X
শনিবার, ১৮ মে ২০২৪
৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

‘খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করতে করতে মৃত্যুর মিছিলে শামিল হয়েছেন’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৪ মে ২০২৪, ১৬:১৪আপডেট : ০৪ মে ২০২৪, ১৬:১৪

‘জেলে কোনও রাজবন্দি নেই’, সরকার পক্ষের এমন বক্তব্যের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ওয়ান ইলেভেনের সময় আপনারা কি চোর হয়ে সেদিন জেলে গিয়েছিলেন? না, রাজবন্দি হয়ে জেলে গিয়েছিলেন, আমি জানতে চাই। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করতে করতে মৃত্যুর মিছিলে শামিল হয়েছেন এখন। আল্লাহই জানেন, কয়দিন পরে তার কী হয়।’

শনিবার (৪ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব মুক্তি পরিষদের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশিদ হাবিবের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।  

এসময় উপস্থিত ছিলেন— বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন।

সাবেক গর্ভনর ফরাসউদ্দিন আহমেদের বক্তব্য তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘কী বিচিত্র বাংলাদেশ। ‘একশ টাকার জন্য চোরের হাত বেঁধে রাখেন, এক হাজার কোটি টাকা যারা চুরি করেন, তাদেরকে স্যালুট দেন’। এই তো বাংলাদেশ। আজকে বাংলাদেশের কঅ করুন অবস্থা। এটা বিশ্বের সবাই জানে— বাংলাদেশ কী দুরবস্থার ভেতরে আছে। আর তার চেয়ে বেশি জানে বিএনপি নেতাকর্মীরা, তারা কী অবস্থায় আছে।’’

প্রতি দিন আমার বাসায় ৫০ থেকে ১০০ জন অভিভাবক, স্ত্রী- সন্তান আসে, এমনটা জানিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘কেউ বলে আমার বাবা জেলে, কেউ বলে আমার স্বামী জেলে, কেউ বলে আমার ছেলে জেলে, কেউ বলে আমার ভাই জেলে। কত জনের জন্য কথা বলবো, আর কত জনের জন্য সান্ত্বনা দেবো।’ এই দেশ স্বাধীন করেছিল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান— এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস। তার দল বিএনপি'র যে নেত্রী, খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করতে করতে মৃত্যুর মিছিলে শামিল হয়েছেন এখন। আল্লাহই জানেন, কয়দিন পরে তার কী হয়। তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।’

আব্বাস বলেন, ‘আমরা কতবার বলেছি, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে অথবা চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠান। ওনার অবস্থা বেশি ভালো না। সরকার বলছে আইন নাই। আইন থাকবে না কেন, আইন কি মানুষের জন্য, না আইনের জন্য মানুষ?’ এ সময় রাশেদ খান মেনন ও আ স ম আব্দুর রবের চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার কথা তুলে ধরেন মির্জা আব্বাস। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া তাদেরকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছিলেন। আ.স.ম আব্দুর রবকে বন্দি অবস্থায় এবং রাশেদ খান মেননকে পাঠিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। অথচ তারা (সরকার) বলছেন,  ‘জিয়াকে বিদেশে পাঠানো যাবে না। অর্থাৎ তাকে হত্যা করতে হবে। এমনভাবেই করতে হবে, যাতে কেউ কিছু বলতে না পারে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘কাদের সাহেব বললেন, ‘জেলে কোনও রাজবন্দি নেই’। কী সুন্দর কথা বললেন কাদের সাহেব, আমার খুব হাসি পায়। কাদের সাহেব, আপনি যখন ওয়ান ইলেভেনে জেলে ছিলেন— আপনি কি চোর হয়ে সেদিন জেলে গিয়েছিলেন, নাকি রাজবন্দি হয়ে জেলে গিয়েছিলেন? আমি জানতে চাই। এক-এগারোর সময় আজকের যিনি প্রধানমন্ত্রী উনিও জেলে গিয়েছিলেন। উনি কী হয়ে জেলে গিয়েছিলেন? আমি জানতে চাই।’’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আপনাদের ( সরকার) মনে থাকে না, একটা মামলা দেবেন, জেলে পাঠাবেন। আর বলবেন, রাজনৈতিক কোনও রাজবন্দি জেলে নাই। এরা হলো মামলার আসামি। আরে কোন মালমার আসামি? রাজনৈতিক মামলার আসামি। যারা আপনাদের বিরুদ্ধে কথা বলে।’

 গ্রেফতার করে পৃথিবীর কোনও আন্দোলন, কোনও স্বৈরশাসক থামাতে পেরেছে বলে আমার মনে হয় না, এমন মন্তব্য করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমার জানা নেই। একদিন না একদিন এই স্বৈরশাসকের পতন ঘটবেই জনরোষের মুখে। এটাকে কেউ ঠেকাতে পারবে না।’

অপরদিকে দেশে গণতন্ত্র, সুশাসনের আবহাওয়া তৈরি করতে সর্বশেষ লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করতে হবে ব‌লে জা‌নি‌য়ে‌ছেন বিএন‌পির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তি‌নি সব নেতাকর্মীকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সবাইকে আহ্বান করছি, আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করবো। কিন্তু আমাদের গায়ে যদি লাঠির বারি পড়তে থাকে, তাহলে কতদিন শান্তিপূর্ণ থাকবো? প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ একসঙ্গে চালাতে হবে। না হলে আরও অনেক হাবিবুর রশিদ হাবিবদের কারাগারে যেতে হবে, প্রতিকার পাওয়া যাবে না। কারণ, হাইকোর্ট আওয়ামী লীগ, পুলিশ আওয়ামী লীগ, প্রশাসনের ডিসি-এসপিরা ছাত্রলীগ। এরকম একটা পরিবেশে মানুষের দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কোনও ন্যায়বিচার নেই। মানুষ আদালতে যায় প্রতিকার পাওয়ার জন্য, সেটাও নেই।’

রিজভী আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দুদিন ধরেই বলছেন— তাকে নাকি কিছু রাজনৈতিক দল উৎখাতের চেষ্টা করছে। আমার কথা হচ্ছে, রাজনৈতিক দল উৎখাতে চেষ্টা করবে কেন? আপনি (শেখ হাসিনা) ও আপনার সরকার উৎখাত হোক, এটা তো জনগণ চাচ্ছে। আর ক্ষমতায় আসা না আসা এটা কোনও রাজনৈতিক দলের ওপর নির্ভর করে না। এটা নির্ভর করে জনগণের ওপর। আপনি জনগণের মালিকানা কেড়ে নিয়েছেন, ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছেন, বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছেন। আপনার ক্ষমতা চলে যাক, এটা কিন্তু জনগণ চায়।’ ///

/এএইচএস/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
স্ত্রীকে নিয়ে সিঙ্গাপুর গেলেন মির্জা আব্বাস
ইকবাল হাসান টুকুর বাসায় মির্জা ফখরুল ও আব্বাস
বিএনপি পরোক্ষভাবে এখনও বন্দি: মির্জা আব্বাস
সর্বশেষ খবর
মেধাবী দুই বোনের স্বপ্ন পূরণে ‘বাধা’ আর্থিক সংকট
মেধাবী দুই বোনের স্বপ্ন পূরণে ‘বাধা’ আর্থিক সংকট
জুভেন্টাসকে শিরোপা জিতিয়েও যে কারণে চাকরি হারালেন অ্যালেগ্রি 
জুভেন্টাসকে শিরোপা জিতিয়েও যে কারণে চাকরি হারালেন অ্যালেগ্রি 
‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে খাদ্যে ফরমালিন মেশানো বন্ধ হতো’
‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে খাদ্যে ফরমালিন মেশানো বন্ধ হতো’
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকরা কেন ঢুকবেন, প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকরা কেন ঢুকবেন, প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের
সর্বাধিক পঠিত
অতিরিক্ত ডিআইজি মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ ইসির
অতিরিক্ত ডিআইজি মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ ইসির
যাত্রীর জামাকাপড় পুড়িয়ে পাওয়া গেলো সাড়ে চার কোটি টাকার স্বর্ণ
যাত্রীর জামাকাপড় পুড়িয়ে পাওয়া গেলো সাড়ে চার কোটি টাকার স্বর্ণ
ইসরায়েলগামী অস্ত্রের জাহাজ নোঙর করতে দেয়নি স্পেন
ইসরায়েলগামী অস্ত্রের জাহাজ নোঙর করতে দেয়নি স্পেন
দাম কমেছে সবজি-মাংসের, তবু পরিস্থিতি অস্বাভাবিক
দাম কমেছে সবজি-মাংসের, তবু পরিস্থিতি অস্বাভাবিক
সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের স্থান পরিদর্শন প্রধান বিচারপতির
সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের স্থান পরিদর্শন প্রধান বিচারপতির