X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

ডিএনসিসির ১৬ নম্বর ওয়ার্ড: দুই দলেই বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি

শাহেদ শফিক
০৮ জানুয়ারি ২০২০, ০৯:২৫আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২০, ০৯:২৯

বাঁ থেকে আ.লীগ সমর্থিত প্রার্থী মতিউর রহমান, আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আলাউদ্দিন ও বিএনপির প্রার্থী রাব্বী

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে রয়েছে। এ ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর মো. মতিউর রহমান মোল্লাকে কাউন্সিলর পদে সমর্থন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। গত নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন। অপরদিকে,বিএনপি থেকে কাফরুল থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হাবীবুর রহমান রাব্বীকে দলীয় সমর্থন দেওয়া হয়েছে।

ওয়ার্ডটিতে দলীয় প্রার্থী ছাড়াও আওয়ামী লীগের তিনজন ও বিএনপির একজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বিতর্কিত এসব বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে শঙ্কা বাড়ছে।

ওয়ার্ডটিতে এ বছর ৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হচ্ছেন- বর্তমান ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মতিউর রহমান মোল্লা, থানা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি মো. আলাউদ্দিন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য রফিকুল ইসলাম ও তরুণ লীগ নেতা আজিজুর রহমান স্বপন।

অপরদিকে এই ওয়ার্ড থেকে থানা যুবদল সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান রাব্বি বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। এই ওয়ার্ডে কাফরুল থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক একরাম হোসেন বাবুল বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টির মো. মুকুল আমিন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নুরুল হক মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিম কাফরুল (তালতলার কিছু অংশ) এবং গোটা ইব্রাহীমপুর নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৬ নাম্বার ওয়ার্ড। ২ দশমিক ০৮৮ বর্গকিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট ওয়ার্ডটিতে প্রায় ৮৭ হাজার ভোটার রয়েছে। তিন লাখেরও বেশি মানুষের বসবাস এই ওয়ার্ডে। রাজধানীর অন্যতম অপরিকল্পিত ও ঘিঞ্জি এলাকা হিসেবে পরিচিত এই ওয়ার্ডে নাগরিক সুবিধা অনেকটা অপ্রতুল। গত পাঁচ বছরে বেশ কিছু উন্নয়ন কাজ হওয়ায় ওয়ার্ডের চেহারা কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। পানি সংকটসহ নাগরিক সমস্যাও কিছুটা লাঘব হয়েছে।

বর্তমান কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মতিউর রহমান মোল্লা জানান, তিনি গত ৫ বছরে ওয়ার্ডে প্রায় ৬০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছেন। আরও কিছু কাজ চলমান রয়েছে। এলাকার প্রায় ৯৬ ভাগ সড়ক এখন ভালো। জলাবদ্ধতাও কমে আসছে। নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কাজ তদারকি ও ওষুধ ছেটানোর কারণে মশার উপদ্রব কমেছে। তার দাবি, আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করায় তিনি এসব পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছেন।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে জয়ী হওয়া এই কাউন্সিলর আরও  বলেন, গত নির্বাচনে দল আমাকে মনোনয়ন দেয়নি। কিন্তু জনগণ আমাকে ১৬শ ভোটের ব্যবধানে কাউন্সিলর নির্বাচিত করেছে। আমি জনগণের সেই আমানত রক্ষা করেছি। ৫ বছরে ৬০ কোটি টাকার কাজ করেছি। এলাকায় ৩টি পানির পাম্প বসিয়েছি। খাল উদ্ধার করে জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করেছি। রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করেছি। বর্তমানে এলাকার ৯৫ ভাগ রাস্তা ভালো। আমার কর্মকাণ্ড ও জনসমর্থনের কথা বিবেচনা করে দল আমাকে এবার মনোনয়ন দিয়েছে।

 এ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আলাউদ্দিন বলেন, এমপির (কামাল আহমদ মজুমদার) সহযোগিতায় এলাকার অনেক কাজ করেছি। দল বর্তমান কাউন্সিলরকে মনোনয়ন দিয়েছি। আমি এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি দলের সমর্থন আদায়ের। দল যদি সমর্থন না দেয় তাহলে বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন করবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটা ৮ জানুয়ারির পরে সিদ্ধান্ত নেবো। এখনও বলতে পারছি না।

তবে এই প্রার্থীর বিষয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের অভিযোগ তিনি এক সময় ফ্রিডম পার্টি করতেন। ছিলেন পত্রিকার হকার। পরবর্তীতে একটি হত্যা কামলায় দীর্ঘদিন জেল খেটেছেন। জেলে থেকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ কয়েকজন নেতার সঙ্গে তার সখ্যতা হয়। পরে ২০০৮ সালের দিকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি শুরু করেন। এরপর শতকোটি টাকার মালিক হয়ে যান। তার বিরুদ্ধে এলাকায় ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, জমিদখল ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এসবের সঙ্গে যুক্ত নই। যারা নিজেদের স্বার্থের জন্য বিভিন্ন সংবাদ করায় তারাই এসব করতে পারে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একসময় এই ওয়ার্ডটির অধিকাংশ এলাকা ছিল জলাশয়। সত্তর দশকের পর থেকে জলাশয় ভরাট করে বাড়ি করা শুরু করেন বিভিন্ন পেশার মানুষ। পরিকল্পনা ছাড়া যে যার জমিতে নিজেদের মতো করে বাড়ি নির্মাণ করতে থাকে। এ কারণে বর্তমানে পুরো এলাকাটি ঘিঞ্জি এলাকায় পরিণত হয়েছে।  পুরো ওয়ার্ডে নেই কোনও খেলার মাঠ, কবরস্থান ও বিনোদনের জন্য কমিউনিটি সেন্টার। এখানকার অলিগলিসহ প্রায় সব রাস্তাই সরু। তবে বর্তমানে কিছু সড়ক উদ্ধার করে প্রসস্ত করা হয়েছে। সব ছাড়িয়ে ১৬ নাম্বার ওয়ার্ডের ‘ক্যানসার’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে ইব্রাহীমপুর খাল। ময়লা আবর্জনায় ভরাট হয়ে যাওয়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। তাছাড়া মশার উপদ্রবও রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে প্রতিশ্রুতি চান তারা।

/এমআর/
সম্পর্কিত
মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ ইসির
হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার শঙ্কা এজেন্সি মালিকদের
গরমে পানির সংকট রাজধানীতে, যা বলছে ওয়াসা
সর্বশেষ খবর
মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে ভিত্তিহীন তথ্য রয়েছে
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিমার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে ভিত্তিহীন তথ্য রয়েছে
পার্বত্য এলাকার উন্নয়নে হাজার কোটি টাকার কাজ চলছে: প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল
পার্বত্য এলাকার উন্নয়নে হাজার কোটি টাকার কাজ চলছে: প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল
‘আশ্রয়ণ’: গ্রামীণ বসতি রূপান্তরের প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়
‘আশ্রয়ণ’: গ্রামীণ বসতি রূপান্তরের প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়
ছক্কা মেরেও আউট হলেন মুশফিক !
ছক্কা মেরেও আউট হলেন মুশফিক !
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা