পারিবারিক আইনগুলো ঔপনিবেশিক চিন্তাভাবনা থেকে তৈরি এবং সেগুলো এখন যুগোপযোগী করা জরুরি। তা না হলে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে নানা জটিলতা দেখা যায়। পাশের দেশগুলো এসব আইনে পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নিলেও আমাদের এখানে তা শুরু হয়নি।
রবিবার (৪ আগস্ট) ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে ‘রিভিজিটিং পারসোনাল ল ইন বাংলাদেশ: প্রপোজালস ফর রিফর্ম’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে বক্তারা এসব কথা বলেন। তারা বলেন, নানা সময় পারিবারিক আইনগুলো রাজনৈতিক কারণে পরিবর্তনের কথা তোলা হলেও তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।
সাউথ এশিয়ান ইন্সটিটিউট অব অ্যাডভান্সড লিগ্যাল অ্যাণ্ড হিউম্যান রাইটস স্টাডিজের আয়োজনে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক বিচারপতি, প্রখ্যাত আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মীসহ অনেকে।
বইটির লেখকদের একজন সারা হোসেন বলেন, ‘আমরা নানা সময় পাবিরাবিক আইন নিয়ে কাজ করেছি। মামলা পরিচালনা করতে গিয়েও অনেক প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। সেসব অভিজ্ঞতা থেকে মনে হয়েছে, কথা শুরু করাটা খুব জরুরি। বইটি আমরা বেশ কয়েকজন মিলে লিখেছি। এটি সবারই কাজে আসবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পারিবারিক আইনগুলো উপনিবেশিক চিন্তা ধারণ করে আজও। আমরা কেন যেন পরিবর্তন করতে ভয় পাই। ভারত-পাকিস্তানেও যেসব নিয়ে কাজ হয়েছে, আমরা রাজনেতিক কারণে তা পারিনি। বিচ্ছিন্নভাবে মুসলিম আইন ও হিন্দু আইন নিয়ে কাজ হলেও খ্রিস্টান পারিবারিক আইন নিয়ে কাজ একেবারেই হয়নি। রাজনৈতিক যা কিছুই ঘটুক না কেন, এসব নিয়ে কাজ অব্যাহত রাখতে হবে। আজকের অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে কাজটি শুরু হলো।’
আয়োজক সংস্থার চেয়ারম্যান ড. কামাল হোসেন আশান্বিত হয়ে বলেন, ‘যখন শুরু করেছিলাম কাজ তখন কতটা সাড়া পাবো তা জানা ছিল না কিন্তু আজকের উপস্থিতি বলে দিচ্ছে এটা সম্ভব। যেকোনও রিফর্ম দরকারের জন্যই ভাবা হয়ে থাকে। যতগুলো সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো আছে, সবার মধ্যকার শক্ত বোঝাপড়া থাকা জরুরি।’
আলোচক হিসেবে ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা তার মাঠের যে অভিজ্ঞতা সেসবের কিছু অংশ তুলে ধরে আইনের যে কমতিগুলো আছে সেগুলো উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘এই কাজ একটি দ্বার উন্মোচন করলো। অভিভাবকত্ব নিয়ে, একাধিক ধর্মের বিয়ে নিয়ে আমাদের সমাজে প্রতিনিয়ত নানা কিছু ঘটছে এবং যুগোপযোগী আইন না হওয়ার কারণে ভুক্তভোগীরা সঠিক দিক-নির্দেশনাও পান না। ফলে কথা বলাটা জরুরি।’