সরকারি খরচে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকার পক্ষে ভোটের চাইছেন—বিএনপি’র শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতার এমন অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনগণের সামনে তুলে ধরা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব। তাই সারাবছরই সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনগণের কাছে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী তার দায়িত্ব পালন করছেন এবং নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নৌকা মার্কায় ভোট চাইছেন। এর ফলে আইনের কোনও ব্যত্যয় হয়নি এবং নির্বাচন কমিশনের বিধিবিধানেরও কোনও ব্যত্যয় হয়নি।’
শনিবার (৩ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ৭ মার্চ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘শেখ হাসিনা জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিও। মানুষ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েই তাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেছেন। নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর সারা বছরই নৌকা মার্কায় ভোট চাওয়ার অধিকার রয়েছে। যদি নির্বাচন কমিশন নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করতো, তখন তারা (বিএনপি) প্রশ্ন তুলতে পারতেন যে প্রধানমন্ত্রী সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিয়ে নির্বাচনি প্রচার চালাচ্ছেন।’
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদেরও ভোট চাওয়ার অধিকার রয়েছে। আপনারাও ধানের শীষে ভোট চান। আপনারা ধানের শীষে ভোট চাইবেন না বা নির্বাচন বর্জন করার চিন্তাভাবনা করবেন, ভোট ভণ্ডুল করার চিন্তাভাবনা করবেন, এটা তো হতে পারে না। আমি নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানাব, যাদের এই বোধশক্তি নেই তাদের যাতে বোধশক্তি আসে, সে জন্য দয়া করে তাদের এই ব্যাখ্যা দেবেন, সব দলেরই নির্বাচনের প্রচারের অধিকার রয়েছে।’
বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের প্রসঙ্গ তুলে আওয়ামী লীগের এই মুখপাত্র বলেন, ‘মওদুদ আহমদের তৎপরতা এখন বেশি দেখা যাচ্ছে। তিনি যখনই তৎপর হন, তখনই একটা উদ্দেশ্য থাকে। তিনি যখনই তৎপর হয়েছেন তখনই পল্টি নিয়েছেন। মওদুদ আহমদ এখন বেশি তৎপর হয়েছেন। এটা পল্টি মারার পূর্ব লক্ষণ কিনা, সেটি ভবিষ্যৎ বলে দেবে।’
মওদুদ আহমদের এক বক্তব্যের সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘খালেদা জিয়া যদি জেলে থাকেন, তাহলে তাদের (বিএনপি) নাকি প্রতিদিন ১০ লাখ ভোট বাড়ে। তাহলে তারা নিশ্চয়ই চান না খালেদা জিয়া জেল থেকে বের হোক। দিনে যদি ১০ লাখ ভোট বাড়ে তাহলে তাদের উপলব্ধি হলো, বেগম খালেদা জিয়া জেলে থাক।’
বিএনপির আইনজীবীদের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘যেসব আইনজীবী বলছেন খালেদা জিয়া জেলে থাকলে বেশি ভোট বাড়ে সেসব আইনজীবী যদি মামলার জন্য লড়েন, তাহলে খালেদা জিয়ার জেল থেকে বের হওয়ার কোনও সম্ভাবনা আমি দেখছি না।’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তারা সকালে একটা সংবাদ সম্মেলন করেন, বিকালে আরেকটা সংবাদ সম্মেলন করেন। তারা সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ তোলেন যেন তারা স্বপ্নে এসব দেখেছিলেন। আমি তাদের অনুরোধ জানাবো এবং বিএনপির আইনজীবী টিমকে অনুরোধ জানাবো, আপনাদের নেত্রীর মুক্তির জন্য আন্তরিক হোন।’
বিএনপিকে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারাও জনগণের কাছে গিয়ে আপনাদের ভোট চান। অন্যরা ভোট চাইলে দয়া করে সেটি নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন না।’
‘চেতনা ৭১’ সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা লায়ন চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, সাবেক সংসদ সদস্য ও চিত্রনায়িকা সারাহ বেগম কবরী, আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অরুণ সরকার রানা প্রমুখ।
