X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাফল্যের প্রচারণায় নামছে আ. লীগ

পাভেল হায়দার চৌধুরী
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ২০:৫৪আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ২১:০০

আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে নিজেদের সাফল্যের প্রচারণায় নেমেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এরই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে মন্ত্রী-এমপিদের জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করছেন ক্ষমতাসীনরা। একই সঙ্গে গত সাড়ে সাত বছরে সরকার যেসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করেছে, তার প্রচারের ওপর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে দলটি। ক্ষমতাসীন দলের একাধিক নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতার সঙ্গে  আলাপকালে এমন তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, যে গতিতে সরকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করেছে, সে তুলনায় শুধু প্রচারণার ঘাটতির কারণে জনগণের কাছে সময়মতো সব বার্তা পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। সরকারের বর্তমান মেয়াদের আড়াই বছর পার করার পর বিষয়টি আওয়ামী লীগকে ভাবিয়ে তুলেছে। সাফল্যের প্রচারণার জন্য কী করা যায়, এ নিয়ে দলের সব পর্যায়ের নেতাদের কাছে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে।

সাফল্যের প্রচারণায় পরামর্শ চাওয়া হয়েছে মন্ত্রীদের কাছেও। কী কী পদক্ষেপ নিলে দ্রুত সাফল্যের বিষয়টি দ্রুত জনগণের কাছে পৌঁছানো যাবে,  সেই কৌশল নিয়ে তাদের এগিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এ লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে পয়েন্ট আকারে তা তুলে আনতে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকেও বলা হয়েছে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে থেকে। 

সভাপতিমণ্ডলীর দুই সদস্য জানান, আগামী নির্বাচন যখনই হোক না কেন, সেটা সবার অংশগ্রহণেই হবে। সেক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা ঊর্ধ্বমুখী না থাকলে ফল বিপর্যয় ঘটবে। তাই জনপ্রিয়তা বাড়ানোর প্রতি এখন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকেছে সরকার। আর এ লক্ষ্যে সরকারির ধারাবাহিক সাফল্যের কথাও জনগণের মাঝে প্রচার করার উদ্যোগ নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি।

এ প্রসঙ্গে সম্পাদকমণ্ডলীর তিন জন নেতা বলেন, ‘এই সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর স্থানীয় সরকারের অধীনে যে সব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাতে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়েছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অনুযায়ী আওয়ামী লীগের ভোট বাড়েনি। তবে সরকারের প্রতি আস্থা-বিশ্বাস বেড়েছে। তাই এ পর্যায়ে দলের প্রতি যাতে আস্থা-বিশ্বাস আরও বাড়ে এবং ভোট আসলে নৌকায় মানুষ ভোট দেয়, সেই চেষ্টায় রয়েছে আওয়ামী লীগ। নতুন বছরের টার্গেট হবে একটাই—দলের জনপ্রিয়তা  আরও বাড়ানো। আসন্ন সম্মেলনেও সে ধরনের নেতৃত্ব বেছে নেওয়া হবে, যারা দলের জন্যে সর্বোচ্চ শ্রম দিতে পারবেন।  

সরকারের তিন জন মন্ত্রী জানান, এ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যে হারে হয়েছে তাতে, জনপ্রিয়তা নিয়ে ভাবার কথাই ছিল না আওয়ামী লীগের। কিন্তু দেখা গেছে, গত মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাকালে রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর ভরাডুবি ঘটেছে। এটা ক্ষমাসীন আওয়ামী লীগকে শুধু হতবাক করেনি, সে সময়ে চরম দুশ্চিন্তায়ও ফলে দেয়। জনপ্রিয়তায় ধসের বার্তা দেয়। এরপর কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরাজিত হন।

সূত্রগুলো বলছে, এ পর্যায়ে প্রতিবেশী একটি রাষ্ট্রও দলের সাফল্যগাথা যথাযথভাবে প্রচারিত না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, সরকার যেহারে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করতে সক্ষম হয়েছে, সে হারে দলের প্রচারণা হয়নি। ফলে আশানুরূপ জনপ্রিয়তা বাড়াতে সক্ষম হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পরামর্শ দিয়েছে দেশটি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই সরকারের সাড়ে সাত বছরের মেয়াদে দেশের সব সেক্টরে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে। এটা আওয়ামী লীগের চিরশত্রুও বিশ্বাস করে।’ তিনি বলেন, ‘কৃষি থেকে শুরু করে শিক্ষা, যোগাযোগ, নারীর ক্ষমতায়ন—এমন কোনও ক্ষেত্র নেই, যেখানে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। সে তুলনায় জনপ্রিয়তা কতখানি বেড়েছে, তা বিচার করবে দেশের জনগণ।একটি নির্বাচনের পর পরই আরেকটি নির্বাচনের প্রস্তুতি সব সময় আওয়ামী লীগের থাকে।’      

জানতে চাইলে দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘আমরা সরকারে থেকে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড শেষ করা এবং দলের জনপ্রিয়তা ঊর্ধ্বমুখী করতে সর্বোচ্চ শ্রম দিতে চাই। এজন্যে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র বেশি বেশি প্রচারে মনোনিবেশ করা হয়েছে। উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেই আগামী নির্বাচনে আবার ক্ষমতায় আসতে চাই আমরা।’ তিনি বলেন, ‘সরকারের ভালো কাজগুলোর খবর সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা অবশ্যই বাড়বে।’

জানতে চাইলে সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বলেন, ‘প্রত্যেক সরকারই তার শেষ মেয়াদে দলের জনপ্রিয়তা কতখানি বাড়লো বা কমলো তা খুঁজে বের করতে চায়। কারণ পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণের আগে দলের জনপ্রিয়তাই একমাত্র পুঁজি, আর সেটার ওপর ভিত্তি করেই নির্বাচনের ফলাফল ঘরে আসে। এজন্য সরকারের সাফল্যের চিত্র প্রচারের লক্ষ্যে কাজ করতেছি।’ জাফরউল্যাহ বলেন, ‘সরকারের উন্নয়ন কাজ বিবেচনা করলে আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগই জিতবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এখন দলের জনপ্রিয়তা কতখানি বাড়লো এবং কিভাবে তা আরও বাড়ানো যায় সেই কৌশলে কাজ করছি।’

 আরও পড়ুন: মঈন খানের বাসায় কূটনীতিকদের বৈঠক, আলোচনায় নির্বাচন!

/এমএনএইচ/

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ডিএনসিসির কাওরান বাজার আঞ্চলিক অফিস যাচ্ছে মোহাম্মদপুরে
ডিএনসিসির কাওরান বাজার আঞ্চলিক অফিস যাচ্ছে মোহাম্মদপুরে
ভাতা বাড়ানোর আশ্বাসে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
ভাতা বাড়ানোর আশ্বাসে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
সরকারি চাকরির আশ্বাস ও ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ
সরকারি চাকরির আশ্বাস ও ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ
আইসিসি এলিট প্যানেলে প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার সৈকত
আইসিসি এলিট প্যানেলে প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার সৈকত
সর্বাধিক পঠিত
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
রাজধানীর ৫ জায়গায় তরমুজ বিক্রি হবে কৃষকের দামে
রাজধানীর ৫ জায়গায় তরমুজ বিক্রি হবে কৃষকের দামে