X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

খসড়া নীতিমালায় দুই বছরের ইন্টার্নশিপ, ক্ষুব্ধ মেডিক্যাল শিক্ষার্থীরা

জাকিয়া আহমেদ
৩১ আগস্ট ২০১৯, ২২:৩৭আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০১৯, ২৩:০১

খসড়া নীতিমালায় দুই বছরের ইন্টার্নশিপ, ক্ষুব্ধ মেডিক্যাল শিক্ষার্থীরা

মেডিক্যাল ও ডেন্টাল শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপের সময়সীমা একবছর থেকে বাড়িয়ে দুই বছর করার ব্যাপারে খসড়া নীতিমালা করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে এই নীতিমালা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের একটা অংশ। তারা বলছেন, এই নীতিমালা বাস্তবায়িত হলে এমবিবিএস ডিগ্রি শেষ করে চিকিৎসক হিসেবে রেজিস্ট্রেশন পেতে একজন শিক্ষার্থীর কমপক্ষে সাত বছর সময় লাগবে। তাছাড়া উপজেলা পর্যায়ে কোনও কনসালটেন্ট থাকেন না, সেখানে শিক্ষার্থীদের শেখার মতো কিছু নেই। এদিকে নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।

শিক্ষার্থী ও চিকিসকরা জানান, ২৭ আগস্ট নতুন খসড়া নীতিমালা করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। প্রথম বছর আগের মতোই নিজের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং পরের বছর সরকার অথবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিক্ষার্থীদের ইন্টার্ন করার কথা বলা আছে। ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে মতামত প্রদানের আহ্বান জানানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)-এর সভাপতি ডা. ইকবাল আর্সলান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ইন্টার্নশিপ হচ্ছে কারিকুলামের একটি অংশ। আর কারিকুলাম তৈরি করে তাকে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)। এটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিষয় নয়। আমার জানা মতে, বিএমডিসি এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্তও গ্রহণ করে নাই এবং বিএমডিসি এ ব্যাপারে কোনও সুপারিশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা অধিদফতরকে করে নাই। সেজন্য এটা নিয়ে এখন আলোচনা-সমালোচনা বা আন্দোলন সবই অমূলক।’

খসড়ার প্রসঙ্গে ইকবাল আর্সলান বলেন, ‘এটা মন্ত্রণালয় আলোচনা করেছে, কিন্তু তারা তো এ বিষয়ে কিছুই করতে পারবে না, এটা করার অধিকার সংরক্ষণ করে বিএমডিসি। বিএমডিসি আজ পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।’

শিক্ষার্থীদের ক্ষুব্ধ হওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার ডা. জাহেদুর রহমান বসুনিয়া বলেন, ‘ক্ষুব্ধ হবার তো কিছু নেই। এটা ওয়েবসাইটে রয়েছে, তারা সবাই ফিডব্যাক দিক সেখানে, আগামী ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তো সুযোগ রয়েছে, এ বিষয়ে ফিডব্যাক দেওয়া যাবে। তাছাড়া এটা এখনও ফাইনাল হয়নি, এটি একটি প্রস্তাব।’

এই খসড়ার সমালোচনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আলোচনা-সমালোচনা সব হবে, সব দেখে যদি মনে হয়- এটা সম্ভব না তাহলে হবে না, আর যদি করার মতো কিছু থাকে তাহলে করা হবে।’

প্রতিবছর প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ নারী মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাস করে বের হয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘তারা গ্রামে যাবে। তাদের বাসস্থান, তাদের নিরাপত্তা, অনেক বিষয় আছে। এগুলো সবকিছু নিয়ে আলাপ হবে, তারপর একটা সিদ্ধান্ত হবে। সরকার যদি নারী চিকিৎসকদের বাসস্থান ঠিকমতো দিতে পারে, তাহলে আমার মনে হয় না এতে খুব একটা সমস্যা হবে, এটা ভালো প্রস্তাব।’

এই প্রস্তাবের প্রসঙ্গে ডা. জাহেদুর রহমান বসুনিয়া বলেন, ‘এটা প্রস্তাব আকারে রয়েছে। তারপরও বলতে চাই, এর তো অনেক বেনিফিট রয়েছে। চিকিৎসকরা হাতে কলমে গ্রামে-গঞ্জে শিখবে, গ্রামের চিকিৎসা সর্ম্পকে তাদের ধারণা হবে, এটা তো সারাবিশ্বে রয়েছে। সে কারণেই আমরা অনেকদিন থেকেই চিন্তা করছিলাম। এবার প্রস্তাব করা হয়েছে।’

এদিকে, প্রস্তাবিত এই খসড়ার বিরোধিতা করে শনিবার (৩১ আগস্ট) স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছেন। তারা কলেজের অধ্যক্ষ এবং হাসপাতালের পরিচালককে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

এই আন্দোলনের অংশ নেওয়া সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজের পঞ্চম বর্ষের ছাত্র নাজমুস সাকিব বাপ্পী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা একটা যৌক্তিক দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছি। এমনিতেই আমাদের গ্রাজুয়েশনে দীর্ঘসূত্রিতা রয়েছে, এরসঙ্গে একবছরের ইর্ন্টানশিপ, এরপর গ্রামে আরেক বছর, তারপর বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট পাবো। এই সার্টিফিকেট পেতেও আমাদের ছয় মাসের মতো সময় লাগে। এতে করে সাড়ে সাত বছর সময় চলে যায়। আবার একবারে মেডিক্যালে পাসের হারও কিন্তু তুলনামূলক কম। যারা একবারে পাস করতে পারবে না, তাদের ক্ষেত্রে এটা দশবছরও লাগতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদি আগামী ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই হঠকারী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা না হয়, তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাবো।’ সব মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে আলোচনা করে এই আন্দোলন করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

তরুণ চিকিৎসক সাকলায়েন রাসেল জানান, নিজ উদ্যোগে প্রায় এক হাজার ২০০ চিকিৎসক ও মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের মন্তব্য চেয়েছিলেন এই খসড়ারবিষয়ে। তাতে মাত্র দু’জন চিকিৎসক বাদে সবাই এই বিপক্ষে মত দিয়েছেন।

 

 

/এএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ধানক্ষেত পাহারা দিতে গিয়ে বুনো হাতির আক্রমণে কৃষক নিহত
ধানক্ষেত পাহারা দিতে গিয়ে বুনো হাতির আক্রমণে কৃষক নিহত
কোনও রান না দিয়ে ৭ উইকেট, টি-টোয়েন্টিতে ইন্দোনেশিয়ার বোলারের বিশ্ব রেকর্ড
কোনও রান না দিয়ে ৭ উইকেট, টি-টোয়েন্টিতে ইন্দোনেশিয়ার বোলারের বিশ্ব রেকর্ড
রাজধানীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুল শিক্ষার্থীসহ নিহত ২
রাজধানীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুল শিক্ষার্থীসহ নিহত ২
ঢামেক হাসপাতালে কারাবন্দীর মৃত্যু
ঢামেক হাসপাতালে কারাবন্দীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত
ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত