করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়ে রাজধানীর ছিন্নমূল ও হতদরিদ্র মানুষের মাঝে মাসব্যাপী খাদ্যসামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) হাইকোর্ট মাজার প্রাঙ্গণে আট শতাধিক মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। কিন্তু ত্রাণের এসব খাদ্যসামগ্রী বিক্রি করতে দেখা গেছে অনেককে।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে চারটার দিকে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি শেষ হয়। এরপর অনেককেই দলবেঁধে সিটি করপোরেশনের দেওয়া সেসব খাদ্যসামগ্রী বিক্রি করতে দেখা গেছে। ত্রাণের প্রতিটি প্যাকেটে পাঁচ কেজি চাল, পাঁচ কেজি আলু, এক লিটার তেল, এক কেজি ডাল, এক কেজি লবন ও একটি সাবান রয়েছে। এসব পণ্যসামগ্রীর মোট মূল্য প্রায় ৬০০ টাকা হলেও সেগুলো ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়।
ত্রাণসামগ্রী বিক্রি করাদের একজন মো. ইয়াছিন। কেন এগুলো বিক্রি করা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা ভিক্ষা করে যে টাকা পাই তা দিয়ে দিন চলে যায়। গত কয়েকদিন ভিক্ষার তেমন সুযোগ না থাকায় বাড়িতে তেমন টাকা পয়সা পাঠাতে পারিনি। তাই এগুলো বিক্রি করে দিয়ে টাকা বাড়িতে পাঠাবো।’
অপর একজন নাম না জানানোর শর্তে বলেন, 'গত কয়েক দিন অনেকের কাছ থেকে আমরা খাদ্যসামগ্রী পেয়েছি। ঘরে চাল, ডাল, তেল সাবান আছে। তাই আজ পাওয়া দ্রব্যসামগ্রী বিক্রি করে দিচ্ছি। সমস্যা তো নেই। আমরা তো টাকা পাচ্ছি।'
শুধু তায় নয়, সিটি করপোরেশনের লোকজন চলে যাওয়ার পর অপেক্ষাকৃত দুর্বল ব্যক্তিদের কাছ থেকে শক্তিশালী কয়েকজনকে ত্রাণের প্যাকেট ছিনিয়ে নিতেও দেখা গেছে।
জানতে চাইলে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসূফ আলী সরদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, 'মেয়র মহোদয় ৫০ হাজার মানুষকে খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছেন, সেই কাজ এখনও শুরু হয়নি। আগামী পরশু থেকে শুরু হবে। এখন আপদকালীন সময়ে অল্প কিছু দিচ্ছি। মানুষ ত্রাণ পেয়ে যদি বিক্রি করে দেয়, তাহলে আমাদের কী করার আছে?'