গর্ভপাতের চেষ্টাসহ মারধরের অভিযোগে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমসহ দু’জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পায়নি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গত ১৭ জুলাই মামলার অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পায়নি বলে প্রতিবেদন জমা দেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দিলদার আহমেদ সেলিম এবং আপন রিয়েল এস্টেটের পরামর্শক ও তত্ত্বাবধায়ক মো. মোখলেসুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।
গত ১১ মার্চ এ আদালতে দিদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদের বউ ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা মামলাটি দায়ের করেন। রবিবার (২৮ জুলাই) মামলাটির প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু মামলার বাদী অসুস্থতার কারণে আদালতে হাজির না থাকায় তার আইনজীবী মোহাম্মদ উল্লাহ সময় চেয়ে আবেদন করেন। এরপর ঢাকা মহানগর হাকিম মো. তোফাজ্জল হোসেন আবেদন মঞ্জুর করে ৭ আগস্ট প্রতিবেদনের বিষয়ে বাদীর কোনও আপত্তি আছে কিনা সে বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, গত ২০১৫ সালের দিলদার হোসেনের ছেলে সাফাত আহমেদের সঙ্গে বিয়ে হয় ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরের গুলশান-২ এর বাসায় থাকতেন তিনি। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই দিলদার শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন তাকে এবং তাকে তালাক দেওয়ার জন্য স্বামীকে (সাফাত) চাপ দেওয়া হয়।
আদালতে বাদী তার জবানবন্দিতে বলেন, ‘আমি দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আমার শ্বশুরসহ অপর আসামিরা আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে বিভিন্নভাবে চাপ দেয়। গত ৫ মার্চ আমার শ্বশুর ও অপর আসামি পিস্তল ঠেকিয়ে মারধর করে বাসা থেকে বের করে দেয় এবং আমার গাড়িটিও নেয়। পরে পুলিশ আমার গাড়ি উদ্ধার করে। এই ঘটনায় আমি গুলশান থানায় একটি জিডি করি। আমি আসামিদের বিচার চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ৩১ নভেম্বর আমার স্বামী অন্য এক মামলায় জামিনে বের হওয়ার পর আমি অন্তঃসত্ত্বা হই। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আদালত আমার স্বামীর (সাফাত) জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠায়। এরপর আসামিরা বিভিন্নভাবে গর্ভে থাকা তার সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। গত ৫ মার্চ স্বামীর জন্য কিছু কেনাকাটা করার জন্য বাসা থেকে বের হই। কেনাকাটা শেষে বাসায় ঢুকলে আসামিরা আমাকে গালিগালাজসহ মারধর করে বাসা থেকে বের করে দেয়। সঙ্গে থাকা দুই লাখ টাকা, পাঁচ ভরি সোনার নেকলেস, দু’টি চুড়িসহ আনুমানিক ৮ লাখ টাকা মূল্যের জিনিস জোর করে নিয়ে যায়।’
উল্লেখ্য, বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনার মামলায় বাদীর স্বামী সাফায়াত আহমেদ প্রধান আসামি। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।