ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষক একজনই বলে জানিয়েছেন গুলশান বিভাগের ডিসি সুদীপ চক্রবর্তী। সোমবার (৬ জানুয়ারি) ঘটনাস্থল তদন্তে এসে তিনি সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় একথা বলেন।
গুলশান বিভাগের ডিসি বলেন, ‘ভিকটিমের সঙ্গে রবিবার থেকে একাধিকবার ওসি, এসি ক্যান্টনমেন্টে কথা বলেছেন। ভিকটিমের কথা অনুযায়ী অভিযুক্ত একজন।’ ভিকটিমের বাবা ইতোমধ্যে একজনের কথা উল্লেখ করেই মামলা করেছেন বলেও তিনি জানান।
এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘আমরা সার্বিক তদন্তের চেষ্টা করছি। ভিকটিম ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে আছে। দুঃখ প্রকাশ করছি। অপরাধীকে খুঁজে বের করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছি আমরা।’
কী আলামত পাওয়া গেছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, ‘সন্দেহভাজন আলামত এখন পর্যন্ত যা পাওয়া গেছে তা হলো ভিকটিমের পরিধেয় বস্ত্র। এছাড়া তার কাগজপত্র, জুতা, ইনহেলার ও ঘড়িও পাওয়া গেছে।’ এসবই ভিকটিমের বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘সিআইডি থেকে ক্রাইম সিন ঘটনাস্থলে এসেছে ফরেনসিকের আলামত সংগ্রহ করছে।’
ঘটনাস্থলে অনেক বেশি নিরাপত্তা থাকে উল্লেখ করে সুদীপ চক্রবর্তী আরও বলেন, ‘এই এলাকায় তেমন জনসমাগম দেখা যায় না। ব্যস্ততম সড়ক, সবাই যাওয়া-আসার মধ্যে থাকে, কেউ থামে না। এটা ক্রাইম হওয়ার মতো জায়গা ছিল না। কিছু হয়তো ঘাস ও গাছ ছিল, ধর্ষক সেই সুবিধা নিয়েছে।’
এ এলাকায় প্রায়ই ছিনতাইয়ের ঘটনা শোনা যায় এবং এই ঝোপঝাড়ের কারণে সেটা হয় কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখানে ঝোপঝাড় রয়েছে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য। কিছু গাছ আছে বড়, নিয়মিত ডাল ছাঁটাই করে দেওয়া হয়। এ এলাকায় সার্বক্ষণিক পুলিশ পেট্রোল থাকে, আমরাও নিয়মিত টহল দেই। পাশে গলফ গার্ডেন আছে, এয়ারপোর্ট কাছেই, ফলে নিরাপত্তা বিষয়টি দেখা হয়।’
ধর্ষকের আলামত ওভাবে পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে গুলশান বিভাগের ডিসি বলেন, ‘আমরা তদন্ত করে দেখছি। সিআইডি থেকে যে ক্রাইম সিন এসেছে তারা এখনও আমাদের জানায়নি। পাশাপাশি প্রযুক্তির সহায়তা নিচ্ছি, ম্যানুয়ালি চেষ্টা করছি।’
সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘ঢাকা শহরে সেই পরিস্থিতি নেই যে মুক্ত জায়গায় অপরাধ হবে। তারপরও হলো, এটা দুঃখজনক ঘটনা। আমরা দেখবো নিরাপত্তা বাড়ানোসহ কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়। এখানে বেশ কিছু সিসি ক্যামেরা আছে, সেগুলোসহ নিরাপত্তার জন্য আরও কী কী করা যায় দেখা হবে।’
প্রসঙ্গত, রবিবার (৫ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৫টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে ওই ছাত্রী বান্ধবীর বাসায় যাচ্ছিলেন। কুর্মিটোলা বাসস্টেশনে নামার পর তাকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি অনুসরণ করতে থাকে। মাঝপথে তাকে ধরে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে। ঘটনাটি সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে ঘটে। রাত ১০টার দিকে জ্ঞান ফেরে ওই ছাত্রীর। পরে তিনি রিকশায় করে বান্ধবীর বাসায় যান। সেখান থেকে বান্ধবীসহ অন্য সহপাঠীরা তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
আরও পড়ুন:
সে আমাদের মেয়ে, তার মনোবল শক্ত থাকবে: ঢাবি ভিসি
‘নিন্দা জানানোর ভাষা নেই, লজ্জার শেষ নেই’
ঢাবি ছাত্রীর চিকিৎসায় মেডিক্যাল বোর্ড গঠন