X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিদ্যুতের নতুন চাহিদা নির্ধারণ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ

সঞ্চিতা সীতু
১১ ডিসেম্বর ২০১৮, ২২:০৭আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০১৮, ২২:০৮

বিদ্যুতের নতুন চাহিদা নির্ধারণ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ বিদ্যুতের নতুন চাহিদা নির্ধারণ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এই হিসাবে ২০৪১ সাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৭ হাজার ২৮৫ মেগাওয়াট। ‘বিদ্যুৎ উৎপাদন মহাপরিকল্পনা-২০১৬’ পর্যালোচনা করে নতুন এই চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন চাহিদা নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করা হয়েছে। ‘বিদ্যুৎ উৎপাদন মহাপরিকল্পনা ২০৪১’ অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট উৎপাদন ৬০ হাজার মেগাওয়াট হওয়ার প্রত্যাশ করা হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণে বলা হয়, এখন বিদ্যুতের বার্ষিক চাহিদা বাড়ার পরিমাণ ১৪ ভাগ। ২০২১ সালে যা হবে ১২ ভাগ। ধীরে ধীরে ২০২৫ সাল থেকে তা কমতে শুরু করবে। ২০২৫ সাল থেকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত বার্ষিক বিদ্যুতের চাহিদার প্রবৃদ্ধি হবে ৯ ভাগ।আর ২০৩০ সাল থেকে তা আরও কমে দাঁড়াবে ৭ ভাগে। আর ২০৪১ এ গিয়ে বার্ষিক ৫ ভাগ চাহিদার প্রবৃদ্ধিতে নেমে আসবে।

বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, ২০৪১ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি থেকে বেড়ে  ১৯ কোটি ৮০ লাখে দাঁড়াবে। আর এই সময়ে ২০১৬ থেকে ২০ পর্যন্ত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) হবে গড়ে সাত দশমিক ৪ ভাগ।আর পুরো সময়ে অর্থাৎ ২০১৬ থেকে ২০৪১ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি ছয় দশমিক চার ভাগ হবে বলে ধারণা করা হয়েছে। জাপান কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)-এর সহায়তায় ২০১৬ সালে যে বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা করা হয়েছিল। এবার তা পর্যালোচনা করলো বিদ্যুৎ বিভাগ। বিদ্যুৎ বিভাগের এই প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশীয় ও আমদানি করা কয়লা, করা গ্যাস, নিউক্লিয়ার, তেল ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির পাশাপাশি বিদ্যুৎ আমদানি যোগ করে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০১৮ সালের বিদ্যুতের চাহিদা ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৮৭৪ মেগাওয়াট, ২০২১ সালে ১৮ হাজার ৩৭৫ মেগাওয়াট, ২০২৫ সালে ২৭ হাজার ৯ মেগাওয়াট, ২০৩০ সালে ৩৯ হাজার ৬৭০ মেগাওয়াট এবং সর্বশেষ ২০৪১ সালের চাহিদার লক্ষ্যমাত্রা নতুন করে ঠিক করা হয়েছে ৭৭ হাজার ২৮৫ মেগাওয়াট।

উৎপাদন মহাপরিকল্পনায় ২০১৬ সালে বলা হয়, কয়লায় উৎপাদনের পরিমাণ ৩৫ ভাগে নামিয়ে আনা হয়। বাকি ৭০ ভাগের মধ্যে ৩৭ ভাগ এলএনজি ও গ্যাসে উৎপাদনের কথা বলা হয়। বাকি ৩০ শতাংশ আমদানি ও অন্য জ্বালানিতে উৎপাদনের কথা বলা হয়।

এখন এই পরিকল্পনায় কাটছাঁট করে বলা হচ্ছে, কয়লা থেকে উৎপাদন হবে ৩৩ ভাগ, এলএনজি ও গ্যাস থেকে উৎপাদন করা হবে ৪৩ ভাগ। বাকি ২৫ ভাগের মধ্যে আমদানি, জ্বালানি তেল ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে উৎপাদন হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে উৎপাদন হবে ১০ ভাগ। তবে বিদ্যুৎ আমদানির পরিমাণ মোট উৎপাদনের ১৫ ভাগের বেশি হবে না। আবার কোনও একক দেশ বা একক উৎস থেকে ১০ শতাংশর বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে না।

মহাপরিকল্পনায় বলা হয়েছে, ২০৪১ সাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) অধীন এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৬৩০ মেগাওয়াট।এখন সারাদেশে পিডিবির বিতরণ এলাকায় ২ হাজার ১৪৯ মেগাওয়াট চাহিদা রয়েছে। যা ২০২১ সালে ২ হাজার ৯২২, ২০২৫ সালে ৪ হাজার ৩৫৩, ২০৩০ সালে ৬ হাজার ৫৫৫ মেগাওয়াট চাহিদার লক্ষ্য ঠিক করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) অধীন এলাকায় চলতি বছর ৮৪০, এরপর ২০২১ সালে ১ হাজার ১১৯, ২০২৫ সালে ১ হাজার ৬৩৮ মেগাওয়াট, ২০৩০ সালে ২ হাজার ৬৩৮ মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালে ৬ হাজার ১৫০ মেগাওয়াট চাহিদা ধরা হয়েছে। একইভাবে ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) অধীন এলাকায় চলতি বছর ৬৬০, এরপর ২০২১ সালে ৯৯৫, ২০২৫ সালে ১ হাজার ৬৫১ মেগাওয়াট, ২০৩০ সালে ২ হাজার ৯১০ মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালে ৫ হাজার ৭৮৫ মেগাওয়াট চাহিদা ধরা হয়েছে। এদিকে, ঢাকার দুই বিতরণ কোম্পানির মধ্যে ঢাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ কোম্পানির (ডেসকো) অধীন এলাকায় চলতি বছর ১ হাজার ৩২, এরপর ২০২১ সালে ৫১৬, ২০২৫ সালে ২ হাজার ৩৪৩ মেগাওয়াট, ২০৩০ সালে ৩ হাজার ৬৭২ মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালে ৮ হাজার ১৭ মেগাওয়াট চাহিদা ধরা হয়েছে।

ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির (ডিপিডিসি) অধীন এলাকায় চলতি বছর ১ হাজার ৭১৪, এরপর ২০২১ সালে ২ হাজার ৪০৮, ২০২৫ সালে ৩ হাজার ৫২৬ মেগাওয়াট, ২০৩০ সালে ৫ হাজার ৬৬৯ মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালে ১১ হাজার ১৮১ মেগাওয়াট চাহিদা ধরা হয়েছে। অন্যদিকে গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) চলতি বছর ৬ হাজার ৪৭৮, এরপর ২০২১ সালে ৯ হাজার ৪১৫, ২০২৫ সালে ১৩ হাজার ৪৯৮ মেগাওয়াট, ২০৩০ সালে ১৮ হাজার ২১৭ মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালে ৩৩ হাজার ৫২২ মেগাওয়াট চাহিদা ধরা হয়েছে।

বিদ্যুৎ সচিব আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের সব চেয়ে বড় নিয়ামক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি। আমরা মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনের চেষ্টা করছি।’ ভবিষ্যতে উন্নত বাংলাদেশের চাহিদা পূরণে আরও দ্রুত গতিতে সবাইকে কাজ করতে হবে বলেও তিনি মনে করেন।

 

/এমএনএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ কিশোর সংশোধনাগারে
শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ কিশোর সংশোধনাগারে
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন