‘উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’—এই প্রতিপাদ্যে শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বসেছিল প্রজাপতি মেলা-২০১৯। প্রজাপতি সংরক্ষণে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১০ সাল থেকে এই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের কীটতত্ত্ব শাখা এই আয়োজন করে। নানা আয়োজনে দিনব্যাপী এ মেলায় ছিল দর্শনার্থীদের ব্যাপক সমাগম।
বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তন চত্বরে প্রজাপতি অবমুক্তকরণ ও রঙিন বেলুন উড়িয়ে মেলা উদ্বোধন করেন প্রজাপতি বিশেষজ্ঞরা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু বলেন, ‘প্রজাপতি রক্ষার মাধ্যমে প্রকৃতি রক্ষা পাবে। অন্যথায় আমাদের সবকিছু হারিয়ে যাবে। প্রজাপতি শুধু সৌন্দর্যের ব্যাপার নয়, বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় রাখতে প্রজাপতি ভূমিকা রাখে।’
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ ন্যাচার (আইইউসিএন)-এর সাবেক কান্ট্রি ডিরেক্টর ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রজাপতি একক কোনও জীবন নয়, প্রজাপতি এই পরিবেশের সঙ্গে মিশে থাকে, সুতরাং এই পরিবেশ না থাকলে প্রজাপতিও থাকবে না। যেখানেই উন্নয়ন হয় সেখানেই প্রথম বলিদান হয় বৃক্ষের। একটি বনের উপাদান যেমন বৃক্ষ, বিভিন্ন প্রাণী, ঠিক তেমন একটি সুস্থ বনের নির্দেশিকা হলো প্রজাপতি। যে বনে যত বেশি প্রজাপতি থাকবে সেই বন ততবেশি সুস্থ।’
মেলার আহ্বায়ক প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন তুহিন বলেন, ‘বাংলাদেশে ৩৫০ থেকে ৪০০ প্রজাতির প্রজাপতি দেখা যায়। এরমধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আছে ১১০ প্রজাতির। প্রজাপতির বাসযোগ্য পরিবেশ নষ্ট হওয়ায় বর্তমানে এই সংখ্যা কমে এক শতে নেমেছে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. গোলাম মোস্তফা। মেলায় উপস্থিত ছিলেন জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আব্দুল জব্বার হাওলাদার, অধ্যাপক সাদিয়া আহমদ, পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক, বন অধিদফতরের বন্যপ্রাণি অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক এএসএম জহির উদ্দিন আকন্দসহ অনেকে।
অনুষ্ঠানে প্রজাপতি গবেষণায় সার্বিক অবদানের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম. এ. বাশারকে ‘বাটারফ্লাই অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়। ‘বাটারফ্লাই ইয়াং ইনথুসিয়াস্ট অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন সবুজবাগ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী অরুণাভ ব্রুনো।
দিনব্যাপী এ মেলায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কুইজ, বক্তৃতা, প্রজাপতি বিষয়ক বির্তক প্রতিযোগিতা, প্রজাপতির ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী হয়।