X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

ওরা পাহারা দিতে আসলে ভোটকেন্দ্র রক্ষা করতে হবে: ওবায়দুল কাদের

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৪:১৫আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৬:০৭

যৌথ সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি কেন্দ্র পাহারা দিতে এলে আমাদের কেন্দ্র রক্ষা করতে হবে বলে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের যৌথসভায় তিনি এ নির্দেশ দেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “আওয়ামী লীগের বিরোধী শক্তির কাছে রাজনীতির একটা বড় অস্ত্র আছে। সেটা হলো ‌‘ষড়যন্ত্রের হাতিয়ার’। এই হাতিয়ার ব্যবহার করে অনেক কিছু ভাঙা যায়। সতর্ক থাকতে হবে। তারা আবার ভাঙতে পারে, নাশকতা করতে পারে, সহিংসতা করতে পারে।”

তফসিলের পর পল্টনে তাণ্ডব চালিয়ে তারা শুরুটা করে দিয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তাণ্ডব শুরু করে দেওয়া পক্ষটি নির্বাচনকে ঘিরে দেশ-বিদেশে নানা ষড়যন্ত্রের পাঁয়তারা করেছে। তারা তো কেন্দ্র পাহারা দিতে আসবে, আমাদের কেন্দ্র রক্ষা করতে হবে।’

ড. কামাল হোসেন বিএনপির রাজনীতির কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তিনি এখন নেতা নন, নির্বাচনও করছেন না। তাহলে তাদের নেতা হচ্ছে পলাতক, দণ্ডিত আসামি তারেক রহমান। তার নির্দেশে কামাল হোসেন সাহেব এখন কথাও বলেন না। তারেক রহমানের নির্দেশে কামাল হোসেন, কাদের সিদ্দিকী, মাহমুদুর রহমান মান্না, মোস্তফা মহসিন মন্টু পরিচালিত হচ্ছেন। হায় রে, কি লজ্জা! বাংলাদেশের জনগণ কি এত বোকা? এই মানুষগুলোর অসহায় আত্মসমর্পণ খুনির কাছে, দুর্নীতির কাছে। তারা নাকি পাহারা দিতে আসবে, আমরাও কেন্দ্র রক্ষা করবো।’

আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হবে- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে কাদের বলেন, ‘তিনি আওয়ামী লীগকে ৩০ আসনের বেশি দিতে চান না। ২০০৮ সালে পেয়েছিলেন ২৯ সিট। আমরা কিন্তু ক্ষমতায় থেকে প্রতিপক্ষকে এতো সিট দিবো- এই অহঙ্কারি উচ্চারণ একবারও করিনি। ক্ষমতার মালিক আল্লাহপাক, তারপর দেশের জনগণ। জনগণই ঠিক করবে কাকে কত সিট দিবে। আপনার নেত্রী বলেছিলেন আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। এবারও তো ১০ বছর ছুঁই ছুঁই। তাই যতই আস্ফালন করবেন ততই পতন ঘটবে।’

দল ও জোটের মনোনয়ন প্রসঙ্গে কাদের বলেন, আমাদের দলের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল দলের এবং জোটের মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ করা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ইতোমধ্যে দলের এবং জোটের মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ করেছি। আজ-কালের মধ্যেই চিঠি দিয়ে দিবো। আগামীকাল মনোনয়নপ্রাপ্তরা চিঠি পাবেন আশা করি। এবার প্রার্থী অনেক, তার মধ্যে থেকে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করা কঠিন চ্যালেঞ্জ। আমাদের একটা সুবিধা ছিল, আমাদের সভাপতি গত সাত বছর ধরে সার্ভে রিপোর্ট প্রতি ছয় মাস পর পর কালেক্ট করেছেন। ৫-৬টি বিদেশি কোম্পানি এই সার্ভের কাজ করেছে। এই জরিপ রিপোর্টগুলো প্রার্থী নির্বাচনে মূল ভূমিকা পালন করেছে। ছয় মাস পর পর আপডেট করার পর আমাদের প্রার্থীদের গ্রহণযোগ্যতা নিরূপণ করতে পেরেছি। এই জরিপ শুধু আওয়ামী লীগের ওপর হয়নি। বিএনপিসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীর বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এর ফলে অন্যান্য দলের জনমত জরিপ বিবেচনা করেছি। শরিকদের সঙ্গেও বোঝাপড়া হয়ে গেছে, আমরা একটা সমঝোতা করতে পেরেছি। মনোনয়ন নিয়ে শরিকদের সঙ্গে টানাপড়েন দেখতে পাইনি। যাদের মহাজোট মনোনয়ন দিয়েছে, আমি শতভাগ আশাবাদী বিপুল ভোটে বেশিরভাগ আসনে বিজয়ী হবো।

কিছু কিছু প্রার্থী বিতর্কের কারণ হতে পারে, এই ভেবে আমরা অনেক প্রার্থীর পরিবর্তন এনেছি। আমাদের মনোনয়নে রাজনীতির বিজয় হয়েছে। কাজেই আওয়ামী লীগের দুশ্চিন্তা নেই। কিছু কিছু জায়গায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ হতে পারে। কারণ, জোটের কারণে আমাদের অনেক আসনে ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। আমরা আশা করি জোটের মনোনয়ন তারা মেনে নেবেন। এবারের নির্বাচনে আমাদের বিজয়ের বিকল্প নেই।

আওয়ামী লীগ ও জোটের পরাজয় ২০০১ সালের অন্ধকার, আমাদের পরাজয়ে দেশে রক্তের নদী বয়ে যাবে উল্লেখ করে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের প্রতিপক্ষ ২০০১, ২০১৪ সালে যে বিভীষিকা, রক্তপাত, সন্ত্রাস, দুর্নীতি করেছে, আমরা সেই অমানিশার অন্ধকারে ফিরে যেতে চাই না। তাই আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

আওয়ামী লীগের দশ বছরের কাজ বিএনপি ক্ষমতায় এলে পরিত্যক্ত হবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে কাদের বলেন, ‘তারা নাকি পদ্মা সেতুতে উঠবে না, সেটা নাকি জোড়াতালি দিয়ে তৈরি হচ্ছে। ওই পক্ষটি জনগণকেও সেতুতে উঠতে মানা করে দিয়েছে। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি মির্জা ফখরুলকে, আপনাদের এমন কোনও কাজ আছে যে কাজ স্মরণ করে দেশের মানুষ আপনাদের ভোট দিবে? আপনাদের আছে হাওয়া ভবন, আছে গ্রেনেড হামলা, আছে ২১ আগস্ট, উত্তরবঙ্গে বাংলাভাই আর বিদ্যুতের নামে খাম্বা। বাংলাদেশের ইতিহাস বলে, যারা আন্দোলনে ব্যর্থ, তারা নির্বাচনেও বিজয়ী হতে পারে না। ১০ বছরে জনগণ কি তাদের আন্দোলনে সাড়া দিয়েছে, জোয়ার কি এসেছে মরা গাঙে?’

যৌথসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওসার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।

/এসও/টিটি/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
‘ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না কয়েকটি এলাকায়
৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না কয়েকটি এলাকায়
জাবির সিনেট ও সিন্ডিকেট প্রতিনিধি নির্বাচন: বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নিরঙ্কুশ জয়
জাবির সিনেট ও সিন্ডিকেট প্রতিনিধি নির্বাচন: বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নিরঙ্কুশ জয়
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক