ঐতিহাসিক ৭ মার্চের আওয়ামী লীগের জনসভা ঘিরে নির্বাচনি শোডাউন চালিয়েছেন আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা। আনুষ্ঠানিকভাবে জনসভা শুরু হওয়ার অনেক আগেই থেকেই ঢাকা ও তার আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ও বর্তমান সংসদ সদস্যরা নিজ নিজ অনুসারী ও সমর্থকদের নিয়ে রঙ-বেরঙের পোশাক আর বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে মিছিলসহ আসতে থাকেন অনুষ্ঠানস্থলে।
মনোনয়নপ্রত্যাশীরা ব্যানার, ফেস্টুন, টি-শার্টে লিখে জানান দিয়েছেন প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি। আর বর্তমান সংসদ সদস্যরা বিশাল শোডাউন দিয়ে জানান দিয়েছেন নিজেদের শক্তি ও সামর্থ্যের কথা। তাদের মিছিল ও বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে শাহবাগ, বাংলা একাডেমি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকা।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন নেতা অনুসারীরা লাল-সবুজের টি-শার্ট ও মাথায় ক্যাপ পরে পায়ে হেঁটে বা পিকআপ ভ্যান, ট্রাক ও বাসযোগে বিভিন্ন সড়ক ধরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে মিছিল নিয়ে আসেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সম্রাট। আজ (বুধবার) সকাল থেকে জনসভাকে ঘিরে রাজধানীতে সম্রাটের অনুসারীরা বিশাল মিছিল নিয়ে শোডাউন দেন। এসময় তাদের গায়ে ছিল সবুজ টি-শার্ট এবং লাল সবুজের ক্যাপ। এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য হচ্ছেন আওয়ামী লীগের ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
ঢাকা- ১৬ আসন থেকে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চান বর্তমান সংসদের সংরক্ষিত সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন। ৭ মার্চের জনসভায় তিনি যোগ দিয়েছিলেন বিশাল মিছিল নিয়ে। তার সমর্থকদের গায়ে ছিল সাদা টি-শার্ট। অন্যদিকে, এ আসনের বর্তমান এমপি ইলিয়াস মোল্লাও তার শক্তির জানান দিতে কয়েকটি বাসে করে নেতাকর্মী নিয়ে এসেছেন।
ঢাকা-১২ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী আওয়ামী যুবলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম চৌধুরী। তার মিছিলে অনুসারীদের গায়ের টি শার্টে লেখা ছিল ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থীকে নৌকায় ভোট দিন।’ ঢাকা-১২ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী রফিকুল ইসলাম। একইভাবে এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের অনুসারীদের পিকআপ ভ্যানে করে মিছিল নিয়ে আসতে দেখা গেছে।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম জনসভায় এসেছিলেন মিছিল নিয়ে। তার মিছিলে থাকা ফেস্টুনে লেখা ছিল ‘গাজীপুর আসন্ন সিটি নির্বাচনে মেয়র হিসেবে দেখতে চাই।’
মানিকগঞ্জ-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম জাহিদ ব্যান্ডপার্টি সহকারে একটি মিছিল নিয়ে হাজির হন জনসভায়।
এছাড়া ঢাকার বিভিন্ন সংসদ সদস্যরা মিছিল নিয়ে জনসভায় উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঢাকা- ২ আসনের মো. কামরুল ইসলাম, ঢাকা-৩ এর নসরুল হামিদ, ঢাকা-৫ আসনের হাসিবুর রহমান মোল্লা, ঢাকা-৯ আসনের সাবের হোসেন চৌধুরী, ঢাকা-১০ আসনের শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা-১১ আসনের এ কে এম রহমত উল্লাহ, ঢাকা-১৩ আসনের জাহাঙ্গীর কবির নানক, ঢাকা-১৪ আসনের আসলামুল হক, ঢাকা-১৫ আসনের কামাল আহমেদ মজুমদার, ঢাকা-১৮ আসনের সাহারা খাতুনের অনুসারীরা মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় যোগ দেন।
ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, শ্রমিক লীগের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা জনসভায় আসেন মিছিল সহকারে। ঢাকার আশপাশের জেলা গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও নরসিংদী থেকেও নেতা-কর্মীরা বাস, ট্রেন ট্রাকযোগে ঢাকায় আসেন। পরে জয় বাংলা স্লোগান দিতে দিতে এবং বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে নেচে-গেয়ে জনসভাস্থলে প্রবেশ করেন।