X
মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪
৫ চৈত্র ১৪৩০

‘ফাইল দেখতে দেখতে অনেক সময় টেবিলেই ঘুমিয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৫ আগস্ট ২০১৮, ০৪:১৮আপডেট : ১৫ আগস্ট ২০১৮, ১৮:৫৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি-ফোকাস বাংলা) ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবিরাম পরিশ্রম করেন। রাত ১২টা পর্যন্ত ভিজিটরদের (দর্শনার্থী) সঙ্গে আলোচনা শেষে টেবিলে ফাইল নিয়ে বসেন। কখনও কখনও টেবিলে বসে ফাইল দেখতে দেখতে তিনি টেবিলেই ঘুমিয়ে পড়েন।’ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম এসব কথা বলেছেন।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আওয়ামী লীগের অতীত ও বর্তমান প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। বঙ্গরত্ন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘শেখ হাসিনা বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের পর তার ওপর যত আঘাত এসেছে, সেগুলোর প্রত্যেকটিতে তাকে টার্গেট করা হয়েছে। সেজন্য তিনি সব সময় বলেন, আমি সবসময় মাথায় রাখি একটি বুলেট সব সময় আমাকে তাড়া করে ফিরছে। তবু তিনি কোনোভাবে পরাভব না মেনে বাঙালি জাতির অধিকারের প্রশ্নে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।’
সুপ্রিম কোর্টের এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে দুটি বিরোধী পক্ষ ছিল। একটি পক্ষ সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। আরেক পক্ষ চাইনিজ রাজনীতি করতেন। তারা বলতেন, দুই কুকুরের লড়াই চলছে। অথচ এই চাইনিজরা বা স্বাধীনতাবিরোধীরা মারা গেল না, যত লোক মারা যাচ্ছে তা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকেরাই মারা যাচ্ছে। সেটা বঙ্গবন্ধু থেকে শুরু করে আরও অনেকে।’
শ. ম. রেজাউল করিম বলেন, দেশে প্রত্যাবর্তনের পর ২১ বছর ধরে লড়াই-সংগ্রাম করে ক্ষমতায় ফিরে আসাটা শেখ হাসিনার কারণেই সম্ভব হয়েছে। অথচ ১৯ বার তাকে হত্যার চেষ্টা করা হলো। কারণ, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রে মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তাকে মেরে ফেললে সে চেতনা থেকে বাংলাদেশকে পাকিস্তানে পরিণত করা যাবে।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা মানে কিন্তু ব্যক্তি শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা নয়, একটি আদর্শকে মেরে ফেলা। আদর্শ বলতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল তারা। এজন্যই কিন্তু বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের অন্য সদস্যদের মেরে ফেলা হয়েছিল।’
রেজাউল করিম বলেন, ‘হাইকোর্টে বিচারপতি নিয়োগের সময় বলা হয়, গুণী লোকদের নিয়োগ দিতে হবে। অথচ এমন লোকদের নিয়োগ দেওয়া হয়, তারা জেলহত্যা মামলার আসামিদেরও খালাস দিয়ে দেন, শেখ হাসিনার মামলায় অ্যাফিডেভিট (হলফনামা) করতে গেলে অন্য কোর্টে যেতে বলেন। অথচ তারা আওয়ামী লীগের সময় নিয়োগ পাওয়া বিচারপতি।’
সুপ্রিম কোর্টে ক্রাইসিস এলে অনেকেই পাশে দাঁড়ায় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘যখন সরকারি দলে থাকি তখনও আমাদের (আওয়ামী লীগের) বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়, বিরোধী দলে থাকলেও ষড়যন্ত্র হয়।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় অনেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা চেয়েছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও অনেকে বঙ্গবন্ধুকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। ১৯৭৫ সালের পরও দলকে ভেঙেছেন নানাভাবে। যত দুর্বলতা, বিশ্বাসঘাতকতা আমাদের (আওয়ামী লীগ) মধ্য থেকেই আসে। আমরা লোভে, ভয়ে বিভ্রান্ত হই।’
সুপ্রিম কোর্টের আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের পরাজয়ের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক এই সম্পাদক বলেন, ‘নিজেদের মধ্যে ঐক্য না থাকায় পরাজয় হয়েছে। তবে ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের নেতৃত্বে অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার, সাহারা খাতুন, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনসহ আমরা সকলে একত্রিত হয়েছি।’
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা দুর্নীতি করেন না, তার সন্তানরা দুর্নীতি করেন না, অবিরাম পরিশ্রম করেন। তাই তাকে শক্তিশালী করতে হবে। আমরা যখন যাই তখন দেখি রাত ১২টা পর্যন্ত তিনি ভিজিটরদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। তারপর ফাইল নিয়ে বসেন। কখনও কখনও টেবিলে বসে ফাইল দেখতে দেখতে তিনি টেবিলেই ঘুমিয়ে পড়েন। এই অবিরাম পরিশ্রম করা মানুষটা আমাদের জন্যই তো পরিশ্রম করছেন। তাই আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই, প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই, কোনও আঞ্চলিকতা বা গ্রুপ না, সবাই মিলে শেখ হাসিনার কাছে ঐক্যবদ্ধ হই। আমরা ঐক্যবদ্ধ হলে সব যড়যন্ত্র প্রতিহত করা সম্ভব হবে।’
বঙ্গরত্ন ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. এহসান হাবিবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. জুলফিকার আলী ভূইয়া। এতে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট কাজী মো. নজিবুল্লাহ হিরু, আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক মো. আজহার উল্লাহ ভূইয়া, শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ, বাংলাদেশ আইন সমিতির সাবেক সভাপতি মো. আব্দুর নূর দুলাল, ব্যারিস্টার জাকির আহমেদ, একেএম তৌহিদুর রহমান, মো. মাহফুজুর রহমান লিখন, ব্যারিস্টার এস এম মাসুদ হোসেন, শেখ সাইফুজ্জামান জামান, মো. আব্দুর রাজ্জাক রাজু প্রমুখ।

/বিআই/এইচআই/ওআর/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ইনজুরিতে আর্জেন্টিনার প্রীতি ম্যাচে খেলা হচ্ছে না মেসির  
ইনজুরিতে আর্জেন্টিনার প্রীতি ম্যাচে খেলা হচ্ছে না মেসির  
এবার রাজশাহীর আম গাছে প্রচুর মুকুল, স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা
এবার রাজশাহীর আম গাছে প্রচুর মুকুল, স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা
টিভিতে আজকের খেলা (১৯ মার্চ, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (১৯ মার্চ, ২০২৪)
চীনে ৯ বছরে প্রথমবারের মতো বিয়ের সংখ্যা বেড়েছে
চীনে ৯ বছরে প্রথমবারের মতো বিয়ের সংখ্যা বেড়েছে
সর্বাধিক পঠিত
লিটনের বাদ পড়া নিয়ে যা বললেন হাথুরুসিংহে
লিটনের বাদ পড়া নিয়ে যা বললেন হাথুরুসিংহে
শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে ওয়ানডে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ
তৃতীয় ওয়ানডেশ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে ওয়ানডে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ
পদ্মার গ্রাহকরা এক্সিম ব্যাংক থেকে আমানত তুলতে পারবেন
একীভূত হলো দুই ব্যাংকপদ্মার গ্রাহকরা এক্সিম ব্যাংক থেকে আমানত তুলতে পারবেন
সুইডেনের রাজকন্যার জন্য দুটি হেলিপ্যাড নির্মাণ, ৫০০ স্থানে থাকবে পুলিশ
সুইডেনের রাজকন্যার জন্য দুটি হেলিপ্যাড নির্মাণ, ৫০০ স্থানে থাকবে পুলিশ
সঞ্চয়ী হিসাবের অর্ধকোটি টাকা লোপাট করে আত্মগোপনে পোস্ট মাস্টার
সঞ্চয়ী হিসাবের অর্ধকোটি টাকা লোপাট করে আত্মগোপনে পোস্ট মাস্টার