X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

২০০৮ সালের আগের নির্বাচনি সীমানায় ফিরতে চায় বিএনপি

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৮ জুন ২০১৭, ২০:০৮আপডেট : ১৮ জুন ২০১৭, ২০:১০

 

২০০৮ সালের আগের নির্বাচনি সীমানায় ফিরতে চায় বিএনপি ২০০৮ সালের আগের নির্বাচনি সীমানায় ফিরতে চায় বিএনপি। এজন্য নির্বাচনি আসনগুলো পুনর্বিন্যাস করে করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে চায় দলটি। একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রবিবার দলের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের এ অবস্থান জানায়।

বিএনপি নেতারা সিইসির সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে বেরিয়ে প্রতিনিধি দলের প্রধান ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওয়ান ইলেভেনের সরকার ক্ষমতায় আসার পর তৎকালীন নির্বাচন কমিশন ১৩৩ আসনে সীমানা পুনর্নির্ধারণের নামে সংসদীয় আসনগুলোর সবকিছু হচপচ করে দিয়েছে। ভৌগলিক অখণ্ডতা, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অন্যান্য শর্তা না মেনেই এসব আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করেছে। রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ বা বিশিষ্টজনদের কারও দাবি ছিল না আসন পুনর্বিন্যাসের। তবু তৎকালীন কমিশন আসন পুনর্বির্ন্যাস করেছে। তাদের মনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল কিনা, তা জানি না। আমরা বলেছি, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস করার ক্ষমতা সাংবিধানিকভাবে ইসির রয়েছে। ১৩৩ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের ব্যত্যয় ও অসমাঞ্জস্য দূর করতে ২০০৮ সালের আগের অবস্থানে ফিরে যেতে চাই। তাহলে ভৌগলিক অখণ্ডতা, প্রশাসনিক ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সুবাধাদির শর্ত নিরূপিত হবে। এর দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা কতগুলো আসনের উদাহরণ দিয়ে বলেছি, একটি উপজেলার কিছু ইউনিয়ন এক আসনে, বাকি এক বা দু’টি ইউপিকে আরেক সংসদীয় আসনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কোনও উপজেলা ভেঙে আরেকটি উপজেলা গঠিত হলে প্যারেন্ট উপজেলার সঙ্গে নবগঠিত উপজেলা রাখার বিধান থাকলেও তা মানা হয়নি।

বিএনপির এ নেতা বলেন, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে ১৯৮৪ সালে গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। ওই সংসদীয় আসন অনুযায়ী, ১৯৮৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সব সংসদীয় আসন নিয়ে কোনও রাজনৈতিক দলের আপত্তি ছিল না।

বিএনপি নেতাদের ওপর হামলা মামলা ও হয়রানির অভিযোগ তুলে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ বলেন, ‘এ রকম পরিস্থিতি চলমান থাকলে লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি করা সম্ভব হবে না। আমরা সিইসিকে এসব জানিয়ে বলেছি, এতে নির্বাচনের লেভেল প্লেইং ফিল্ড হবে না। নির্বাচন কমিশন একা লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরিতে যথেষ্ট নয়। এতে সরকারের সদিচ্ছা দরকার। দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না, এমন দাবি করে বর্তমান সরকার প্রধান ১৯৯৬ সালে আন্দোলন করেছিলেন। এখন পরিস্থিতি সে রকমই আছে। লেভেল প্লেইং ফিল্ড না হলে নির্বাচন কমিশন যে সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়, তা সম্ভব নয়।’

পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেন, ‘বিএনপির নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আন্তরিকভাবে আলোচনা হয়েছে। তারা সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনা করেছেন। ১৯৮৪ সালে যে নীতিতে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস করা হয়েছিল, সেই নীতিতে ফিরে যাওয়ার কথা বলেছেন বিএনপি নেতারা। আমরা তাদের বলেছি, সীমানা পুনর্বিন্যাস নিয়ে আমাদেরও চিন্তাভাবনা আছে। রোডম্যাপে এ বিষয়টি রয়েছে। তবে এই মুহূর্তে আমরা বলতে পারছি না, ১৯৮৪, না ২০০৮, না ২০১৪ সালের সীমানায় থাকব। তবে সীমানায় পুনর্বিন্যাসে আমরা কিছু পরিবর্তন আনতে চাই। এ বিষয়ে বিএনপির মতো বড় রাজনৈতিক দলের বক্তব্য শুনলাম। এরপর অন্যান্য রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজসহ স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় সবায় তাদের বক্তব্য শুনব।’

এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘ডিলিমিটেশন নিয়ে তারা (বিএনপি) যেমন কনসার্ন, তেমন আমরাও কনসার্ন। তবে ১৯৮৪সালে ফিরে যাবে সেই কথা বলেনি। তারা যে সীমানা পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছে, তার সঙ্গে আমরা একমত। আমরা কিছু আসনের সীমানায় পরিবর্তন করব। তবে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ করে এবং আমাদের কিছু অভিমত আছে, সেগুলোর সমন্বয় করে সীমানা পুনর্বিন্যাস করব। বর্তমানে যেসব সীমানা আছে, তাতে কিছু পরিবর্তন করা দরকার, সেই বিষয়ে আমরা একমত।’0

সব পক্ষের সমান সুযোগ দিতে সরকারের ওপর ইসি চাপ সৃষ্টি করবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘এটা আমাদের বিষয় নয়, এটা সরকারের বিষয়। তারা সরকারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমাদের বলেছেন। জবাবে আমরা বলেছি, এ বিষয়ে আমাদের কোনও মন্তব্য বা বক্তব্য ছিল না। সব রাজনৈতিক দলের জন্য লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরিতে বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমরা বলেছি ইসি টেকনিক্যাল অফিস। সংবিধানের আলোকে আমাদের হাতে যেসব আইন-কানুন আছে তার ভিতিত্তে নির্বাচন পরিচালনা করব। সরকার যদি আইনে পরিবর্তন করে, তাহলে সেই আইনে নির্বাচন করব। যে আইন হাতে আছে, তাই আমাদের একমাত্র অবলম্বন। সরকারকে চাপে রাখা আমাদের এখতিয়ার নয়। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব মন্তব্য করে সিইসি বলেন, নির্বাচনের জন্য সবার সুযোগ সৃষ্টি করার কিছুটা আমাদের হাতে রয়েছে। আমাদের হাতে আইন আছে। নির্বাচনের বিধি-বিধান আছে তা যথেষ্ঠ বলে মনে করি। সেগুলো প্রয়োগ করতে পারলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলে আশা রাখি।’

বৈঠকে সিইসির সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মাহাবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী ও ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। এদিকে বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুর রশীদ সরকার ও ক্যাপ্টেন সুজা উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

/ইএইচএস/ এমএনএইচ/

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বেচাকেনা জমজমাট, কম দামে ভালো পাঞ্জাবিতে আগ্রহ ক্রেতাদের
বেচাকেনা জমজমাট, কম দামে ভালো পাঞ্জাবিতে আগ্রহ ক্রেতাদের
‘মাঝেমধ্যে ভাবি, আইপিএল কি আদৌ ক্রিকেট’
‘মাঝেমধ্যে ভাবি, আইপিএল কি আদৌ ক্রিকেট’
ঈদে আরিয়ানের একমাত্র নির্মাণ ‘তখন যখন’
ঈদে আরিয়ানের একমাত্র নির্মাণ ‘তখন যখন’
করোনার পর মাধ্যমিকে ১০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী কমেছে
করোনার পর মাধ্যমিকে ১০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী কমেছে
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়