X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্কুলছাত্রকে নির্যাতনে সেনা ও পুলিশ সদস্যসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

রাজশাহী প্রতিনিধি
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১৯:১০আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ২২:২১

রাজশাহীতে স্কুলছাত্রকে নির্যাতন রাজশাহীর পবা উপজেলায় মোবাইলফোন চুরির অপরাধে স্কুলছাত্র জাহিদকে হাত-পা বেঁধে পেটানোর ঘটনায় এক সেনা ও পুলিশ সদস্যসহ মোট ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। অভিযুক্ত ওই সেনা সদস্যের নাম নাসির, সে পবা উপজেলার চৌবাড়িয়ার বাসিন্দা, বাবার নাম কটা মুন্নি এবং পুলিশ সদস্যের নাম সাগর একই গ্রামের আমদি মলের ছেলে।  
অন্য আসামিরা হলেন, চৌবাড়িয়া গ্রামের সমশের মুহরির ছেলে পলাশ, মুন্নার ছেলে তুহিন, সান্দি মল ও তার ছেলে অনিক, বেরাজের ছেলে রাজ্জাক, বারির ছেলে আজিজুল, আজিজুলের ছেলে উজ্জ্বল, ফজর আলীর ছেলে মাছিম, ফরিদের ছেলে কমল, ফজলুল বারি ও তার ছেলে রাকিব।
এরপর আজিজুল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার রাতে নির্যাতনের শিকার স্কুলছাত্র জাহিদ হাসানের বাবা ইমরান হোসেন ওই রাতেই বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

এদিকে এ ঘটনায় সেনা ও পুলিশ সদস্যের সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে রাজশাহী জেলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আব্দুর রশিদ বলেন, ভিকটিমের বাবা কাছ থেকে এ বিষয়ে শুনেছি। তবে আমরা প্রশাসনিকভাবে এ বিষয়টি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। তদন্ত করার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নির্যাতনের শিকার জাহিদ হাসান বাগসারা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র। বর্তমানে আহত জাহিদ হাসান পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

মামলার বিষয়ে তার বাবা ইমরান হোসেন বলেন, ‘মামলা করার পর আসামি পলাশ ও রাজ্জাক আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়েছে। নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছি।’

পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘থানায় মামলা হওয়ার পর এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তবে মামলার খবর পেয়ে আসামিরা গা ঢাকা দিয়েছেন।’

প্রসঙ্গত মোবাইলফোন চুরির অপবাদ দিয়ে জাহিদ হাসানকে পাশবিক নির্যাতন চালায় আসামিরা। শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আসামিরা জাহিদকে ধরে মারধর করেন এবং মোবাইলে ভিডিও ধারণ করা হয়। শনিবার তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে ফাঁস হয়ে গেলে বিষয়টি নিয়ে তুমুল আলোচনার সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এদিকে ভিডিওটিতে কিশোর জাহিদের সঙ্গেই একই অপরাধে ইমন (১৪)নামে আরেক কিশোরকেও নির্যাতন করতে দেখা যায়। তবে জাহিদের খোঁজ মিললেও এখন আর ইমনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আব্দুর রশিদ বলেন,‘নির্যাতনের শিকার আরেক শিশু ইমনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার বাবা-মা নেই। এমনকি তার পক্ষ থেকে কোনও অভিযোগ থানায় আসেনি। তবে তাকে আমরা তদন্তের স্বার্থে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। সে অভিযুক্তদের প্রতিবেশী এবং এলাকায় তার বিরুদ্ধে চোরের অপবাদ রয়েছে। সে তার দাদির বাড়িতে থাকত। তবে এই ঘটনার পর সে দাদির বাড়িতেও আসেনি। আমরা সব বিষয় নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি।’

উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চুরির অভিযোগ তুলে ১৩ বছরের শিশু রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরপর মাস না ঘুরতেই ৩ আগস্ট খুলনার টুটপাড়া কবরখানা মোড়ে এক ওয়ার্কশপে মোটরসাইকেলে হাওয়া দেওয়া কমপ্রেসার মেশিনের মাধ্যমে পায়ুপথে হাওয়া ঢুকিয়ে হত্যা করা হয় ১২ বছরের শিশু রাকিব হাওলাদারকে। ইতোমধ্যেই এই দুই শিশু হত্যার ঘটনায় পৃথকভাবে ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় জনকে যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

/এসএম / এএইচ /

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা