X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ওপর নতুন বই নেই গ্রন্থমেলায়

সাদিকুর রহমান
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ০৫:১৫আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ০৫:১৫

বইমেলাবইমেলা প্রাণের মেলা। জাত প্রথা ভুলে বই মেলা হয়ে ওঠে লেখক, প্রকাশক পাঠকদের মিলন মেলায়।এ বছরের অমর একুশে গ্রন্থমেলা যেন তারই প্রতিচ্ছবি। তবে  উপন্যাস, গল্প,প্রবন্ধ,গবেষণা থেকে শুরু করে সব ধরনের বই এই মেলায় পাওয়া গেলেও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ওপর নতুন বই তেমন একটা নেই।মেলার ২৬তম দিন পর্যন্ত তিন হাজার ৩৩টি বই প্রকাশ হলেও তাতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নিয়ে লেখা নতুন বইয়ের সংখ্যা একেবারেই নগণ্য।
মেলার ২৬তম দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিভিন্ন স্টলে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়,ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ওপর নেই নতুন প্রকাশিত কোন বই।বিভিন্ন স্টলে যে কয়েকটি বই আছে তার সবগুলোই কয়েক বছর আগের প্রকাশিত। নতুন বই না প্রকাশ করার কারণ হিসেবে প্রকাশকরা দায়ি করছেন বইয়ের চাহিদা না থাকা ও এ ধরনের বই রচনা করা দীর্ঘ সময় সাপেক্ষ হওয়াকে।
মেলায় বিভিন্ন প্রকাশনীর স্টলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ওপর লেখা মোট বই পাওয়া যায় ২৯টি। এর মধ্যে অ্যাডর্ন প্রকাশনীতে ৫টি,আগামী প্রকাশনে ১টি, নওরোজ কিতাবিস্তানে ৪টি, মিজান পাবলিশার্সে ৫টি ও সর্বাধিক ১৪টি বই রয়েছে মাওলা প্রকাশনীতে। যার মধ্যে নতুন প্রকাশিত বই নেই একটিও। তবে শিহাব শাহরিয়ার রচিত ‘বাংলাদেশের কোচ জনগোষ্ঠীর সমাজ ও সংস্কৃতি’ ও মুস্তাফা মজিদের লেখা ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পরিচয়’ নামে দুটি নতুন বইয়ের সন্ধান পাওয়া যায় বাংলা একাডেমিতে।      

নতুন বই প্রকাশ না করার বিষয়ে প্রকাশকদের সঙ্গে কথা বললে তারা দায়ি করেন পাণ্ডুলিপি না থাকা, গবেষণা না হওয়া ও পাঠকদের চাহিদা না থাকাকে। অ্যাডর্ন প্রকাশনীর প্রকাশক সৈয়দ জাকির হোসাইন এ বিষয়ে বলেন ‘ এ ধরনের বইয়ের জন্য পাণ্ডুলিপি পাওয়া যায় না। লেখকদের বই লেখার জন্য দীর্ঘ গবেষণার প্রয়োজন হয়। বর্তমানে যে বইগুলো আছে বা আসছে সেগুলো পূর্বে করা গবেষণার ওপর ভিত্তি করেই রচিত। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নিজেদের মধ্যেও কেউ যদি এগিয়ে আসেন তাহলে কাজটা সহজ হয়।’
নওরোজ কিতাবিস্তানের প্রকাশক মনজুর খান চৌধুরী বলেন, ‘লেখক নেই যার করণে বই প্রকাশ হয় না। এবার মেলায় একটি বই আনার চেষ্টা করেছি। কিন্তু পুরোপুরিভাবে কাজ শেষ করতে না পারায় সেটি আর প্রকাশ করতে পারিনি।’
মিজান পাবলিশার্সের প্রকাশক মিজানুর রহমান পাটোয়ারী বলেন,‘ এ ধরনের বই আসলে বিক্রি হয় না।পাঠকরাও তেমন কিনতে চায় না। এসব বই লেখার জন্য লেখক আছেন, কিন্তু বিক্রি না থাকায় আমরা প্রকাশ করি না।’

চাহিদার বিষয়ে জানতে চাইলে কাকলী, সুবর্ণ, দিব্য প্রকাশ, অনন্যা প্রকাশনী, প্রথমা, সময় প্রকাশনের বিক্রয় প্রতিনিধিরা জানান, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বইয়ের চাহিদা আছে। মাঝে মাঝে অনেকেই এসব বইয়ের খোঁজে আসেন। কিন্তু স্টলে না থাকার কারণে সেগুলো দিতে পারিনা।

এদিকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ওপর নতুন বই প্রকাশের ক্ষেত্রে প্রকাশকদের অনীহার সমালোচনা করে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘প্রকাশকরা এখন আসলে লাভের দিকটাই আগে দেখেন। কোন ধরনের বই বেশি বিক্রি হবে তারা শুধু সেগুলোই প্রকাশ করেন। এতেই বোঝা যায় বর্তমানে প্রকাশকদের মধ্যে কোন ডিসিপ্লিন নেই।’

বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষদের পরিচয় কিংবা তাদের সংস্কৃতি সবার সামনে তুলে ধরার জন্য লাভের চিন্তা বাদ দিয়ে অন্তত একটি করে হলেও নতুন বই প্রকাশ করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
/এসআর/এমএসএম/আপ-এআর/

সম্পর্কিত
বইমেলা শেষ, কবে স্বরূপে ফিরবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান?
ব্রহ্মপুত্রপাড়ে পণ্ডিত বইমেলা, থাকবেন ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর সাহিত্যিক ও শিল্পী
সাঙ্গ হলো প্রাণের মেলা
সর্বশেষ খবর
বঙ্গোপসাগরে ডুবলো জাহাজ, ভাসছেন ১২ নাবিক
বঙ্গোপসাগরে ডুবলো জাহাজ, ভাসছেন ১২ নাবিক
মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ ইসির
মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ ইসির
ভারতের একটি হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ৬
ভারতের একটি হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ৬
কুষ্টিয়ার তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস
কুষ্টিয়ার তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
সিনিয়র শিক্ষককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি জুনিয়র শিক্ষকের
সিনিয়র শিক্ষককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি জুনিয়র শিক্ষকের