X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

মনোনয়ন পেলেই জয় নিশ্চিত ভাবছে তৃণমূল আ. লীগ

পাভেল হায়দার চৌধুরী
২৮ মার্চ ২০১৮, ২৩:০৬আপডেট : ২৯ মার্চ ২০১৮, ১২:৩৭

আওয়ামী লীগ
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেলেই জয় নিশ্চিত বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতারা। মনোনয়ন-প্রত্যাশীদের ধারণা, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির আদলে বা ওই নির্বাচনের কাছাকাছি কোনও উপায়ে এবারও নির্বাচন হবে। এ কারণেই নির্বাচনে জয়লাভ নিয়ে তেমন চিন্তিত না হয়ে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করতেই উঠেপড়ে লেগেছেন তারা। তবে কেন্দ্রীয় নেতাদের মতে, এবার  অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে। ৫ জানুয়ারির মতো কাউকে বিজয়ী করার দায়িত্ব দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেবেন না। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায় ও তৃণমূলের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপকালে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

আওয়ামী লীগের তৃণমূলের অনেক নেতা ও মনোনয়ন-প্রত্যাশীরা মনে করেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে না। বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ অনেকটা অনিশ্চিত। ফলে মনোনয়ন পাওয়া মানেই বিজয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়া। এ ধারণা থেকে ভোটের মাঠ গোছানোর আগে মনোনয়ন নিশ্চিত করতেই বেশি দৌড়ঝাঁপ করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

মনোনয়ন-প্রত্যাশী নেতারা দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, কেন্দ্রীয় নেতাদের বাসা ও ব্যবসায়িক কার্যালয়সহ সম্ভাব্য এমন কোনও জায়গা নেই, যেখানে তদবির করছেন না। মনোনয়ন প্রত্যাশী কয়েকজন নেতার সঙ্গে আলাপে তারা স্বীকার করেছেন, দলের মনোনয়ন পেতে যত নিয়মকানুন পালন করতে হয়, নির্বাচনে জেতার জন্য ততটা করতে হয় না। তাই মনোনয়ন যেন নিশ্চিত করতে পারেন, আগেভাগে সেই চেষ্টাই  করছেন তারা। জানতে চাইলে মনোনয়ন পেতে আগ্রহী একজন নেতা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এমন একটি সংগঠন, যে দলে শেখ হাসিনা টিকিট দিলেই জিতে আসতে কষ্ট হবে না। এবারও নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে না। ফলে মনোনয়নের তদবিরই আগে করছি।’

এই প্রসঙ্গে আরেকজন মনোনয়ন-প্রত্যাশী নেতা বলেন, ‘দলের মনোনয়ন পাওয়া এখন বড় চ্যালেঞ্জ। নৌকার টিকিট পেলে মাঠের অবস্থান এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে।’

তবে এমন ধারণা যারা পোষণ করছেন, তাদের সংখ্যা বেশি হলেও যোগ্য-জনপ্রিয়-পরীক্ষিত-ত্যাগী নেতারা ঠিকই গুরুত্বের সঙ্গে জনসংযোগ করে যাচ্ছেন। এদিকে, নীতিনির্ধারণী নেতারা বলছেন, শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পাবেন তারাই, যারা তদবির নিয়ে ব্যস্ত নয়, মাঠ গোছানোর কাজেই বেশি ব্যস্ত। 

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী নেতারা জানান, ব্যক্তিগত যোগ্যতা না থাকলেও ৩০০ আসনে অন্তত দশগুণ মনোনয়ন-প্রত্যাশী রয়েছেন, যারা মনোনয়ন নিশ্চিত করতে তদবিরে ব্যস্ত। মাঠের রাজনীতিতে শক্ত অবস্থান রয়েছেন, নেতাকর্মীদের কাছে জনপ্রিয়, মনোনয়ন-প্রত্যাশী এমন নেতার সংখ্যা কম।

ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, আওয়ামী লীগের অনুসন্ধানী টিম ও সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার জরিপে দেখা গেছে, জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে যেসব নেতা মনোনয়ন পাওয়ার আশা করছেন, তাদের বেশিরভাগেরই নিজ নিজ এলাকায় রাজনৈতিক অবস্থান সুসংহত নয়। কিন্তু মনোনয়ন পেতে চেষ্টা ও তদবিরে পিছিয়ে নেই তাদের কেউই। এই নেতারা নিজেদের অবস্থান তৈরি না করে আগেই মনোনয়ন নিশ্চিত করতে চেষ্টা তদবিরে ব্যস্ত। তাদের ধারণা, মনোনয়ন পেলেই জয়ী হবেন।

দলটির একাধিক নীতিনির্ধারক জানান, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে প্রার্থী যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। তাতে দেখা গেছে, মাঠে দুর্বল  হলেও তদবিরে এগিয়ে আছে, এমন মনোনয়ন-প্রত্যাশীর সংখ্যাই বেশি। 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সবসময়ই বলে আসছেন, এবার নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক। ৫ জানুয়ারির মতো কাউকে বিজয়ী করার দায়িত্ব তিনি নেবেন না। প্রার্থীকে নিজ নিজ যোগ্যতায় বিজয়ী হতে হবে। তাই সবাইকে নিজ নিজ এলাকায় কাজ করতে হবে। জনগণের দুয়ারে যেতে হবে। শেখ হাসিনার এ কথা অনুযায়ী যারা কাজ করছেন না, তারা মনোনয়ন পাবেন না। মনোনয়ন পেতে হলে মাঠ তৈরি করতে হবে।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অনেক সম্ভাব্য এমপিপ্রার্থী আছেন, মাঠের রাজনীতিতে যারা কোনও অবস্থান তৈরি করে নিতে পারেননি, তারা ব্যস্ত রয়েছেন মনোনয়ন কীভাবে নেওয়া যায়, সেই তদবিরে। দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছেও এমন একটি তালিকা রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মনোনয়ন পেতে হলে মাঠের রাজনীতিতে শক্ত অবস্থান থাকতে হবে। তদবির করে মনোনয়ন নেওয়া একেবারেই অসম্ভব।’

সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বলেন, ‘দল ক্ষমতায় থাকার কারণে রাজনীতিতে অবস্থান না থাকলেও মনোনয়ন নেওয়ার জন্য নেতাদের বড় একটি অংশ তদবিরে ব্যস্ত রয়েছেন। তবে এ ধরনের কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না বলেই জানি। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে অনমনীয় অবস্থানে রয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা বরাবরই বলে আসছেন, ‘এবার কারও দায়িত্ব তিনি নেবেন না। এটা তার সতর্কবার্তা।’

/এমএনএইচ/চেক-এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মুক্তিযোদ্ধা চাচাকে হত্যা, ভাতিজার যাবজ্জীবন
মুক্তিযোদ্ধা চাচাকে হত্যা, ভাতিজার যাবজ্জীবন
ডিএনসিসি ও চীনের আনহুই প্রদেশের সহযোগিতামূলক চুক্তি সই
ডিএনসিসি ও চীনের আনহুই প্রদেশের সহযোগিতামূলক চুক্তি সই
চুয়েটের দুই শিক্ষার্থীকে চাপা দেওয়া বাসের চালক গ্রেফতার
চুয়েটের দুই শিক্ষার্থীকে চাপা দেওয়া বাসের চালক গ্রেফতার
টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে ফের পাকিস্তানের এক নম্বর বোলার শাহীন
টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে ফের পাকিস্তানের এক নম্বর বোলার শাহীন
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…