X
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

জেলা পরিষদ নির্বাচন: বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেবে না আ. লীগ

পাভেল হায়দার চৌধুরী
২৯ ডিসেম্বর ২০১৬, ২১:৩৭আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬, ২১:৪১

আওয়ামী লীগ সদ্য অনুষ্ঠিত জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোনও অ্যাকশনে যাবে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এই নির্বাচনে ৩০ জেলায় আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। এর মধ্যে  দল-সমর্থিত প্রার্থীদের হারিয়ে  ১৩ জেলা পরিষদে বিদ্রোহী প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। গত বুধবার অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে বিজয়ী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের মধ্যেই  অনেকেই আছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে। তবে,  বিদ্রোহী প্রার্থীদের কেন্দ্র করে জেলায়-জেলায় দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হলেও এসব প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনও অ্যাকশনে যাবে না ক্ষমতাসীন দলটি। তাদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগও আনা হবে না। ক্ষমতাসীন দলটির নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপকালে এমন তথ্য জানা গেছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন দলীয়ভাবে হলেও ব্যতিক্রম ছিল জেলা পরিষদ নির্বাচন। এই নির্বাচন দলীয়  প্রতীকে হয়নি, কিন্তু দলীয় প্রার্থীদের সমর্থন দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে যাছাই-বাছাই শেষে আওয়ামী লীগ ৬১ জেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রের সমর্থনে সন্তুষ্ট করতে পারেনি আওয়ামী লীগের জেলা নেতাদের। অন্তত ৪০টি জেলায় স্বতন্ত্রের নামে প্রার্থী হয়েছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের বাইরে জেলা পরিষদ নির্বাচনে কোনও প্রার্থী না থাকায় বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ এবার কোনও কঠোর ব্যবস্থা নেবে না।  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের  কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে গেলে সব জেলায়ই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হতেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা। তাই বিদ্রোহী দমনে কোনও অ্যাকশনে যায়নি ক্ষমতাসীন দলটি।     

জানা গেছে, জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দিতে আওয়ামী লীগ প্রত্যেক জেলা থেকে প্রার্থী তালিকা সংগ্রহ করে। জেলা থেকে পাঠানো প্রার্থী তালিকা নিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড কয়েকটি বৈঠকে মিলিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এসব বৈঠকে জেলা থেকে পাঠানো প্রার্থীতালিকা চুলচেরা বিশ্লেষণ শেষে ৬১ জেলায় প্রার্থী মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। গত ২৫ নভেম্বর গণভবন থেকে সংবাদ সম্মেলন করে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ৬১ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। এরপর ২১ জেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।  

সূত্র জানায়, ক্ষমতাসীন দলটি ছাড়া কোনও রাজনৈতিক দল অংশ না নিলেও পাবনা, জামালপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে বিরোধ চরমে ওঠে। এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতা সেসব জেলা সফরেও যান। কিন্তু তারা বিদ্রোহী প্রার্থীদের দমন করতে পারেননি। জামালপুরে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী মির্জা আজমের অনুসারী প্রার্থীর কাছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটা তো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন নয়। তাই এখানে কেউ ব্যক্তিগতভাবে দাঁড়ালে আওয়ামী লীগের কিছু করার থাকে না। দলীয়ভাবে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের ওপর এর দায় আসে।’ তিনি বলেন, ‘জেলা পরিষদ নির্বাচনে আমরা কেবল একজন প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছি। সেখানে আরেক জন প্রার্থী নির্বাচন করলে আমরা তো তাকে বসিয়ে দিতে পারি না। জেলা পরিষদ নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতায়পূর্ণ হোক তা চেয়েছে আওয়ামী লীগ। ’

সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বলেন, ‘জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থন দিয়েছে একজন প্রার্থীকে। সেখানে আরেকজন দাঁড়ালে আওয়ামী লীগ কি তাকে বসিয়ে দিতে পারে? নির্বাচন করার অধিকার তো সবার আছে। এছাড়া এই নির্বাচন যেহেতু দলীয়ভাবে হয়নি, সেহেতু আমরা বিদ্রোহী প্রার্থীর বিষয়টি আমলে নেইনি।’ তিনি বলেন, ‘জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনও রাজনৈতিক দল অংশ নেয়নি। আমরা চেয়েছি নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক। তাই আওয়ামী লীগ সমর্থন দিয়েছে ঠিকই অনেক জেলায় উন্মুক্তও করে দেওয়া হয়েছে।’    

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জেলা পরিষদ নির্বাচনকে আমরা নির্দলীয় নির্বাচন হিসেবেই দেখছি। কতটা অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পেরেছি সেটাই আমাদের কাছে মুখ্য।’ তিনি বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে যদি শৃঙ্খলাভঙ্গের মতো কোনও ঘটনা ঘটে, সেটা আমরা পরবর্তী সময়ে দেখব।’   

আরও পড়ুন: এক ভোট এক মোটরসাইকেল!

/এমএনএইচ/

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
উত্তর গাজায় আবারও হামলা জোরদার করলো ইসরায়েল
উত্তর গাজায় আবারও হামলা জোরদার করলো ইসরায়েল
ফরিদপুরে দুই নির্মাণ শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির তদন্ত কমিটি
ফরিদপুরে দুই নির্মাণ শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির তদন্ত কমিটি
বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়ুলেন মুসল্লিরা
বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়ুলেন মুসল্লিরা
সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানিতে চাকরি, ৫ ক্যাটাগরির পদে নিয়োগ
সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানিতে চাকরি, ৫ ক্যাটাগরির পদে নিয়োগ
সর্বাধিক পঠিত
রাজকুমার: নাম নিয়ে নায়িকার ক্ষোভ!
রাজকুমার: নাম নিয়ে নায়িকার ক্ষোভ!
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
মাতারবাড়ি ঘিরে নতুন স্বপ্ন বুনছে বাংলাদেশ
মাতারবাড়ি ঘিরে নতুন স্বপ্ন বুনছে বাংলাদেশ
সাবেক আইজিপি বেনজীরের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে দুদকের কমিটি
সাবেক আইজিপি বেনজীরের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে দুদকের কমিটি
অতিরিক্ত সচিব হলেন ১২৭ কর্মকর্তা
অতিরিক্ত সচিব হলেন ১২৭ কর্মকর্তা