রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধে বিশ্ব জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া অঞ্চলের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মিয়ানমারে গণহত্যা চলছে দাবি করে তা বন্ধের দাবিতে সোমবার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে দলটি।
মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, ‘মিয়ানমারে জাতি নির্মূলের চেষ্টা চলছে। সেখানে যে কায়দায় অভিযান চালানো হচ্ছে, তা পুরোপুরি জাতি নির্মূলের সংজ্ঞার আওতায় পড়ে। রোহিঙ্গাদের বাঁচাতে বিশ্ব বিবেক জাগিয়ে তুলতে হবে। রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে বিশ্ব জনমত গঠন এবং মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’
রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধ ও এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম।
তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ওপর যেভাবে নির্যাতন হচ্ছে, তা সাম্প্রতিক সময়ের সব সহিংসতাকে ছাড়িয়ে গেছে। বিশেষ করে ভূ-রাজনৈতিক কারণে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা চলছে। বহুজাতিক কোম্পানির স্বার্থ রক্ষার জন্য রোহিঙ্গাদের ওপর আঘাত পড়ছে।’
বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শক্তি তাদের সংকীর্ণ অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে বর্তমান পরিস্থিতিকে কাজে লাগাতে তৎপর হয়ে উঠেছে দাবি করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির বলেন, ‘মানবিক করণীয়ের বোঝার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ষড়যন্ত্রের বিপজ্জনক অভিঘাত সবটাই এসে পড়েছে বাংলাদেশের ওপর। রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবিলার জন্য যা যা করা দরকার, বাংলাদেশ সরকারের তার সবটাই করা প্রয়োজন।’
এ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক তৎপরতার ক্ষেত্রে সরকারের ব্যর্থতা দেশবাসীকে হতাশ করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার মিয়ানমারে মুসলিম গণহত্যা বন্ধের দাবিতে সারাদেশে ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। নারায়ণগঞ্জ মহানগর, নরসিংদী, মাদারীপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, শরীয়তপুর, শেরপুর, গাজীপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, টাঙ্গাইল, জামালপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম মহানগর, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, খুলনা, ঝিনাইদহ, যশোর, নড়াইল, মাগুরাসহ দেশের সকল জেলা সদরে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালিত হয়।