X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০
একান্ত সাক্ষাৎকারে কুড়িগ্রাম পৌরমেয়র আব্দুল জলিল

মাদকমুক্ত পৌরসভা গড়তে যে কোনও ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত আছি

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
১৩ মার্চ ২০১৬, ১৪:১৯আপডেট : ১৩ মার্চ ২০১৬, ১৪:২৬

গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত  প্রার্থী আব্দুল জলিল আঠারো হাজার ৭১০ ভোট পেয়ে পৌর মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে মেয়র পৌরবাসীদের নিয়ে তার স্বপ্ন, পৌরসভার উন্নয়নে কর্ম পরিকল্পনা এবং সামনের দিনগুলোতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় রাজনীতিতে তার কার্যকর অংশগ্রহণ নিয়ে কথা বলেন।

কুড়িগ্রামের পৌরমেয়র আব্দুল জলিল-১

বাংলা ট্রিবিউন: দীর্ঘ সাধনার পর কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আপনি। দায়িত্ব পালন করতে বসে কেমন লাগছে?

আব্দুল জলিল: অনুভূতি তৃপ্তির। তবে এর কৃতিত্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এবং আমার পৌরবাসীর। প্রধানমন্ত্রীর আমাকে মনোনয়ন না দিলে এবং পৌরবাসী ঐক্যবদ্ধভাবে আমাকে ভোট না দিলে হয়তো এবারও আমার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতো না।

বাংলা ট্রিবিউন: আগামীতে পৌর নাগরিকদের সঙ্গে আপনার সম্পৃক্ততা কেমন থাকবে?

আব্দুল জলিল: আমি এর আগে নির্বাচিত না হলেও পৌরবাসীর সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল আত্মিক। আগে কাজ ছাড়াই তাদের কাছে যেতাম আর এখন কাজের প্রয়োজনে তাদের কাছে যেতে হবে। আগামীতে পৌর নাগরিকদের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা আরও বাড়বে। সেটা হবে আগের চেয়ে অনেক বেশি বন্ধুসুলভ।

বাংলা ট্রিবিউন: পৌর এলাকায় ইদানিং মাদকের ব্যবহার বেড়ে গিয়েছে। আপনি মাদকের ভয়াল থাবা থেকে পৌরসভাকে মুক্ত করতে কি পদক্ষেপ নিবেন?

আব্দুল জলিল: আমি বিষয়টি আরও কয়েকজনের কাছে শুনেছি। মাদক প্রতিরোধে আমি একটুও ছাড় দিতে রাজি নই। এটি সমাজ নষ্টের অন্যতম কারণ। এজন্য আমি এলাকায় এলাকায় মাদক প্রতিরোধ কমিটিসহ মাদকমুক্ত পৌরসভা গড়তে যা যা করণীয় সব করবো। এজন্য আমি যে কোনও ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত।

বাংলা ট্রিবিউন: পৌরসভাগুলোর উন্নয়নে সরকার প্রতিবছর যে বাজেট পাঠায় তার কতোটা কাজে লাগে?

আব্দুল জলিল: পৌরসভার উন্নয়নে সরকার প্রতিবছর যে বাজেট পাঠায় তা চাহিদার তুলনায় কম হলেও এর শতভাগ কাজে লাগাতে পারলে যথেষ্ট পরিমাণ উন্নয়ন কাজ করা সম্ভব। সরকার এডিবি কর্মসূচিতে যে ৭০-৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় তার অপচয় না হলে ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়ন সম্ভব। বিগত সময় এই বাজেটের প্রায় চল্লিশ-পঞ্চাশ ভাগ অপচয় করা হয়েছে। আমি এই অপচয় শুন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে চাই। ঠিকাদারের লাভের নির্দিষ্ট অংশ ছাড়া সংশ্লিষ্ট কাজের প্রাক্কলিত মূল্যের পুরোটাই আমি কাজে ব্যয় করতে বদ্ধপরিকর।

বাংলা ট্রিবিউন: এবার পৌরসভার কিছু কাজ নিয়ে কথা বলি। সড়ক নির্মাণের দু’একবছরের মধ্যেই ভেঙে যায় কেন? নির্মাণ কাজের মান উন্নয়নে পৌর কর্তৃপক্ষ কতোটুকু দায়বদ্ধ থাকবে?

আব্দুল জলিল: দরপত্রে উল্লেখিত শর্তানুযায়ী কাজ না করাই এর জন্য দায়ী। বিগত বছরগুলোতে এ ধরনের কাজের নজির থাকলেও আমার মেয়াদে এর পুনরাবৃত্তি হবে না। এটা আমি আপনার মাধ্যমে পৌরবাসীকে অবহিত করতে চাই। দরপত্রের শর্তানুযায়ী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অবশ্যই পৌরসভার সংশ্লিষ্ট বিভাগ দায়বদ্ধ থাকবে। উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যাতে নিম্নমানের না হয় সেজন্য পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগের বাড়তি নজরদারি রাখা হবে। বাংলা ট্রিবিউন: পৌরসভার উন্নয়ন কাজের দরপত্র নিয়ে প্রায়ই বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনা যায়। অভিযোগ আছে অতীতে প্রকৃত ঠিকাদাররা কাজ পাননি, একটি সিন্ডিকেট পৌরসভার টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতো। এ বিষয়ে আপনি কী পদক্ষেপ নেবেন?

আব্দুল জলিল: আমি প্রথমবার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি। তবে প্রথম হলেও পৌরসভার কাজের পদ্ধতি ও ধরন সম্পর্কে আমার জানা আছে। এখন থেকে কোনও ধরনের টেন্ডারবাজির সুযোগ থাকবে না। কাউকেই কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। টেন্ডারবাজি বন্ধ ও কাজের গুণগতমানের স্বার্থেই গোপন টেন্ডার চিরতরে বন্ধ করে সম্পূর্ণ উন্মুক্ত পদ্ধতিতে এবং সরকারি বিধি মোতাবেক ই-টেন্ডারের মাধ্যমে ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় টেন্ডার আহ্বান করা হবে। আর তা বাস্তবায়ন করা গেলে আর কোনও বাধা থাকবে না।

কুড়িগ্রামের পৌরমেয়র আব্দুল জলিল-২

বাংলা ট্রিবিউন: আপনি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগের কোনও স্তরেই আপনার নাম ছিল না। এখন রাজনীতিতে সক্রিয় হবেন কি ?

আব্দুল জলিল: আমি সব সময় রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলাম। দল প্রয়োজন মনে করেনি বলে আমাকে কোনও কমিটিতে রাখেনি। এখন দল যদি মনে করে আমাকে কমিটিতে রাখবে। সেটা দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই হবে। কমিটিতে না থাকলেও আমি আওয়ামী লীগ করি এবং করবো।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনাকে বাংলা ট্রিবিউন পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ।

আব্দুল জলিল: আপনাকে ও বাংলা ট্রিবিউনকে কুড়িগ্রাম পৌরবাসী, আমার ও আমার দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা।

১৯৭২ সালে কুড়িগ্রাম পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বর্তমানে এটি ‘ক’ শ্রেণীর পৌরসভায় উন্নিত হয়েছে। এর আয়তন প্রায় ২৭.২০ বর্গকিলোমিটার,জনসংখ্যা প্রায় সোয়া লাখ। নব নির্বাচিত মেয়র আব্দুল জলিল আগামী পাঁচ বছর মেয়াদকালে পৌরবাসীর বিভিন্ন নাগরিক সুবিধাসহ তাদের প্রত্যাশা কতটা পূরণ করবেন তা বিচার বিশ্লেষণ করবেন খোদ পৌরবাসী, এমন প্রত্যাশা এই পৌর মেয়রের।

/জেবি/টিএন/

সম্পর্কিত
বাংলা ট্রিবিউনকে ওয়াসিকা আয়শা খান‘নারীরা যে শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিয়ে চলেছেন, এর নেপথ্যে শেখ হাসিনা’
‘মেয়েদের নিয়ে কেউই ঝুঁকি নিতে চায় না’
নারী দিবস উপলক্ষে একান্ত সাক্ষাৎকারে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী১৫ বছরে নারী শক্তির জাগরণ হয়েছে
সর্বশেষ খবর
বেচাকেনা জমজমাট, কম দামে ভালো পাঞ্জাবিতে আগ্রহ ক্রেতাদের
বেচাকেনা জমজমাট, কম দামে ভালো পাঞ্জাবিতে আগ্রহ ক্রেতাদের
‘মাঝেমধ্যে ভাবি, আইপিএল কি আদৌ ক্রিকেট’
‘মাঝেমধ্যে ভাবি, আইপিএল কি আদৌ ক্রিকেট’
ঈদে আরিয়ানের একমাত্র নির্মাণ ‘তখন যখন’
ঈদে আরিয়ানের একমাত্র নির্মাণ ‘তখন যখন’
করোনার পর মাধ্যমিকে ১০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী কমেছে
করোনার পর মাধ্যমিকে ১০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী কমেছে
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়