X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপির স্থায়ী কমিটির শূন্য ৩ পদে আলোচনায় ৫ নেতা

সালমান তারেক শাকিল
০৯ অক্টোবর ২০১৬, ২৩:২২আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০১৬, ২৩:৪০


আবদুল্লাহ আল নোমান, সাদেক হোসেন খোকা, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, হাফিজ উদ্দিন আহমদ ও আবদুল আউয়াল মিন্টু চলতি বছরের আগস্টে ঘোষিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির  ১৭ ও ১৮ নম্বরে কোনও সদস্যের নাম বলা হয়নি। ২৭ সেপ্টেম্বর ছয় নম্বর সদস্য আসম হান্নান শাহের মৃত্যুর পর আরও একটি পদ শূন্য হয়। এর ফলে দলটির স্থায়ী কমিটিতে শূন্য পদের সংখ্যা এখন তিন। এরইমধ্যে তিনটি শূন্যপদে কারা  মনোনীত হচ্ছেন, এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে দলের ভেতর।

বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অন্তত ৫ জন স্থায়ী কমিটিতে স্থান পেতে পারেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, সাদেক হোসেন খোকা, হাফিজ উদ্দিন আহমদ ও আবদুল আউয়াল মিন্টু। এই পাঁচজনের মধ্যে যেকোনও তিনজনকে স্থায়ী কমিটিতে নিয়োগ দিতে পারেন খালেদা জিয়া। এর বাইরে ব্যারিস্টার আমিনুল হক, মিজানুর রহমান মিনু, মোর্শেদ খান, মোহাম্মদ শাহজাহানের নাম আছে। যাদের সম্ভাবনা নিয়েও অনেকে উচ্চকিত।

বিএনপির একজন নবনিযুক্ত ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘আসম হান্নান শাহ দলে মর্যাদাবান নেতা ছিলেন। তার মৃত্যুর পরই তার পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়াটা এখনই ঠিক হবে না। এটা খুব গোপনে আলোচনা আছে দলে, তবে প্রকাশ্যে একেবারেই নেই। পূজা শেষ হওয়ার পর এটি নিয়ে খালেদা জিয়া স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা করতে পারেন।’

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে খালেদা জিয়া ভাবছেন। সময় হলে জানা যাবে।’

বিএনপির একটি সূত্র বলছে, গত আগস্টে ঘোষিত স্থায়ী কমিটিতে ১৯ সদস্যের মধ্যে ১৭ জনের নাম ঘোষণা করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওই সময় বাকি দু’জনের নাম পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছিলেন মহাসচিব। এরপর দলে ১৭ ও ১৮ নম্বর স্থানে তারেক রহমানের স্ত্রী জোবায়দা রহমান ও প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলী রহমানের নাম শোনা যায়। এ নিয়ে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে আলোচনাও ছিল। যদিও বিএনপির একাধিক ভাইস-চেয়ারম্যান এ ধরনের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন।

বিএনপির এক ভাইস চেয়ারম্যান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘খালেদা জিয়া আছেন, তারেক রহমান আছেন। এক্ষেত্রে জোবায়দা রহমান ও শর্মিলী রহমানের স্থায়ী কমিটিতে থাকা-না থাকার বিষয়টি এখনও সম্ভাবনাহীন।

স্থায়ী কমিটির সদস্যরা হলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, তরিকুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান, আ স ম হান্নান শাহ, এম কে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মইন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাউদ্দিন আহমেদ।’

বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, স্থায়ী কমিটিতে শূন্যপদে এগিয়ে আছেন আবদুল্লাহ আল নোমান। তার ব্যাপারে দলের সর্বস্তরেই ইতিবাচক আলোচনা আছে। যদিও তিনি মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার কারণে সাকা পরিবারের যে বিরোধিতা করেন, সে কথা বিএনপির নেতাকর্মীরা কেউ-কেউ বলেন। বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা, নোমানের পদ পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানও এ প্রতিবেদককে বলেছিলেন, ‘আরও তো দুটি পদ খালি আছে। সম্ভাবনা তো শেষ হয়ে যায়নি।’ যদিও আবদুল্লাহ নোমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটা নিয়ে নিজে থেকে কিছু করব না। অনেকে এসে নানা কথা বলেন। কিন্তু সবকিছুই চেয়ারপারসনের  হাতে।

ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা মনে করেন, আবদুল্লাহ আল নোমান স্থায়ী কমিটিতে আকাঙ্ক্ষিত হলেও তিনি নীরব হননি। এর মধ্যে কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে বিএনপির অন্তত ২০ জন নেতা নীরব অবস্থানে চলে গেছেন। এড়িয়ে গেছেন খালেদা জিয়ার সৌদি সফরের সময় বিমানবন্দরে আসা-যাওয়াও। উল্টোদিকে কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে নীরব থাকলেও খালেদা জিয়ার আয়োজনে অংশ নিয়েছেন আবদুল্লাহ আল নোমান।

নোমানের বিরোধিতাকারী একটি অংশের দাবি, ওয়ান-এলেভেনের সময় নোমান বিদেশে ছিলেন। এ কারণেই খালেদা জিয়ার কাছে তিনি বিতর্কিত। এ নিয়ে নোমানের এক ঘনিষ্ঠ ছাত্রনেতার ভাষ্য, ‘ওয়ান-ইলেভেনে নোমান বিদেশে থাকার সবচেয়ে বড় কারণ বিএনপির বহিষ্কৃত মহাসচিব আবদুল মান্নান ভুঁইয়া। মান্নানের খুব কাছের বলে নোমান দেশত্যাগ করেছিলেন। ওই সময় সম্পর্কের কারণে হলেও মান্নানের সঙ্গে থাকতে হতো তাকে।  এ কারণেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে বেঈমানি না করে দেশ ছেড়েছিলেন।’ এই নেতা আরও জানান, তিনি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে হলে দেশে ফিরে বিমানবন্দর থেকে সোজা চেয়ারপারসনের বাসায় যেতেন না। যদিও নোমান এসব ব্যাপারে আলোচনায় অনুৎসাহী। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি অপেক্ষা করছি।’

ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানের সম্ভাবনাও দেখছেন কেউ-কেউ। ইতোমধ্যে খালেদা জিয়ার কাছে বিশ্বস্ত হওয়ার সুবাদে তৃণমূল গোছানোর দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। শূন্য তিনটি পদের একটিতে তাকে দেখা যেতে পারে বলেও মনে করেন অনেকে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে কিছু বলতে পারব না।’

অঢেল অর্থের কারণে আবদুল আউয়াল মিন্টুকেও স্থায়ী কমিটিতে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ব্যবসার স্বার্থে মিন্টু নিজে থেকেই স্তায়ী কমিটিতে না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এমন গসিপও আছে বিএনপিতে। জানতে চেয়ে তাকে ফোন করা হলে তার সেলফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা হাফিজ উদ্দিন আহমদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটা টপ সিক্রেট। এ ব্যাপারে কোনও আলোচনা নেই।’

 আরও পড়ুন: ভাঙছে জাগপা

/এমএনএইচ/

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মুক্তিযোদ্ধা চাচাকে হত্যা, ভাতিজার যাবজ্জীবন
মুক্তিযোদ্ধা চাচাকে হত্যা, ভাতিজার যাবজ্জীবন
ডিএনসিসি ও চীনের আনহুই প্রদেশের সহযোগিতামূলক চুক্তি সই
ডিএনসিসি ও চীনের আনহুই প্রদেশের সহযোগিতামূলক চুক্তি সই
চুয়েটের দুই শিক্ষার্থীকে চাপা দেওয়া বাসের চালক গ্রেফতার
চুয়েটের দুই শিক্ষার্থীকে চাপা দেওয়া বাসের চালক গ্রেফতার
টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে ফের পাকিস্তানের এক নম্বর বোলার শাহীন
টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে ফের পাকিস্তানের এক নম্বর বোলার শাহীন
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…