X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

আজিমপুরে মসজিদের খাদেম হত্যার নেপথ্যে কী?

রাফসান জানি
০৫ জুলাই ২০১৯, ০০:৩৫আপডেট : ০৫ জুলাই ২০১৯, ০০:৩৫

নিহত আবু হানিফ

রাজধানীর আজিমপুরে মেয়র হানিফ জামে মসজিদের খাদেম আবু হানিফ হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন আরেক খাদেম সাইফুল ইসলাম। আবু হানিফের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার হয়েছে বুধবার (৩ জুলাই) দিবাগত রাতে। লাশ উদ্ধারের একদিন আগেই মসজিদ কমপ্লেক্স থেকে পালিয়ে যান সাইফুল। ধারণা করা হচ্ছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টার মধ্যে কোনও এক সময়ে তাকে হত্যা করে বস্তাবন্দি করা হয়।

এই ঘটনায় নিহতের শ্বশুর বাদী হয়ে লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এরপর মসজিদের আবু হানিফের সঙ্গে থাকা তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। তারা হলেন- মসজিদের মোয়াজ্জেম হাফেজ এরশাদ, ক্লিনার বাহাউদ্দিন ও নিউ মার্কেটের একটি মসজিদের খাদেম আব্দুস সালাম। তিনি আজিমপুরে মেয়র হানিফ জামে মসজিদের পলাতক খাদেশ সাইফুলের সঙ্গে দেখা করার জন্য মাঝে মাঝে আসতেন। ঘটনার দিনও সালাম মসজিদের এসেছিলেন সাইফুলের সঙ্গে দেখা করার জন্য।

এদিকে, লাশ উদ্ধারের আগের দিন রাতে সাইফুলের কাছে মসজিদের অন্যান্যরা আবু হানিফের খোঁজ জানতে চাইলে তিনি জানান- বাইরে গেছেন, কিছুক্ষণ পর চলে আসবেন। রাত ১০টার দিকে আবারও খোঁজ করলে সাইফুল জানান- আমাকে বলে গেছেন, চলে আসবে। এদিকে যে প্লাস্টিকের বস্তায় আবু হানিফের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, একই ধরনের একটি বস্তা সাইফুলের হাতে দেখেছে বলেও জানিয়েছে মসজিদের আরেক খাদেম।

মসজিদের লোকজন কয়েক দফায় আবু হানিফ সম্পর্কে জানতে চাইলে কিছুটা চাপে পড়েন সাইফুল। মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে হঠাৎ ব্যাগ গুছিয়ে মসজিদ কমপ্লেক্স থেকে বের হয়ে যান তিনি। কারণ হিসেবে বাবা মারা গেছেন বলে জানিয়ে যান তিনি।

মসজিদের দায়িত্বশীল ব্যক্তি ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক তিনজনের বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন লালবাগ থানা পুলিশের ঊর্ধ্বতনরা। তবে কী কারণে আবু হানিফকে হত্যা করা হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট কোনও কারণ জানতে পারেননি তারা।

ডিএমপি লালবাগ জোনের সহকারী কমিশনার মো. সালাউদ্দিন বলেন, ‘ঘটনার আগে পরে পলাতক সাইফুলের আচরণ যথেষ্ট সন্দেহজনক। তাকে গ্রেফতারে আমাদের অভিযান চলছে। সাইফুল গ্রেফতার করা গেলে সব তথ্য বেরিয়ে আসবে।’

জানা গেছে, পলাতক সাইফুলের বাড়ি ফেনীতে।

আবু হানিফ হত্যার ব্যাপারে জানা যায়, ২ জুলাই রাতে মসজিদে ফেরেননি নিহত খাদেম আবু হানিফ। তিনি মসজিদে না ফেরায়, অন্যরা খুঁজে ও ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায় বলে পুলিশকে জানিয়েছেন মসজিদে আবু হানিফের সঙ্গে থাকা অন্য ব্যক্তিরা।

পরদিন, ৩ জুলাই রাতে মসজিদ কমপ্লেক্সের পাশের একটি ভবনের দোতলায় গন্ধ পান বাসিন্দারা। গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে বের হয় আবু হানিফের বস্তাবন্দি লাশ। দোতলায় বারান্দার এক পাশে প্লাস্টিকের একটি বস্তার মধ্যে লাশটি পাওয়া যায়। রাত ১টার দিকে লাশটি উদ্ধার করে মিডফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

সুরতহালের বরাত দিয়ে লালবাগ থানা পুলিশের সদস্যরা জানান, নিহত আবু হানিফের পেট-পিঠ, ঘাড়ে দশটির বেশি ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ছুরি জাতীয় কোনও ধাতব বস্তু দিয়ে আবু হানিফকে হত্যা করা হয়েছে।  

বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের পর থেকে আরেক খাদেম সাইফুলকে গ্রেফতারে একাধিক জায়গায় অভিযান পরিচালনা করেছে লালবাগ থানা পুলিশ। তাকে গ্রেফতারে সর্বশেষ চট্টগ্রামে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) কে এম আশরাফ উদ্দিন। তিনি বলেন, আমরা সাইফুলকে খুঁজে বের করাসহ অন্যান্য বিষয়গুলো সামনে রেখে তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে বলা যাবে, কেন আবু হানিফকে হত্যা করা হয়েছে।

 

 

/আরজে/এএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আগুন নেভাতে 'দেরি করে আসায়' ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে 'দেরি করে আসায়' ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা