X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের দুই বছর: সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ সরকারের

জামাল উদ্দিন
০১ আগস্ট ২০১৯, ২১:৩৩আপডেট : ০১ আগস্ট ২০১৯, ২১:৩৫



অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের দুই বছর: সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ সরকারের জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিতে অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সম্প্রতি জঙ্গিবিরোধী কয়েকটি অভিযান চালালেও বিগত দুই বছরে এই ইউনিটের কার্যক্রমে তেমন একটা গতি পায়নি। তবে, এই সংস্থা পরিচালনের বিধিমালার অনুমোদন হয়ে গেলে এর কার্যক্রমে গতি পাবে। তখন জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ দমনের জাতীয় সংস্থা হিসেবে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট তাদের কাজ সারাদেশে পুরোদমে চালাতে পারবে বলেও জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সন্ত্রাসবাদ দমনে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট গঠনের জন্য সরকার অনেকদিন আগে থেকে চিন্তা-ভাবনা শুরু করে। এরপর ২০১৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের অনুমোদন দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এরপরও প্রায় দুই বছর পার হয়ে গেছে। কিন্তু পুরোদমে অপারেশনাল কাজ শুরু করতে পারেনি তারা। প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও পায়নি সংস্থাটি। পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে এই ইউনিটের গঠন ও এর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ৫৮১টি পদ সৃষ্টি করা হয়। এরমধ্যে স্থায়ীভাবে ৩১টি ক্যাডার পদ এবং ৫৫০টি পদ অস্থায়ীভাবে সৃষ্টি করা হয়। যানবাহন যুক্ত করা হয় ৪১টি।

ইউনিটের প্রধান হিসেবে একজন অ্যাডিশনাল আইজি, একজন ডিআইজি, দুই জন অতিরিক্ত ডিআইজি, পাঁচজন এসপি, ১০ জন অ্যাডিশনাল এসপি পদায়ন হয়ে গেছে। সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে ১২ জনের মধ্যে কয়েকজনের পদায়ন হয়েছে। ৭৫ জন ইনস্পেক্টর পদায়ন হয়েছে। ১২৫ জন সাব ইনস্পেক্টরের মধ্যে এখনো কিছু বাকি রয়ে গেছে। কনস্টেবলসহ অন্যান্য পদবিতেও কিছু বাকি আছে। ৫৮১ জনবলের মধ্যে পাঁচ শতাধিক নিয়োগ হয়ে গেছে। অন্য পদগুলোতেও নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।

পুলিশ সদর দফতরের একজন ইকুইপমেন্ট শাখার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, অ্যান্টি টেররিজমের কার্যক্রম এখন রাজধানীর বারিধারার বি-ব্লকের ৩৫ নম্বর বাড়ির অস্থায়ী কার্যালয়ে চলছে। স্থায়ীভাবে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের কার্যালয় স্থাপনের জন্য পূর্বাচলের পাশে জমি দেখা হয়েছে। একই জায়গায় পাশাপাশি পুলিশ লাইনও স্থাপন করা হবে। ইউনিটের জন্য যানবাহন ছাড়াও টেকনোলজিক্যাল যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম কেনারও প্রস্তাব রয়েছে।

ইউনিটের মধ্যে এলআইসি (ল’ফুল ইন্টারসেপশন সেল) শাখা হবে। সেটার টেকনিক্যাল সরঞ্জামগুলো কেনার জন্য টেন্ডার করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। পরিচালনার জন্য প্রস্তাবিত বিধিমালাটি আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে।

অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট সূত্র জানায়, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমনে আগে বেশি কাজ করতো র‌্যাব। ২০১৩ সালের পর থেকে টার্গেট কিলিং শুরু করে জঙ্গিরা। ২০১৫ সালের দিকে এর ব্যাপকতা বেড়ে যায়। বৈশ্বিক সমস্যার অংশ হিসেবে বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়ে জঙ্গিবাদ। এরপর ২০১৬ সালের শুরুর দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধীনে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) নামে একটি নতুন ইউনিট গঠন করা হয়। তারা ঢাকাতেই জঙ্গিবিরোধী অভিযান করার বিধান রয়েছে। তবে আইজিপির নির্দেশে ঢাকার বাইরেও তারা অপারেশনে গিয়েছিল। যে কারণে জাতীয়ভাবে কাজ করতে পুলিশের কাঠামোতে ‘অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট’আরেকটি বিভাগ চালুর উদ্যোগ নেয় সরকার।

বিধিমালা অনুমোদিত হলে ডিএমপির ‘সিটিটিসি’ও অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের অধীনে কাজ করবে। এছাড়া, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) থেকে দেশের আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়গুলো মনিটরিং করা হয়। এরইমধ্যে সেই মনিটরিং সেন্টারের তালিকাভুক্ত হয়েছে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট। এছাড়া, জঙ্গি বিষয়ে গোয়েন্দা কার্যক্রম চালাতে ঢাকা থেকেই সাদা পোশাকে দেশের বিভিন্নস্থানে ইউনিটের সদস্যদের পাঠানো হয়।

অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মনিরুজ্জামান দীর্ঘদিন থেকে জঙ্গিবাদ বিষয়ে কাজ করছেন। পুলিশ সদর দফতরের গোপনীয় শাখার এআইজি থাকা অবস্থায় তিনি এলআইসি’রও প্রধান ছিলেন। অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের কার্যক্রমের বিষয়ে জানতে চাইলে মনিরুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘২০১৭ সালে অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের অর্ডার হয়েছে। কাজ শুরু হয়েছে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে। একটা ইউনিট পুরোপুরি কাজ করার সক্ষমতা অর্জন তো সময় লাগে। পাঁচ শতাধিক জনবল পদায়ন হয়েছে। কিছু বাকি আছে। প্রশাসনিক কাজে দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণ চলছে। তারপর ইউনিট পরিচালনায় বিধি অনুমোদনের চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে।

বিধিমালাটি চূড়ান্ত হলে নিজেরা তদন্তসহ সব ধরনের কার্যক্রম করতে পারব। এটা হবে বাংলাদেশে কাউন্টার টেররিজমের ন্যাশনাল ইউনিট। সেজন্য এটাকে কার্যকর করার জন্য সরকার চেষ্টা করছে।

সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সরকারের উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা একটা প্রস্তাবনা দিয়েছি পুলিশ সদর দফতরে। এই ইউনিটের উন্নয়নের জন্য কী কী লাগবে, সরঞ্জাম, প্রশিক্ষণ, অবকাঠামো, বাড়িঘর।’ নতুন কিছু শুরু করতে একটু সময় লাগে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

/এমএনএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
গোপনে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
গোপনে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
টিপু-প্রীতি হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ ২৯ এপ্রিল
টিপু-প্রীতি হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ ২৯ এপ্রিল
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ক্যাসিনো কাণ্ডের ৫ বছর পর আলো দেখছে ইয়ংমেন্স ও ওয়ান্ডারার্স
ক্যাসিনো কাণ্ডের ৫ বছর পর আলো দেখছে ইয়ংমেন্স ও ওয়ান্ডারার্স
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলেন তিন বিচারপতি
আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলেন তিন বিচারপতি