X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এই আগস্টে নীরব থাকছে বিএনপি!

আদিত্য রিমন
০৫ আগস্ট ২০১৮, ১০:৫৯আপডেট : ০৫ আগস্ট ২০১৮, ২০:৩১

বিএনপি এই আগস্টে নীরব থাকবে বিএনপি। বিগত কয়েক বছর ধরে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন করা হলেও এ বছর তা হচ্ছে না। দলীয় প্রধান দুর্নীতির মামলায় কারাগারে থাকায় ১৫ আগস্টের প্রথম প্রহরে কোন কর্মসূচি নেই বিএনপির। এমনকি দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকেও ১৫ আগস্ট কেক কাটতে অনুৎসাহিত করা হয়েছে। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়টি জানা গেছে।  

জানা গেছে, আগস্টের ১৫ তারিখ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকীর দিনটি জাতীয় শোক দিবস হিসেবে সর্বজনবিদিত। যদিও নব্বইয়ের দশকে বিএনপিপন্থী এক সাংবাদিক ও স্থায়ী কমিটির এক সদস্যের উৎসাহে ১৫ আগস্টের দিনটিকে জন্মদিন হিসেবে আড়ম্বরভাবে উদযাপন শুরু করেন খালেদা জিয়া। তখন থেকেই বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলসহ সাধারণ্যে সমালোচনা শুরু হয়।

নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক বিতর্ক এড়াতেই ১৫ আগস্টকে খালেদা জিয়ার জন্মদিন হিসেবে পালন করবে না বিএনপি। এর আগে প্রথম গত ২০১৬ সালের দেশের সামাজিক ও বন্যা পরিস্থিতি কারণে জন্মদিন পালন করেনি খালেদা জিয়া। এছাড়া ২০১৭ সালেও ১৫ আগস্ট প্রথম প্রহরে জন্মদিনের কেক কাটেননি খালেদা জিয়া।  

বিএনপির একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে মতপার্থক্য থাকার পরও দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী পালন করে। আর একই দিনে খালেদা জিয়ার মতো রাজনৈতিক নেতার জন্মদিন উদযাপন করাকে ভালোভাবে গ্রহণ করেননি অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা। এদিকে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের বাইরে থাকা সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির চেষ্টা করেছে বিএনপি। যেসব দলকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য করার কথা হচ্ছে তাদের অনেকে ১৫ আগস্ট বিএনপি প্রধানের জন্মদিন পালন করা নিয়ে মনক্ষুণ্ন। ফলে এই মুহুর্তে জন্মদিন পালন করে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির পরিবেশ নষ্ট করতে চায় না বিএনপি।

দলটির অন্য আরেকটি সূত্র জানান, ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন নিয়ে আওয়ামী লীগ কাদা ছোড়াছুড়ি করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার চেষ্টা করে। এছাড়া বিএনপির যেসব নেতা এই দিনে খালেদা জিয়াকে জন্মদিন পালনে উদ্বুদ্ধ করেছিল তারা এবার নীরব রয়েছে। আর খালেদা জিয়া এবার কারাগারে থাকায় তার জন্মদিন পালন করে উৎসব করার মতো মানসিক অবস্থা নেই নেতাকর্মীদের।     

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহাবুবুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছেন। তাকে কারাগারে রেখে আমরা কিভাবে জন্মদিন পালন করবো? তাই এবার তার জন্মদিন পালন করার কোনও চিন্তা-ভাবনা নেই। এরপর যদি কেউ পালন করে সেটা কোনও সংগঠন বা ব্যক্তি তার নিজ উদ্যোগে পালন করবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক ভাইস চেয়ার‌ম্যান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী রাজনৈতিক বলয়কে কাছে টানতে এবারও ম্যাডাম খালেদা জিয়ার জন্মদিনের কেক কাটা হবে না। এছাড়া বিএনপি যাদেরকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য করার পরিকল্পনা রয়েছে তারাও ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকী পালন করে। ফলে এবার জন্মদিনে এসব রাজনৈতিক নেতারা মনক্ষুণ্ন হয় এমন কিছু করবো না আমরা।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জন্মদিন পালনা করা বা না করা তো একটা আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। মূল বিষয় হচ্ছে দোয়া করা যেন তিনি সুস্থ থাকেন এবং দীর্ঘজীবী হন। দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে উনার যে প্রত্যয় সেই কাজে দীর্ঘজীবী হয়ে যেন জাতিকে সেবা করতে পারেন। আনুষ্ঠানিকভাবে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন করার কোনও সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। হয়তো কেউ আলাদাভাবে করতে পারেন। তবে দল থেকে এই ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’    

প্রসঙ্গত,গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত। রায় ঘোষণার পরপরই তাকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি এখন সেখানেই আছেন। গত কয়েক বছর ধরে ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়া জন্মদিন পালন করেন। এই হিসেবে আগামী ১৫ আগস্ট তার ৭৪ তম জন্মদিন হবে। যদিও খালেদা জিয়ার প্রকৃত জন্মদিন কবে তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।     

দলটির নেতারা বলছেন, কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ধারা আগস্ট মাসে বজায় থাকবে। কারণ আগস্টে মাসের শেষ দিকে ঈদুল আযাহা। ফলে ঈদের আগ মূহুর্তে এমন কোনও কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে না যাতে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে এবং বিএনপির প্রতি নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হয়। এছাড়া নির্বাচনের এতো আগে কঠোর আন্দোলন যাওয়ার পক্ষে নন দলের অধিকাংশ নেতা।    

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম  খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিশ্বাসী। আগামীতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ধারা বজায় থাকব।’   

মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলছে। আগামীকালও একটা কর্মসূচি আছে। এরপর দলের নীতি নির্ধারকরা বসে হয়তো আবারও দুই-তিন দিনের একটি কর্মসূচি দিতে পারে।’

 

/এএইচআর/টিএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!