X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

নৈতিক শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে ছাত্রলীগ

আদিত্য রিমন
২৪ নভেম্বর ২০১৭, ১৯:৩৭আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০১৭, ১৯:৪৭

সাইফুর রহমান সোহাগ (ছবি: সাজ্জাদ হোসেন) কোনও নেতাকর্মী যেন অপকর্মে না জড়ায় সেজন্য নৈতিক শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে ছাত্রলীগ। সবশেষ ছয় জন নারীকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সংগঠনটির নেতা আরিফ হোসেন হাওলাদারের বিরুদ্ধে। তিনি শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।

এছাড়া ক্ষমতাসীন দলের সংগঠনটির নেতাকর্মীদের বিভিন্ন অপরাধের কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছে ছাত্রলীগ। যদিও এর সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বলছেন, ‘ছাত্রলীগ কোনও অপরাধীর অপরাধের দায় নেবে না।’ গত ২০ নভেম্বর দুপুরে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি।

বাংলা ট্রিবিউন: সম্প্রতি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ বাড়ছে। এ দায় কি ছাত্রলীগ এড়াতে পারবে?
সাইফুর রহমান সোহাগ: কোনও নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে দোষী নাকি দোষী নয় সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করেনি ছাত্রলীগ। অভিযোগ পাওয়া মাত্র অভিযুক্তকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার ও একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এরপর কিন্তু অভিযুক্ত ব্যক্তি নিয়ে ছাত্রলীগের কোনও দায় থাকে না। আমরা কোনও অপরাধীর সঙ্গে আপস করি না।

বাংলা ট্রিবিউন: ছাত্রলীগের পদ দেওয়ার আগে কি যাচাই-বাচাই করা হয় না?
সোহাগ: ছাত্রলীগ অবশ্যই পদ-পদবী দেওয়ার ক্ষেত্র তাদের জীবনবৃত্তান্ত যাচাই-বাচাই করে। সত্যি বলতে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে তারা কিন্তু আগে থেকেই এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকে, এমন কিন্তু নয়। হঠাৎ এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। তবে আমরা এসব অভিযোগ পাওয়া মাত্রই তাদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করছি।

ভবিষ্যতে যেন কেউ এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডে না জড়ায় সেজন্য নৈতিক শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে ছাত্রলীগ। সারাদেশে বর্ধিত সভা, কর্মশালা, বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা করে সংগঠনের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হবে। এর বাইরে অপরাধ করলে সাংগঠনিক শাস্তি তো আছেই।

বাংলা ট্রিবিউন: কিন্তু বহিষ্কৃতদের অনেককেই ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদে আসতে দেখা যায়, এর কারণ কী?
সোহাগ: সত্যি বলতে বহিষ্কারের তো ধরনআছে। যেমন ছোট ভাই-বড় ভাইকে সম্মান করলো না এমন অভিযোগেও সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। সেক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি সংশোধন হয়, তাহলে কি তাকে ফিরে আসার সুযোগ দেবেন না?

বাংলা ট্রিবিউন: সব অপরাধের ক্ষেত্রে কি পদে ফিরে আসার সুযোগ আছে?
সোহাগ: না, সব অপরাধের ক্ষেত্রে সুযোগ থাকে না। কারণ সব অপরাধ ক্ষমার যোগ্য নয়। নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হওয়ার পরে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি সংশোধন হয়, তাকে আমরা ভালো হওয়ার সুযোগ দিয়ে থাকি। তবে সব অপরাধীকে যে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে তা কিন্তু নয়।

বাংলা ট্রিবিউন: ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ। আপনাদের সম্মেলন কবে?
সোহাগ: কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মেলন দেওয়ার এখতিয়ার আমাদের নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে নির্দেশ ও পরামর্শ দেবেন। তারপর সম্মেলন হবে। সম্মেলন কিন্তু চাওয়া-পাওয়ার বিষয় নয়। এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। সব সাংগঠনিক জেলার কমিটি গঠন শেষে সম্মেলন করবো। তারপর কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হবে। এটা হঠাৎ করে হবে না। আমরা ৫৪টি জেলার কমিটি গঠন করে দিয়েছি। বাকিগুলোর কমিটি হবে, তারপর সম্মেলন।

বাংলা ট্রিবিউন: গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্রলীগের কমিটির মেয়াদ দুই বছর। সেই হিসাবে নির্ধারিত সময় তো শেষ হয়ে গেছে।
সোহাগ: আমাদের আগের কমিটিও কিন্তু দুই বছরের বেশি সময় ছিল। প্রধানমন্ত্রীও এটা মেনে নিয়েছেন। এটা ধারাবাহিকতার বিষয়।

বাংলা ট্রিবিউন: বর্তমানে কি ধরনের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন?
সোহাগ: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ছাত্রলীগের সব ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, থানা, পৌরসভা, জেলা ও বিভিন্ন কলেজের কমিটি গঠনের কাজ চলছে। যেসব জেলায় ছাত্রলীগের সমস্যা আছে সেগুলো সমাধানের কাজ করছি। এককথায় সংগঠন গোছানোর কাজ চলছে।

নতুন সদস্য সংগ্রহ ও পুরনো সদস্য সংগ্রহ নবায়নের কাজও করছে ছাত্রলীগ। এর বাইরে বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদের উন্নয়ন প্রচারের জন্য সব সাংগঠনিক ইউনিটের কাজ চলছে। সারাদেশে ছাত্রলীগের ১০৯টি সাংগঠনিক ইউনিটের মধ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে ৫৪টি ইউনিটের কমিটি দিয়েছে। এর বাইরে বিদেশে ২৬টি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বাংলা ট্রিবিউন: ছাত্র সংগঠন হিসেবে ছাত্রদের অধিকার আন্দোলনে আপনাদের অবদান রাখার কথা। কিন্তু ছাত্রদের আন্দোলনেই হামলার অভিযোগ উঠছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।
সোহাগ: সাতটি অধিভুক্ত কলেজের ছাত্রদের শহীদ মিনারে আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ শতভাগ মিথ্যা। নীলক্ষেত আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগ পাশে থেকে তাদের দাবিগুলো নিয়ে ভিসি স্যারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেছে। বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রীদের জন্য যে মহিলা হলের কাজ চলছে, সেটি ছাত্রলীগের আন্দোলনের ফসল। পরবর্তী সময়ে যারা আন্দোলন করছে তাদের ভুল ছিল। যেমন পুরনো জেলখানার জায়গায় হল চেয়ে ভুল আন্দোলন করা হয়েছে। কারণ জেলখানার জায়গায় হল হতে পারে না। তাই প্রধানমন্ত্রী জবি’র ছাত্রাবাস তৈরির জন্য কেরানীগঞ্জে জায়গা দিয়েছেন।

/জেএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা