বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তাকে আবারও ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তির দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম। এর জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা জেলকোড অনুযায়ী হচ্ছে এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শে তার জন্য যা যা করা প্রয়োজন সব করা হবে।
আজ রবিবার (২২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টায় সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয়ে আধঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক হয়। বৈঠকে বিএনপি প্রতিনিধি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। বৈঠক শেষে বের হয়ে তারা সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ বিএনপি চেয়ারপারসন কারাগারে ভীষণ অসুস্থ। তার সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না। এ অবস্থায় আমরা দলের পক্ষ থেকে উদ্বিগ্ন। তার সুচিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা নিতে আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানিয়েছি। তাঁর হাঁটুতে জরুরি এমআরআই করা প্রয়োজন বলে আমরা জানতে পেরেছি। আপনারা সবাই জানেন, ম্যাডামের হাঁটুতে বিশেষ ধাতববস্তু বসানো রয়েছে। বাইরের সাধারণ এমআরআই যন্ত্র দিয়ে এর ভালো রিপোর্ট পাওয়া সম্ভব নয়। এজন্য তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তির অনুরোধ করেছি। সেখানে এই বিশেষ মেশিনটি রয়েছে। এছাড়াও আমাদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে পুলিশ যাতে বাধা না দেয় সেজন্যও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানিয়েছি।’
এ সময় খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘যারা এসব প্রশ্ন করেন, তারা বিশেষ উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন।’
এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, তারা এসেছিলেন। তিনটি পয়েন্ট নিয়ে তারা কথা বলেছেন। তারা তাদের দলীয় চেয়ারপারসন কারান্তরীণ বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তির দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আমরা বলেছি, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য যা কিছু ব্যবস্থা দরকার জেলকোড অনুযায়ী ব্যবস্থা করবো। এজন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে যা যা করা দরকার সব করা হবে।
বিএনপির অপর দুই দাবি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘২৫ এপ্রিল তারা একটি মানববন্ধন কর্মসূচি ও ১ মে শ্রমিক দিবস উপলক্ষে শ্রমিক দলের কর্মসূচি করতে চায়। এ দুটো কর্মসূচিতে যাতে সরকার কোনও ধরনের বাধার সৃষ্টি না করে সেজন্য তারা দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে তাদের জানিয়েছি, বিষয়টি পুলিশ কমিশনার দেখেন। তার কাছে এ বিষয়ে লিখিতভাবে আবেদন করলে তিনিই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না ঘটলে তো কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।’
এছাড়াও খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তি দেওয়ারে বিষয়ে সররকারের কোনও ভাবনা আছে কিনা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জেনেছি ও দেখেছি, উনি তো আগে দেশে থেকেই চিকিৎসা নিয়েছেন। কাজেই উনাকে প্যারোলে বিদেশে পাঠানোর কোনও প্রয়োজন নেই। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্যে জোল কোডের বিধান অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেদের সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এক সাংবাদিক জানতে চান, জেলখানায় খালেদা জিয়াকে দোতলায় রাখা হয়েছে, তার শারীরিক অসুস্থতার কারণে কাউকে দোতলায় গিয়ে দেখা করার অনুমতি দেবেন কিনা। এর জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই ওখানে (জেলখানায়) তার সঙ্গে দেখা করতে যান। উনার দলের লোক যান, আত্মীয়রা যান। তবে উনি তো সবার সঙ্গে দেখা করতে চান না। তার সঙ্গে কারা কারা দেখা করতে চান সে তালিকা জেল কর্তৃপক্ষের কাছে চেয়েছেন খালেদা জিয়া। তালিকা অনুযায়ী তিনিই সিদ্ধান্ত নেন কার সঙ্গে দেখা করবেন আর কার সঙ্গে করবেন না। ’