X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ স্লোগানে চূড়ান্ত আ. লীগের ইশতেহার

মাহবুব হাসান
১০ ডিসেম্বর ২০১৮, ২২:০০আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০১৮, ২৩:১৪



আওয়ামী লীগ চূড়ান্ত হওয়ার পথে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার। দুই-একদিনের মধ্যেই এটি ছাপানো শুরু হবে। ২০০৮ সালের ‘দিন বদলের সনদ’, ২০১৪ সালের ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’-এর ধারাবাহিকতায় দলটির এবারের ইশতেহারের স্লোগান ঠিক করা হয়েছে— ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’।



আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত হতে পারে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার। দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ইশতেহার প্রকাশ করবেন।
সূত্র জানায়, ইশতেহারের খসড়া সংশোধন করে তা পুনরায় দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। তিনি চোখ বুলিয়ে ছাপানোর সম্মতি দিলেই প্রেসে চলে যাবে ইশতেহার।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ড. আব্দুর রাজ্জাক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ইশতেহার চূড়ান্ত। দুই-একদিনের মধ্যে এর প্রকাশের তারিখও চূড়ান্ত করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘এবারের ইশতেহার সমৃদ্ধিশীল বাংলাদেশের রোডম্যাপ। একটি উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশের রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে এতে।’

১৮ ডিসেম্বর ইশতেহার প্রকাশ করা হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম সোমবার একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর জনমনে যে উন্মাদনা ও উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছিল এবার তার থেকে ব্যাপক আকারে সাড়া পড়বে। আওয়ামী লীগ এবার নতুন ভোটারদের গুরুত্ব দিচ্ছে।

সূত্র জানায়, বরাবরের মতো এবারের ইশতেহারেও বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অর্জনগুলো তুলে ধরা হচ্ছে। সে অনুযায়ী ১৯৯৬-২০০১, ২০০৯-২০১৩ এবং ২০১৪-২০১৮ মেয়াদের সাফল্য উল্লেখ থাকবে। থাকবে ২০১৯-২০২৩ মেয়াদে নির্বাচিত হলে এ সময়ের উন্নয়ন পরিকল্পনা। ‘রূপকল্প ২০৪১’-এর সম্প্রসারণের ধারাবাহিকতায় থাকবে ব-দ্বীপ বা ডেল্টা পরিকল্পনা। এছাড়া ২০০১-২০০৬ মেয়াদে বিএনপি-জামায়াত সরকারের দুঃশাসনের চিত্রও তুলে ধরা হবে ইশতেহারে। এবার নতুন করে ‘বিশেষ অঙ্গীকার’ হিসেবে কিছু বিষয়কে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হবে।
সূত্রমতে, মেগা প্রকল্পগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, ব্লু ইকোনোমি, ব-দ্বীপ বা ডেল্টা পরিকল্পনা, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, বিদ্যুৎ-জ্বালানি, সার্বিক উন্নয়নে তথ্য প্রযুক্তির অধিকতর ব্যবহার, শিক্ষার মান বৃদ্ধি, আধুনিক কৃষি ব্যবস্থার প্রচলন, টেকসই উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা ও শিশুকল্যাণ, নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা, সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ ও মাদক নির্মূল; নিরাপদ সড়ক ও দারিদ্র্য নির্মূল উল্লেখ থাকবে ‘বিশেষ অগ্রাধিকার’ হিসেবে। পাশাপাশি গণতন্ত্র, নির্বাচন ও কার্যকর সংসদ, আইনের শাসন ও মানবাধিকার সুরক্ষা, দক্ষ, সেবামুখী ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন, জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গড়ে তোলা, ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ শিরোনামে গ্রামভিত্তিক উন্নয়ন তথা গ্রামে আধুনিক সুবিধার উপস্থিতি, শিল্প উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, জলবায়ু পরিবর্তন ও সুরক্ষা, মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণ, ক্রীড়া, সংস্কৃতি, প্রতিরক্ষাসহ অন্যান্য খাতে থাকবে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা।
প্রতিটি খাতে আওয়ামী লীগ সরকারের অতীত পদক্ষেপ তুলে ধরে সেগুলোর অগ্রগতি উল্লেখ করে ভবিষ্যতের করণীয় থাকবে। এবারের ইশতেহারে আওয়ামী লগি সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বিশ্বজনীন স্বীকৃতির বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হবে। এতে ‘তারুণ্যের শক্তি, বাংলাদেশের সমৃদ্ধি’ শিরোনামে থাকবে তরুণদের নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা। যাতে শিক্ষিত বেকার তরুণদের জন্য একটি এবং গ্রামের তরুণদের জন্য আরেকটি আলাদা পরিকল্পনা থাকবে।
ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, ‘এবারের ইশতেহারে থাকছে বিনিয়োগবান্ধব বাংলাদেশ গড়ে তোলার বিস্তারিত পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনা। এতে ২০৩০ সাল, ২০৪০ সাল, স্বাধীনতার ১০০ বছরপূর্তিতে ২০৭১ সালে দেশকে আওয়ামী লীগ কোথায় নিয়ে যেতে চায়, তারও উল্লেখ থাকবে। ডেল্টা প্ল্যানে সন্নিবেশিত থাকবে ২১০০ সালের বাংলাদেশের অবয়ব। বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এতে।’
সূত্র জানায়, ডেল্টা প্ল্যানে আগামী ১০০ বছরের পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে। ১০০ বছরের কয়েকটি ধাপ উল্লেখ করে কোন সময়ে কী করা হবে— তা নিয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা থাকছে ইশতেহারে। ১০০ বছর পর অর্থাৎ আগামী ২১০০ সালে দেশ কোথায় থাকবে তা নিয়ে রয়েছে সুনির্দ্দিষ্ট একটি লক্ষ্য। আর ব্লু ইকনোমিতে সমুদ্রসীমা জয়ের পর সেখানকার সম্পদ কীভাবে ব্যবহার করা হবে, কীভাবে সমুদ্র সুরক্ষা করা হবে— এসবের দিকনির্দেশনা থাকছে এবারের ইশতেহারে। প্রকৃতি ও পরিবেশ ঠিক রেখে সমুদ্রসম্পদকে কীভাবে কাজে লাগানো যাবে, তার বিস্তারিত থাকছে ইশতেহারে।
সূত্র জানায়, এবারের ইশতেহারে ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে ঘোষিত বিষয়গুলোর অগ্রগতি তুলে ধরে আগামীর পরিকল্পনা সন্নিবেশিত করা হয়েছে।
ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির একাধিক সদস্য জানান, সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হবে। এছাড়াও বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের অগ্রগতি ও পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে বলা থাকবে।
ইশতেহারে থাকতে পারে ‘মুজিববর্ষ’ পালন নিয়ে একটি অধ্যায়। এছাড়া ভবিষ্যৎ দিকদর্শন এবং যথারীতি পরিশেষে দেশবাসীর প্রতি থাকবে উদাত্ত আহ্বান।


 

/ইএইচএস/এইচআই/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ কিশোর সংশোধনাগারে
শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ কিশোর সংশোধনাগারে
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন