দেশের প্রায় ৭১ শতাংশ নিজেদের সুখী বললেও ৬১. ১১ শতাংশ নারী বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। সম্প্রতি দেশের আটটি বিভাগে মোট ৪ হাজার ৮০০ জন নারীর ওপর বাংলা ট্রিবিউনের পরিচালিত ‘পরিবারে নারীর ক্ষমতায়ন’ বিষয়ক জরিপে এমনই তথ্য উঠে এসেছে।
এই জরিপে নারীদের কাছ থেকে ২০টি প্রশ্নের উত্তর নেওয়া হয়। যেখানে মাত্র ২২.৯০ শতাংশ নারী জানিয়েছেন তারা নিজেদের সুখী মনে করছেন না। এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হলো- গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর ৭৬ শতাংশ এবং শহুরে ৬৬ শতাংশ নারী সবদিক বিবেচনা করে নিজেদের সুখী মনে করছেন, যা হিসেব মতো সারাদেশে ৭১. ৩৫ শতাংশ নারী নিজেদের সুখী মনে করছেন।
নারীরা মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে বেশি:
বাংলা ট্রিবিউনের জরিপে দেখা যায়, দেশের ৬১.১১ শতাংশ নারী মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। যেখানে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো- গ্রামে বসবাসকারী নারীদের চেয়ে শহরের নারীরা সবচেয়ে বেশি মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। গ্রামে যেখানে ৫২.০৫ শতাংশ মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, সেখানে শহরে ৭০.১৬ শতাংশ নারী শিকার হচ্ছেন মানসিক নির্যাতনের।
শারীরিক নির্যাতনের শিকারও হচ্ছেন নারীরা:
বাংলা ট্রিবিউনের জরিপে দেখা যায়, ৩৪.০৮ শতাংশ নারী শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এখানেও দেখা যায় শহুরে নারীরাই সবচেয়ে বেশি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। বাংলা ট্রিবিউনের জরিপে দেখা যায়, গ্রামের ২৮.৪২ শতাংশ এবং শহরে ৩৯.৭৫ শতাংশ নারী শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
‘মেয়ে’ বলে অর্ধেকেরও বেশি নারী অবহেলিত হলেও পরিবারকে পাশে পান:
দেশের ৫৩.৫৪ শতাংশ নারী মনে করেন তারা মেয়ে বলে অবহেলিত হন। তবে নিজের বিভিন্ন সময় পরিবারকে পাশে পান বলে জানিয়েছেন ৮৮.৫২ শতাংশ নারী।
উল্লেখ্য, দেশের আটটি বিভাগে ৬০০ জন করে মোট ৪ হাজার ৮০০ জন নারীর ওপর বাংলা ট্রিবিউন এই জরিপ পরিচালনা করে। যার মধ্যে শহরগুলো থেকে ৩০০ জন এবং গ্রাম পর্যায়ে ৩০০ জনের ওপর এই জরিপ হয়।
গ্রাফিক্স: রাশেদ বাবু
জরিপ পরিচালনা: বাংলা ট্রিবিউন
জরিপ পরিচালনার সময়কাল: ২২ ফেব্রুয়ারি- ২৯ ফেব্রুয়ারি
নমুনা (sample) সংগ্রহের প্রক্রিয়া:
১. প্রতিটি বিভাগে ৩০০ জন শহুরে এবং ৩০০ জন গ্রামীণ নারীকে ২০টি করে প্রশ্ন করা হয়। (আট বিভাগে মোট ৪ হাজার ৮০০ জনের ওপর জরিপ পরিচালনা করা হয়)।২. শহুরে বলতে বোঝানো হয়েছে- বিভাগীয় শহরে বসবাসকারী নারী এবং গ্রামীণ বলতে বোঝানো হয়েছে- জেলা, উপজেলা, থানার গ্রাম পর্যায়ে বসবাসকারী নারী।
৩. শুধুমাত্র নারীদের ওপর এই জরিপ পরিচালনা করা হয়।
৪. পেশাভিত্তিক অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা সমান রাখা হয়েছে। অর্থাৎ শিক্ষার্থী ১০০ জন, কর্মজীবী নারী ১০০ জন এবং গৃহিণী ১০০।
৫. দৈবচয়ন পদ্ধতিতে নির্বাচিত প্রতি অংশগ্রহণকারীর উত্তর নেওয়ার পর ৫ মিনিট অন্তর অংশগ্রহণকারী নির্বাচন করা হয়।৬. জরিপকারীরা একই স্থানে সর্বোচ্চ ১ ঘণ্টা অবস্থান করেছেন।
৭. নমুনা সংগ্রহের জন্য জেলা/বিভাগের হাট বাজার/শপিং মলকে স্থান হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।৮. দেশের আট বিভাগে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়।