X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১
জেলা পরিষদ নির্বাচনের কথা জানালেন প্রধানমন্ত্রী

আ.লীগের কার্যনিবার্হী সংসদে আশরাফ -কাদের বাহাস

এমরান হোসাইন শেখ ও পাভেল হায়দার চৌধুরী
২৪ জুলাই ২০১৬, ০১:০২আপডেট : ২৪ জুলাই ২০১৬, ১৯:৩৭

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও ওবায়দুল কাদের দলের গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র অনুসরণ করা না করা নিয়ে বিতর্কে জড়ালেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের। শনিবার গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কার্যনিবার্হী সংসদের বৈঠকে দলের পক্ষ থেকে দিবস কেন্দ্রীক কর্মসূচিগুলো পালনে অনেক ক্ষেত্রে গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র অনুসরণ করা হয় না বলে মন্তব্য করেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। এ সময় তিনি বেশ কয়েকটি ঘটনার উদাহরণ টানেন। এরপর ওবায়দুল কাদের ফ্লোর নিয়ে বলেন, গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্রের বাইরে দলের পক্ষ থেকে কোনও দিবস বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পালন করা হয় না। সেটা করা হয় এগুলো মেনেই। এ সময়ে দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফের বক্তব্যকে সমর্থন দিয়ে ব্যাখ্যা দিলে দুই নেতার বিতর্কের অবসান হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা, জেলা পরিষদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বৈঠকের এজেন্ডা জাতীয় শোক দিবস, ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী বোমা হামলা দিবস ও একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবসের কর্মসূচি চূড়ান্ত করতে গিয়ে জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দিবস কেন্দ্রীক কর্মসূচি পালনে অনেকে ক্ষেত্রে গঠনতন্ত্র বা ঘোষণাপত্রের নির্দেশনা অনুসরণ করা হয় না বলে মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্রের বাইরের দিবসগুলো কার্যনির্বাহী সংসদের এজেন্ডায় থাকা নিয়েও  প্রশ্ন তোলেন।  দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনসহ কয়েকটি দিবসের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, আমরা দলীয়ভাবে যেসব দিবস পালন করি সে বিষয়ে কার্যনিবার্হী সংসদের বৈঠকে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়। কিন্তু  আমরা এমন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেই যেগুলো আমাদের গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্রে নেই। এসব দিবস আওয়ামী লীগের ঘটা করে পালন করা উচিত নয়। অথচ দেখা যায় এসব দিবসে দলের দপ্তর শাখা থেকে একটি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এসব দিবসের কর্মসূচি কেন্দ্রীয়ভাবে না করে সহযোগী বা ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে পারে। এ সময় ২১ আগস্ট কী দিবস হিসেবে পালন করা হবে সেটা নিয়েও কথা বলেন আশরাফ। তিনি বলেন, আমরা অনেক সময়ে বলি ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যাপ্রচেষ্টা দিবস। আবার আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী হত্যা দিবসও এটা বলেন অনেকে। কিন্তু আমি মনে করি এটা হবে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা দিবস।

 দিবস কেন্দ্রীক কর্মসূচির বিষয়ে আশরাফের বক্তব্য চ্যালেঞ্জ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, দলের পক্ষ থেকে যেসব দিবস পালন করা হয় তা গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র মেনেই করা হয়।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশরাফের বক্তব্যের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে বলেন, আমার জন্মদিন ঘটা করে পালন বা এ নিয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে কর্মসূচি দেওয়ার দরকার কী। ব্যক্তিগতভাবে জন্মদিনে সকলে শুভেচ্ছা জানালেই তো হয়। আবার শেখ কামালের জন্মদিনেও আবাহনী কর্মসূচি দেয়। আমরাই তো ওই কর্মসূচিতে যাই। এ ক্ষেত্রে দলের পক্ষ থেকে আলাদা কর্মসূচির দরকার পড়ে না।  প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের আগে আব্দুল মতিন খসরু, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও বিএম মোজাম্মেলসহ কয়েকজন সদস্য সৈয়দ আশরাফের বক্তব্যকে সমর্থন করেন।
জানা গেছে, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী তৃণমূল পর্যায় জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবিরোধী কমিটি দ্রুত গঠনের নির্দেশনা দেন। বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের এসব কমিটি গঠন প্রক্রিয়া মনিটরিং ও সমন্বয় করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।

হেফাজতে ইসলামের জুমার খুতবা চ্যালেঞ্জ করার প্রসঙ্গও ওঠে আসে আলোচনায়। এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, এটা তো কোনও খুতবা নয়। এটা হচ্ছে বয়ান, খুতবার আগে যেটা পড়া হয়ে থাকে।

বৈঠকে সাম্প্রতিক জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের আগেও এ ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনা ও হত্যাকাণ্ড আমরা দেখেছি। ওই সময় ৬ জন সংসদ সদস্যকেও হত্যা করা হয়। ওই সময় বিশ্বের কাছে বঙ্গবন্ধুর সরকারকে অজনপ্রিয় করার জন্য এসব হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। এখনও সেই ধরনের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে বিশ্ববাসী আমাদের সঙ্গে রয়েছে। বিশ্ববাসীর কাছ থেকে আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় তারা আমাদের পাশে থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।

জানা গেছে, বৈঠকে কয়েকজন নেতা সম্মেলনের সময়ে কুরবানি ও দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানালে শেখ হাসিনা পঞ্জিকা দেখে জানান, কুরবানি বা পূজায় সম্মেলন অনুষ্ঠানে কোনও ব্যাঘাত ঘটবে না। ওই তারিখেই আমরা সম্মেলন করতে চাই। এ সময় তিনি সবাইকে সম্মেলনের জোর প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দেন। আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

জানা গেছে, বৈঠকে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচনের প্রসঙ্গ তোলেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শিগগিরই জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা জানান। একই সঙ্গে তিনি দলের নেতাদের জেলা পরিষদ নির্বাচনের বিষয়ে আইনকানুন দেখতে বলেন। পরবর্তী বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত: জেলা পরিষদ নির্বাচনের লক্ষ্যে গত বছর নভেম্বরে সংসদে বিল উত্থাপন হলেও পরবর্তীতে সংসদীয় কমিটি ওই বিলটি পাসের সুপারিশ না করে বাতিলের সুপারিশ করে। এরপর থেকে জেলা পরিষদ নির্বাচন ঝুলে রয়েছে।

 আরও পড়তে পারেন: খালেদা জিয়ার জাতীয় ঐক্য কত দূর?

আরও পড়তে পারেন: পাবনায় পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

ইএইচএস/পিএইচসি/ এমএসএম /

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
দ্বিতীয় বিয়ে করায় ছেলের আঘাতে প্রাণ গেলো বাবার
দ্বিতীয় বিয়ে করায় ছেলের আঘাতে প্রাণ গেলো বাবার
নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, শিশুসহ নিহত ৮
নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, শিশুসহ নিহত ৮
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
লাল কৃষ্ণচূড়া, বেগুনি জারুলে ছুঁয়ে যায় তপ্ত হৃদয়
লাল কৃষ্ণচূড়া, বেগুনি জারুলে ছুঁয়ে যায় তপ্ত হৃদয়
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!