X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘ক্ষমতায় বসতে বিএনপি কারও দয়া ভিক্ষা করে না’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৩ অক্টোবর ২০১৭, ২০:১৫আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০১৭, ২২:১৮

 

বক্তব্য রাখছেন ফকরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, তার দল বিদেশের কারও কাছে দয়া ভিক্ষা করে না। বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কারও কাছে দয়া ভিক্ষা করি না। আমরা একথা বলি না, আমাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দাও, কাউকে বলি না একথা। আমরা বিশ্বাস করি না, কেউ এসে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে দিয়ে যাবে।’

সোমবার (২৩ অক্টাবর) বিকালে রাজধানীর ডিআরইউতে সাগর রুনি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। গণ-সংস্কৃতি দল আয়োজিত অলি আহাদ ও চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলামের স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মির্জা ফখরুল।

গত রবিবার রাতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠককে ইঙ্গিত করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র নেই বলে বাইরের নেতাদের জানালেও ক্ষমতায় বসার জন্য বিএনপি তাদের কাছে দয়া ভিক্ষা করে না।’
খালেদা-সুষমা বৈঠকের পরই মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, তার দলের প্রধান সুষমা স্বরাজকে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর ব্রিফ করেছেন।

এছাড়াও বৈঠকসূত্র রবিবার বাংলা ট্রিবিউনকে জানায়, বৈঠকে খালেদা জিয়া দেশে গণতন্ত্র নেই বলে সুষমাকে জানান। পাশাপাশি প্রধান বিচারপতিকে কেন্দ্র করে বিচার বিভাগের ওপর সরকার নিয়ন্ত্রণ করছে বলেও সুষমাকে জানানো হয়।

সোমবারের স্মরণসভায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সমগ্র বিশ্বের কাছে একথা বলতে চাই, বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র নাই। গণতন্ত্রের মুখোশ পড়ে, গণতন্ত্রের লেবাস পড়ে যারা আন্তর্জাতিক বিশ্বে গণতন্ত্রের কথা বলছে, তারা মিথ্যা কথা বলছে। তারা আন্তর্জাতিক বিশ্বকে বিভ্রান্ত করছে।’

বিএনপির মহাসচিব যুক্ত করেন, ‘সে কারণে আমরা বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে দেখা করি। বাইরে থেকে কেউ আসলে তার সঙ্গে দেখা করি। এই কথাটাই আমরা তাদের স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই।’

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার তার দলের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। কোথাও ভোট দিতে যেতে দেওয়া হয় না। তার ভাষ্য, ‘আমাদের কোথাও দাঁড়াতেও দেওয়া হয় না। আমাদের সভা করতে দেওয়া হয় না। ঘরের মধ্যে মিটিং করতে হয়, যেখানে গোয়েন্দা বাহিনীর কত লোক বসে আছে। এই যে বিষয়গুলো, এটা কোনও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা হতে পারে না।’

বিএনপির ৭০ হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, হাজারের বেশি কর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এবং পাঁচশোর বেশি নেতা-কর্মীকে গুম করে ফেলা হয়েছে বলে জানান ফখরুল।

এই মন্তব্যের পর তার বক্তব্য, ‘এরকম পরিবেশে আপনারা বলছেন- নির্বাচন করবেন, চমৎকার পরিবেশ আছে। কোনোটাই পরিবর্তন করতে দেবেন না। সেনাবাহিনী নিয়োগ করা যাবে না। সহায়ক সরকার করা যাবে না।সংসদ বিলুপ্ত করা হবে।’

ফখরুল সরকারের প্রতি প্রশ্ন করেন, ‘তাহলে নির্বাচনের দরকারটা কী? বলে দেন একদলীয় শাসন ব্যবস্থা।’ তিনি যোগ করেন, ‘৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমান একদলীয় শাসন ব্যবস্থা করেছিলেন। এটা ঘোষণা করে দেন।’ বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের দলের চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধেও একের পর এক মিথ্যা মামলা।’

তিনি প্রশ্ন করেন, ‘কিভাবে আপনারা এখানে গণতন্ত্রের কথা বলেন। কিভাবে ন্যায় বিচারের কথা বলেন। কিভাবে বলেন যে, আমরা কোনও পক্ষপাত করি না।’
মহাসচিব দাবি করেন, ‘ওই আদালতকে কুক্ষিগত করবার জন্যই তো এভাবে প্রধান বিচারপতিকে অপমানজনকভাবে দেশ থেকে বের করে দিয়েছেন আপনরা। কোনও প্রতিষ্ঠান আপনারা বাকি রাখেননি।’

আলোচনার এক পর্যায়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম  অভিযোগ করেন, ‘মিয়ানমার থেকে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিয়ে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের রোহিঙ্গা সমস্যা-বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা। এটাকে খাটো করে দেখবার কোনও উপায় নেই।’
ফখরুল এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, ‘আজকে রোহিঙ্গাদের কেন্দ্র করে যেমন আমরা দেশে বড় বিপদে পড়েছি, তেমনি একটা বড় আন্তর্জাতিক চক্রান্ত চলছে।’

ডা. জাফরুল্লাহকে ইঙ্গিত করে ফখরুল বলেন, ‘তিনি বলেছেন যে, এখানে আরেকটা প্যালেস্টাইন তৈরি করবার কাজ শুরু হয়েছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গা বিষয়ে কোনও রাজনীতি করতে চাই না। আমরা বলেছি সরকারকে, জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করেন। আমরা আপনাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই সমানভাবে। আমরা সহযোগিতা করতে চাই।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এস. আল. মামুনের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, সাবেক এমপি ডা. দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন, পিডিপি মহাসচিব এহসানুল হক সেলিম, ডিএল সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, এনডিপি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, জিনাফ সভাপতি মিয়া মো. আনোয়ার, দেশ বাঁচাও-মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক আকবর হোসেন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন চাষী নজরুলের স্ত্রী জোসনা কাজী ও অলি আহাদের কন্যা বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।

 

 

/এসটিএস/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আঙুরের গোড়া কালো হয়ে যাচ্ছে? জেনে নিন টিপস
আঙুরের গোড়া কালো হয়ে যাচ্ছে? জেনে নিন টিপস
টেকনাফে ১০ জন কৃষক অপহরণের ঘটনায় ২ জন আটক
টেকনাফে ১০ জন কৃষক অপহরণের ঘটনায় ২ জন আটক
এরদোয়ানের যুক্তরাষ্ট্র সফর, যা জানা গেলো
এরদোয়ানের যুক্তরাষ্ট্র সফর, যা জানা গেলো
যুক্তরাষ্ট্রের টি-টোয়েন্টি দলে নিউজিল্যান্ডের সাবেক অলরাউন্ডার
যুক্তরাষ্ট্রের টি-টোয়েন্টি দলে নিউজিল্যান্ডের সাবেক অলরাউন্ডার
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
শাকিব খান: নির্মাতা-প্রযোজকদের ফাঁকা বুলি, ভক্তরাই রাখলো মান!
শাকিব খান: নির্মাতা-প্রযোজকদের ফাঁকা বুলি, ভক্তরাই রাখলো মান!