঙে যায়। এ বিয়ে ভাঙার জন্য সৌরভকে দায়ী করে মেয়ের বাবা। এজন্য তিনি সৌরভসহ আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দেন।

সৌরভের মা আরও জানান, এরই জের হিসেবে ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি আমার ছেলেকে উত্তরার র‌্যাব হেড কোয়ার্টারে ডেকে নিয়ে গিয়ে প্রথমে তাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে মেয়েটির সঙ্গে যোগাযোগ না রাখার কথা বলে এবং তার মোবাইল ফোন পরীক্ষা করে। তবে সৌরভের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনও প্রমাণ তারা পাননি বলে দাবি করেন তিনি। তবে মেয়েটির সঙ্গে কোনও যোগাযোগ না রাখার নির্দেশ দেন র‌্যাব কর্মকর্তারা।

অপহৃত সৌরভ সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, গত ১১ ফেব্রুয়ারি বনানী থানার ওসি সৌরভকে ফোন করে আসতে বলেন। পরের দিন (১২ ফেব্রুয়ারি) সে থানায় গেলে ওসি তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন এবং তাকে বিভিন্ন অশ্লীলতায় জড়িয়ে থানায় মামলা করে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। শুধু তা-ই নয়, মেয়েটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন না করলে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। এর এক সপ্তাহ না যেতেই সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সৌরভের কর্মস্থল ব্র্যাক সেন্টারে উপস্থিত হয়। এ সময় আমার ছেলে সেখানে উপস্থিত না থাকায় তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে তাদের মোবাইল নম্বর দিয়ে দ্রুত যোগাযোগ করতে বলে। পরে সৌরভের বাবা এবং সৌরভ ওই কর্মকর্তাদের সঙ্গে বনানী স্টার কাবাবে দেখা করে। ওই দুই কর্মকর্তা জানান, তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে তারা একটি অভিযোগ তদন্ত করছে। সে পরিপ্রেক্ষিতে আমার ছেলে কোন কোন দেশে ভ্রমণ করেছে, কবে গিয়েছে এসব নানা বিষয়ে তারা জিজ্ঞাসাবাদ করে। এর উত্তরে সৌরভ জানায়, সে মাত্র দুইবার কলকাতায় গিয়েছে এবং তারা বিস্মিত হয়ে প্রমাণ হিসেবে পাসপোর্টের ফটোকপি সংগ্রহ করে। যাওয়ার সময় তারা বলে যায়, ‘আমরা বুঝতে পেরেছি এটা একটা সাজানো নাটক। আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টা জানাবো।’

তিনি আরও বলেন, এরপর ১৬ মে আমাদের পারিবারিক বন্ধুর বাসা থেকে সৌরভকে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার পরিচয় দিয়ে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। যাওয়ার সময় সিসিটিভির ফুটেজসহ হার্ডডিস্ক নিয়ে যায় তারা। তবে একইদিন গভীর রাতে আবার ফেরত দিয়ে যায়। সৌরভের কাছে জানতে চাইলে সে বলে একটি অজ্ঞাত স্থানে চোখ বাঁধা অবস্থায় হ্যান্ডকাফ পরিয়ে দীর্ঘ ১৫-১৬ ঘণ্টা বন্দি করে রাখার পর সম্ভবত দুপুর দুইটার দিকে ৮-১০ জন লোক তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়বস্তুর একাংশ ছিল সেই মেয়ে সংক্রান্ত। সৌরভ তাকে জানিয়েছে, সে সময় তারাই উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়ার অভিযোগ আনা হলেও অনুসন্ধানে এর সত্যতা পায়নি তারা।

তিনি জানান, এরপর সৌরভকে বাসায় ফেরত দিয়ে একটি প্রাপ্তি স্বীকারপত্রে অক্ষত অবস্থায় ফেরত পাওয়ার স্বীকারোক্তি নিয়ে যায় র‌্যাব। এরপর ৮ জুন দুপুরে সৌরভের কাছে র‌্যাবের একটি ফোন আসে এবং সৌরভকে বলে চাকরি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় পাসপোর্ট, সার্টিফিকেট ও জীবনবৃত্তান্ত রেডি রাখতে, তারা আবার সৌরভকে সময়মতো ফোন দিয়ে কাগজ সংগ্রহ করে নেবে। ৯ জুন দুপুর তিনটার সময় র‌্যাব সদস্যরা সৌরভের সঙ্গে আবারও যোগাযোগ করে এবং প্রয়োজনীয় কাগজ ও পাসপোর্টসহ চট্টগ্রাম মিমি সুপার মার্কেটে সন্ধ্যা ৭টায় উপস্থিত হতে বলেন। চাকরির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে গিয়ে ছেলে আমার কাছে আর ফিরে আসেনি এবং তার মোবাইল ফোনও বন্ধ। আমরা মনে করেছি আমাদের ছেলে রাতের মধ্যে ফিরে আসবে। কিন্তু বাসায় না আসায় আমরা বিভিন্ন জায়গায় ছেলের খোঁজ করি এবং না পেয়ে পরের দিন সকালে থানায় জিডি করি।

এ ঘটনার সমাধানে কান্নাভেজা কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

এ সময় সোহেল তাজ বলেন, আমাদের আজকের সংবাদ সম্মেলনের মূল বিষয় হলো সৌরভকে জীবিত অক্ষত অবস্থায় ফেরত পাওয়া। আমি এই বিষয়টি নিয়ে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের আইজির সঙ্গে কথা বলেছি। আমি আশা করবো আইনবহির্ভূত এবং ক্ষমতার অপব্যবহার যদি কেউ করে থাকে এতে আমি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

সংবাদ সম্মেলনে সৌরভের বাবা ইদ্রিস আলম উপস্থিত ছিলেন।

/এসও/টিএন/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজের পাঠদানও বন্ধ
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজের পাঠদানও বন্ধ
রুশ বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইউক্রেনের হামলা, ৫০টি ড্রোন ভূপাতিতের দাবি মস্কোর
রুশ বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইউক্রেনের হামলা, ৫০টি ড্রোন ভূপাতিতের দাবি মস্কোর
বিয়েবাড়ির খাসির মাংস খেয়ে ১৬ জন হাসপাতালে
বিয়েবাড়ির খাসির মাংস খেয়ে ১৬ জন হাসপাতালে
সরকারি প্রতিষ্ঠানে একাধিক পদে চাকরি
সরকারি প্রতিষ্ঠানে একাধিক পদে চাকরি
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় ছুটি ঘোষণা
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় ছুটি ঘোষণা
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি