নৌপরিবহনমন্ত্রী শাহাজাহান খানকে পরিবহন ধর্মঘটের নেপথ্যের নায়ক হিসেবে অভিহিত করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, ‘একজন বাস চালককে সাজা দিয়েছে আদালত। কিন্তু জনগণকে ব্ল্যাকমেইল করে এখন সারাদেশে পরিবহন ধর্মঘট পালন করা হচ্ছে। এর পেছনের মূল নায়ক কে, তা এখন সবাই জেনে গেছে।’
বুধবার (১ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণে বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের রহস্য চাপা থাকবে না— এমন দাবি করে গয়েশ্বর বলেন, ‘যখন নির্বাচিত সরকার আসবে, সেই সরকার অবশ্যই বিডিআর হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে পারবে। তখনই প্রমাণ হবে, এর সঙ্গে কে বা কারা জড়িত ছিল।’
গয়েশ্বর আরও বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের বিচার খোলা মাঠে হবে। তখন গণমাধ্যমে যেসব সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তার সবগুলোই সত্য না হলেও সবগুলো মিথ্যাও নয়। বিদ্রোহের ঘটনা প্রকাশ হয়েছে। কিন্তু কিলিং স্কোয়াডে কারা ছিল, তাদের সম্পর্কে কিছুই প্রকাশ করা হয়নি, তাদের বিচারও হয়নি। অনেকেই বলেন, সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় এদের কর্মসংস্থানও হয়েছে।’
বিডিআর বিদ্রোহের জন্য সাবেক সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদকে দায়ী করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘মঈন হলেন এই হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক। সরকারের নির্দেশে সেদিন সেনাবাহিনী বিডিআরদের রক্ষার জন্য যায়নি। বর্তমানে জনগণ নয়, পুরোপুরি নিজেদের স্বার্থে প্রশাসনকে ব্যবহার করছে সরকার।’
পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর বলেন, ‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর এখন আবার নতুন করে সুর তোলা হয়েছে, সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে হবে। কিন্তু আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আমরা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে যাইনি। ভবিষ্যতেও নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ছাড়া কোনও নির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বাইরে রেখে সরকার নির্বাচন করতে চায়— এমন অভিযোগ করে গয়েশ্বর বলেন, ‘তিনি এমন কী অপরাধ করেছেন যে তার সাজা হবে, তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না? আমরা বলতে চাই, বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনের চিন্তা অবাস্তব।’
সাবেক সেনাপ্রধান ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল আলম চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, নির্বাহী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) মিজানুর রহমান মিজান প্রমুখ। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন বিএনপির সহ প্রচার সম্পাদক আলিমুল ইসলাম খান আলিম।
আরও পড়ুন-
আদালতের রায় বদলানোর কৌশলে ববি হাজ্জাজের নিন্দা
গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে: খেলাফত মজলিস
/আরএআর/টিআর/
