X
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে ২০ বছর আগেই দেশ উন্নত হতো: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৬ আগস্ট ২০১৯, ২৩:০৬আপডেট : ২৭ আগস্ট ২০১৯, ০৩:০৫





বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা না করা হলে ২০ বছর আগেই দেশ উন্নত হতো বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। সোমবার (২৬ আগস্ট) শাহবাগে জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি’ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এশিয়ার ৪৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি, ৮ দশমিক ৩। এটি সম্ভব হয়েছে আমরা বঙ্গবন্ধুর পথ ধরে চলি বলে। বঙ্গবন্ধু সরকার কৃষির ক্ষেত্রে অনেক জোর দিয়েছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কৃষি খাতের অবস্থা অনেক খারাপ ছিল। বঙ্গবন্ধু কৃষি বিপ্লব শুরু করতে ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মাফ করে দেন। আমাদের তখন সম্পদ নেই, আয় নেই, রাজস্ব নেই। কৃষি খাতে বঙ্গবন্ধু যখন বিপ্লব ঘটাতে যাচ্ছেন, তখনই ঘাতকরা তাকে হত্যা করে।’



তিনি বলেন, ‘কিন্তু বঙ্গবন্ধুর চেতনা বেঁচে আছে। একটি চেতনা, একটি স্বপ্ন। আর এই স্বপ্ন হচ্ছে বাংলাদেশ। যদি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা না হতো তাহলে দেশ আরও ২০ বছর আগে উন্নত হতো।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, ‘শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির পিতা একদিনেই হননি। বঙ্গবন্ধু হচ্ছেন পৃথিবীর একমাত্র নেতা, যিনি রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রী না হয়ে যা-ই বলতেন, দেশের তৎকালীন সাড়ে ৭ কোটি মানুষ তা-ই শুনতো। শুধুমাত্র ৭ মার্চের ১৯ মিনিটের ভাষণ পর্যালোচনা করলে জানতে পারি তা সর্বকালের সেরা ভাষণ।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ঘাতকরা ভেবেছিল, বঙ্গবন্ধুর নাম বাংলাদেশ থেকে মুছে ফেলবে। ওই ঘাতক খুনি মোশতাক আর জিয়ারা জানতো না মৃত মুজিব আরও বেশি শক্তিশালী।’
বিশেষ অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে আমাদের রাষ্ট্র অস্তিত্বের সংকটে পড়েছিল। এই সংকট থেকে তুলে এনেছেন তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে যে হত্যা করা হয়েছে, এটা সংবিধান সংশোধন করে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। বাংলাদেশকে পাকিস্তানি চিন্তাধারায় পাঠানোর পুরোপুরি চেষ্টা করা হয়েছিল।’
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ইউল্যাবের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সহ-সভাপতি ড. কাজী আনিস আহমেদ সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহিদুল্লাহ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের অর্থনীতির মুক্তির বিষয়ে প্রথম গুরুত্বারোপ করেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরার চেয়ে তিরস্কারই বেশি করা হয়। বঙ্গবন্ধু না থাকলে বাংলাদেশ থেকে ভারতের সামরিক ঘাঁটি সরানো সম্ভব ছিল না। স্বাধীনতার এক বছরের মধ্যে তিনি আমাদের দেশের জন্য একটি সংবিধান প্রণয়ন করেন।’ সেক্যুলারিজমকে যদি সংবিধানে না নিয়ে আসতেন তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা পাকিস্তানের মতো হতে পারতো বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে সংক্ষেপে কিছু বলা কঠিন। আমি যখন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কথা বলি তখন বাংলাদেশের কিংবদন্তি নেতৃত্বে যারা ছিলেন তাদের কথা চলে আসে। বঙ্গবন্ধু তার নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য জাতির স্বার্থকে কখনও বিসর্জন দেননি।’
বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেজবাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা বাঙালি অনেক কিছুই করে থাকি, এই ঘটনাটি বিশ্বের ইতিহাসে মর্মান্তিক। এই ঘটনা একেবারেই নজিরবিহীন। এরপর হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে না, এমন একটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার হয়েছে। তবে কেউ কেউ পলাতক আছে।’ কিন্তু খুনিদের পৃষ্ঠপোষকদের খুঁজে বের করে বিচারের দাবি জানান তিনি। এ জন্য পূর্ণাঙ্গ কমিশন গঠন করার পরামর্শ দেন তিনি।
স্বাগত বক্তব্যে সমিতির সেক্রেটারি বেনজির আহমেদ বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমরা এগিয়ে যাচ্ছিলাম। কুচক্রী দল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনককে সপরিবারে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুকে সরিয়ে দিয়ে তার আদর্শকে স্তব্ধ করতে চেয়েছিল কুচক্রীরা।’ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে যে কেউ হত্যা করবে এটা অকল্পনীয়। যারা মেরেছে তারা পাকিস্তানের প্রেতাত্মা, তারা বাঙালি নয়।’

বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হক চৌধুরী। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহিদুল্লাহ, বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেজবাহউদ্দিন আহমেদ ও জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।

এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সেক্রেটারি বেনজির আহমেদ, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব)-এর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের বিশেষ উপদেষ্টা অধ্যাপক ইমরান রহমান, ইউল্যাবের উপাচার্য প্রফেসর এইচ এম জহিরুল হক, স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আলী নকি, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম লুতফর রহমান প্রমুখ।




অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৫ আগস্ট নিহতদের রুহের মাগফেরাত এবং সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের সুস্থতা কামনায় মোনাজাত করা হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টে নিহত সবার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুর ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।
অনুষ্ঠান শেষে সবার প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ইউল্যাবের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সহ-সভাপতি ড. কাজী আনিস আহমেদ।

/এসও/এসএমএ/এইচআই/এফএএন/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
বাংলাদেশের স্পিন বিভাগে পার্থক্য তৈরি করতে চান মুশতাক
বাংলাদেশের স্পিন বিভাগে পার্থক্য তৈরি করতে চান মুশতাক
‘মুম্বাইয়ের সঙ্গে দীর্ঘ সময় খেললে ব্রেইন ফেটে যাবে’
‘মুম্বাইয়ের সঙ্গে দীর্ঘ সময় খেললে ব্রেইন ফেটে যাবে’
৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুক্রবার: যেসব নির্দেশনা দিলো পিএসসি
৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুক্রবার: যেসব নির্দেশনা দিলো পিএসসি
সর্বাধিক পঠিত
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
মাতারবাড়ি ঘিরে নতুন স্বপ্ন বুনছে বাংলাদেশ
মাতারবাড়ি ঘিরে নতুন স্বপ্ন বুনছে বাংলাদেশ
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!